মিরপুরে ২ সন্তানসহ মায়ের লাশ উদ্ধার
প্রকাশিতঃ 9:29 pm | April 30, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
রাজধানীর মিরপুরের বাংলা কলেজ সংলগ্ন পশ্চিম পাইক পাড়ার সরকারি কোয়ার্টার এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে ২ মেয়েসহ মায়ের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঘরের দরজা ভেঙ্গে তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিমুজ্জামান বলেন, ‘নিহতের স্বামী বাইরে থেকে দরজা আটকানো দেখে খোলার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশের সহায়তায় দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকলে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনজনের গলা কাটা ছিল, মায়ের পেটে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।’
তিনি আরও জানান, ওই নারীর নাম জেসমিন আক্তার (৩৫)। মেয়েদের বয়স ৯ বছর ও ৪ বছর। জেসমিন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা ছিলেন। তার স্বামী হাসিবুল ইসলাম সংসদ সচিবালয়ে কর্মরত।
‘এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড সে বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর স্পষ্টভাবে সব বলা যাবে, বলেন ওসি সেলিমুজ্জামান।
লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে রাত পৌনে ১১টায় ঘটনাস্থলে এসে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনা দেখে পুলিশ ধারণা করছে, জেসমিন তার দুই সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করার পর নিজে আত্মহত্যা করেছেন। তবে অন্য কোন যোগসূত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনা দেখে তারা মনে করছেন যে সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে। বাইরে থেকে কেউ এসে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এই সম্ভাবনা খুবই কম। এর আগেও মেয়েদেরকে ঘুমের ওষুধ দিয়ে মারার চেষ্টা করা হয়েছে বলে তাদেরকে জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেসমিনের খালাতো ভাই রাকিবুল ইসলাম বলেন, তার খালাতো বোন মাইগ্রেনের ব্যথায় ভুগতেন। প্রায়শঃই অস্বাভাবিক আচরণ করতেন। গত মাসে ভারত থেকে চিকিৎসা করে ফিরেছেন বলেও জানান তিনি।
পশ্চিম পাইকপাড়ার সি টাইপ সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের ১৩৪ নং বিল্ডিংয়ের ৮ নং ফ্ল্যাটের চতুর্থ তলায় থাকতেন ইসলাম-জেসমিন দম্পতি। জেসমিনের গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাও জেলায় এবং হাসিবের বাড়ি পঞ্চগড়ে। তাদের বড় মেয়ে হাসিবা তাহসিন হিমি (৯) ও ছোটো মেয়ে আদিবা তাহসিন হানি (৪)।
এদিকে রাত ১১টার সময় এই ঘটনার বিষয়ে কোয়ার্টার কল্যান সমিতির সেক্রেটারি হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনা রহস্যজনক। কারণ একজন দৌড়ে পালাচ্ছিলেন, তিনি তাকে ধরে ওপরে গিয়ে দেখেন হাসিবুর রক্তাক্ত মেয়েদের কোলে নিয়ে কাদছিলেন। আর বাসার বাকীরা স্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। তিনজন মানুষের গলাকাটা লাশ পাওয়া গেল আর বাকিদের কিছুই হলো না বিষয়টা এমনটা নয়।’
কালের আলো/এসকে