পরীক্ষা বর্জন স্থগিত করলো কোটা আন্দোলনকারীরা
প্রকাশিতঃ 3:19 pm | May 19, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
পবিত্র রমজান মাস ও সেশনজট বিবেচনায় রেখে পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে কোটা আন্দোলনকারীরা। তবে কোটা বাতিলে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।
গত ১৩ মে বিকাল পাঁচটার মধ্যে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে পরদিন থেকে দেশের সকল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিয়েছিল আন্দোলনকারীদের সংগঠনটি। ঘোষণা অনুযায়ী ১৪ মে থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোয় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করে আসছিল আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রজ্ঞাপন জারি না হলে তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
তবে আজকের সংবাদ সম্মেলনে পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেয়া হলেও ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে হাসান আল মামুন বলেন, রমজান মাস ও সেশন জটের কথা বিবেচনা করে পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হলো। তবে কোটা বাতিলে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জন কর্মসূচি আগের মতো চলমান থাকবে।
তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মারধর, নির্যাতন ও হলত্যাগের হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। একটি ‘অতি উৎসাহী ও কুচক্রী মহল’ সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার জন্য এসব নোংরা ও ঘৃণ্য কাজ করে যাচ্ছে।
এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণ দর্শানোর নামে সাধারণ ও নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের হয়রানি না করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটা ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে গত ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলনে নামে সংগঠনটি। ৮ এপ্রিল রাজধানীর শাহবাগে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের পর দেশের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। পরে নামে সরকারি চাকরিতে অনীহা দেখানো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও। আর ১২ এপ্রিল সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো কোটার দরকার নেই।’
কয়েকটি দেশ সফর শেষে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী ২ মে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি কোটা বাতিলের বিষয়ে যে কথা বলেছেন, সেটা পাল্টাবেন না।
সর্বশেষ ১০ মে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান ‘কোটা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে’বলে জানান। তবে প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
কালের আলো/ওএইচ
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে কালের আলো’র ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: KalerAlo/Facebook