ষড়যন্ত্রকারীদের ‘ছক’ ব্যর্থ, গণপূর্তে আশরাফুল আলমেই আস্থা প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিতঃ 9:03 pm | December 31, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

বাংলাদেশে নির্মাণ অঙ্গনের পথিকৃৎ বলা হয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদপ্তরকে। কিন্তু নানা কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে বিতর্কের তুঙ্গে ছিল এ অধিদপ্তর। ফলে এ অধিদপ্তরের শীর্ষ পদটিতে কে আসছেন এ নিয়েও অদম্য কৌতূহলের শেষ ছিল না।

আরও পড়ুন: ইমেজ সংকট দূর করে গণপূর্তে গতি ফেরাতে চান প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল

রংপুর গণপূর্ত জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলমের নাম এ পদটিতে জোরেশোরে উচ্চারিত হওয়ায় অধিদপ্তরকে ঘিরে থাকা শক্তিশালী সিন্ডিকেট নানামুখী প্রচার-প্রপাগান্ডা শুরু করে। আশরাফুল আলমের বাড়ি বগুড়ায় হওয়ায় তাকে বিএনপি’র বলয়ের মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমে পড়ে সিন্ডিকেটটি।

কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের অব্যাহত ‘ছক’ অবশেষে ব্যর্থ হয়েছে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে আশরাফুল আলমকেই বেছে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে আশরাফুল আলমকে প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে।

একই সঙ্গে গণপূর্ত অধিদপ্তরের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে আসা মো. সাহাদাত হোসেন (৩১ ডিসেম্বর) অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) গেছেন।

আরও পড়ুন: বিদায় সাহাদাত, কে হচ্ছেন গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী?

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গণপূর্ত অধিদপ্তর দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় মান নির্ধারণ করে আসছে। এছাড়া অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোর প্রকল্প বাস্তবায়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এ অধিদপ্তরের।

ইতোপূর্বে এ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগে ঘাপটি মেরে থাকা সিন্ডিকেটের প্রভাব থাকতো। কিন্তু এবারই প্রথম কোন সিন্ডিকেটের লবিইং-তদবির কোন কাজে আসেনি। ফলে যোগ্যতার বিচারেই আশরাফুল আলম এ পদটিতে বসতে যাচ্ছেন, এমন খবর আগেই জানাজানি হওয়ায় তা সিন্ডিকেটের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সূত্র মতে, দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাকে জড়িয়ে নানা বিভ্রান্তিমূলক খবর ছাপানো হয়। সেখানে বলা হয়, তিনি বগুড়ার বাসিন্দা হওয়ায় বিএনপি’র ঘনিষ্ঠ। এছাড়া শেরেবাংলা নগর ২৫০ শয্যার জাতীয় চক্ষু হাসপাতালের কাজ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদকে আঁতাতের মাধ্যমে পাইয়ে দিয়েছেন।

কিন্তু এসব অপপ্রচারের কোন প্রমাণ মেলেনি। এমনকি ক’দিন আগে একটি গণমাধ্যমে এসব মিথ্যা তথ্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান নতুন প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাকে জড়িয়ে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান করে ‘নির্মাণ কাজে অনিয়ম ও টাকার অপচয় সংক্রান্ত প্রমাণ না পেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন নিষ্পত্তি পূর্বক নথিভুক্ত করেন। তাছাড়া বগুড়া বাড়ি হওয়ার কারণে আমাকে একটি মহল বিএনপি বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর সূত্রের ভাষ্যমতে- বিধান অনুযায়ী প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন ১৫তম ব্যাচের প্রথম স্থানে থাকা মো. আশরাফুল আলমের। তিনি সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর চাকরিতে যোগদান করেন।

এরপর তিনি ঝিনাইদহ জেলায় উপবিভাগীয় প্রকৌশলী, বগুড়া, রাজশাহী, শেরেবাংলা নগরে দায়িত্ব পালন করেছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে শেরেবাংলা নগর (ডিভিশন-১), গাইবান্ধা, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ (ঢাকা-ডিভিশন-১), মেডিকেল ডিভিশনে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

এরপর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণ সার্কেল ও সর্বশেষ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে রংপুর জোনের দায়িত্বে পালন করেন সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গে। ফলে শেষ পর্যন্ত সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আশরাফুল আলমকেই গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী পদটিতে বেছে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

কালের আলো/সিএইচ/আরআর