সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে চান প্রধানমন্ত্রীর নতুন মুখ্য সচিব
প্রকাশিতঃ 7:34 pm | December 29, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
অনেক দিন আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব পদে পরিবর্তন আসছে। বিদায়ী মুখ্য সচিব মো.নজিবুর রহমানের উত্তরসূরী হচ্ছেন বিদ্যুৎ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ড.আহমদ কায়কাউস। এবার আর কোন গুঞ্জণ নয়। সেটিই এখন বাস্তবতা।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলেই এসেছে এই সুখবর। প্রধানমন্ত্রীর নতুন মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন প্রশাসনের সৎ, দক্ষ ও মেধাবী কর্মকর্তা ড.আহমদ কায়কাউস। সেই থেকেই সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের অভিনন্দন বার্তায় সিক্ত হচ্ছেন তিনি।
তৈরি হয়েছে অবারিত আনন্দের ফল্গুধারা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর মনোভাব ধারণ করেই ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন নিয়মানুবর্তিতা ও দৃঢ় সংকল্পের অধিকারী এ মানুষটি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কালের আলোকে প্রধানমন্ত্রীর নতুন মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস বলেছেন, ‘সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গেই আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে চাই। দায়িত্ব পালনকালে জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবো।’
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে কালের আলো’র সঙ্গে মোবাইলে আলাপে উচ্ছ্বসিত নতুন মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস এক প্রশ্নের জবাবে এমনটিই বলছিলেন।
এর আগে রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করে। অপর এক আদেশে, চাকরির বয়স ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানকে ৩০ ডিসেম্বর থেকে অবসর দেওয়া হয়েছে।
ড. আহমদ কায়কাউস ১৯৮৬ সালের ২১ জানুয়ারী বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের প্রশাসনিক ক্যাডারে যোগদান করেন। তিনি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের সহকারী কমিশনার, উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট, এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি আবাসিক অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এবং বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি সংস্থায় ডেপুটেশনেও কাজ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর নতুন এ মুখ্য সচিব জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং বাংলাদেশ শক্তি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের (ইপিআরসি) চেয়ারম্যান ছিলেন। কায়কাউস আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের কলিন কাউন্টি কমিউনিটি কলেজ এবং আমেরিকান আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন অনুষদ হিসাবেও কাজ করেছিলেন।
তিনি নিয়মিত পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং সেন্টার, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস একাডেমি, এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি বক্তা হিসেবেও উপস্থিত হন।
১৯৮৪ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা ড.আহমদ কায়কাউস ২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিদ্যুৎ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব হন। ২০১৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সচিব পদে পদোন্নতি পান। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি কায়কাউসকে সরকার জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে পদোন্নতি প্রদান করেন।
বিদ্যুৎ বিভাগে যোগদানের আগে ড. আহমদ আন্তর্জাতিক খাদ্য নীতি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইএফপিআরআই) পলিসি রিসার্চ অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি সাপোর্ট প্রোগ্রামের (পিআরএসএসপি) ডেপুটি চিফ অফ পার্টি হিসেবে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর একাডেমিক এবং গবেষণামূলক পটভূমি তাকে উন্নয়নের নীতি দৃষ্টিকোণ সম্পর্কে ভালভাবে পরিণত করে।
ড.কায়কাউস কায়কাউস আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস, উইলিয়ামস কলেজ, সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক্স, ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ডালাসে টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক পলিসি এবং পলিটিকাল ইকোনমিতে পিএইচডি করেছেন।
তাঁর গবেষণার কেন্দ্রবিন্দুতে প্রশাসন, দারিদ্র্য, উন্নয়ন, শ্রমবাজার, মাইগ্রেশন ইত্যাদির মতো আন্ত:শৃঙ্খলা সম্পর্কিত বিষয় রয়েছে। ড. আহমদ আইএফপিআরআইয়ের জন্য গবেষণা পত্র এবং জরিপ রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কাঠামোগত রূপান্তর সম্পর্কিত ওয়ার্ল্ড ডেভলপমেন্ট জার্নালে একটি উল্লেখযোগ্য জার্নাল নিবন্ধ ছিল।
বর্ণাঢ্য চাকরি জীবনে ড.আহমদ কায়কাউস নিজের মেধা, যোগ্যতা ও দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে সেবা দেয়ার মানসিকতার অনন্য নজির স্থাপন করেন। কর্মগুণেই তিনি আলো ছড়িয়েছেন।
ফলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মুখ্য সচিব হিসেবে তাকেই বেছে নিয়েছেন এবং অতীতের ধারাবাহিকতায় ড.আহমদ কায়কাউস নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনেও মুন্সীয়ানার পরিচয় দেবেন এমনটিই মনে করছেন তাঁর কাছে থেকে শুরু করে দূরের মানুষেরাও।
কালের আলো/আরআই/এমএএএমকে