রাজীবের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের আদেশ স্থগিত

প্রকাশিতঃ 12:50 pm | May 22, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানোর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া রাজীবের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে এই ঘটনার জন্য দায়ী পরিবহন চিহ্নিত এবং ক্ষতিপূরণ নিরুপণ করতে তদন্ত কমিটি ঘটনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চে এই আদেশ দেন।

আদেশে বলা হয়, কমিটি দায়ী চিহ্নিত ও ক্ষতিপূরণ নিরূপণ করবে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। দায়ীপক্ষগুলো পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেবে।

বিষয়টির ওপর গত ১৭ মে ও সেনামবার শুনানি হয়। শুনানিকালে আদালত বলেছিলেন, কারও প্রতি অবিচার হোক আমরা তা চাই না। ক্ষতিপূরণের আদেশে সংশোধন করা হবে।

গত ৮ মে রাজীবের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের মালিককে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশটি দিয়েছিলেন। এরপর এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)।

গত ৩ এপ্রিল দুই বাস চালকের বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় শিকার হন রাজীব। দুই বাসের চাপে হাত কাটা পড়ে রাজীবের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ৪ এপ্রিল রিট আবেদন করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। হাইকোর্ট অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। রাজীবের চিকিৎসার খরচ স্বজন পরিবহন মালিক এবং বিআরটিসিকে বহনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক কোটি টাকা দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান আইন কঠোরভাবে কার্যকর করতে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না এবং প্রয়োজনে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আইন সংশোধন বা নতুন করে বিধিমালা প্রণয়নের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। রাজীব ১৬ এপ্রিল সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে মারা যান। এরপর ৬ মে এ তথ্য আদালতকে অবহিত করেন আইনজীবী।

গত ৮ মে হাইকোর্ট বেঞ্চ রাজীবের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের মালিককে নির্দেশ দেয়। এর মধ্যে ২৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ একমাসের মধ্যে দিতে বলা হয় দুই বাস কর্তৃপক্ষকে।
কিন্তু বিআরটিসি ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ১০ মে আপিল আবেদন করে। ১৩ মে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটি ১৭ মে শুনানির জন্য পাঠান। সে অনুসারে ওইদিন আবেদনটি ওপর শুনানি হয়।

৮ মে হাইকোর্ট রাজীবের খালা জাহানারা পারভীন ও রাজীবের গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের ছেলে কাস্টমস কর্মকর্তা ওমর ফারুকের নামে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় একটি যৌথ হিসাব খোলার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই হিসেবে একমাসের মধ্যে দুই বাস কর্তৃপক্ষ ২৫ লাখ করে মোট ৫০ লাখ টাকা জমা দেবেন। টাকা জমা দেয়ার পর আগামী ২৫ জুনের মধ্যে আদালতকে দুই কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে বিষয়টি জানাবেন। ২৫ জুন এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। ওইদিন বাকি ৫০ লাখ টাকা দেয়ার বিষয়ে নির্দেশ আসতে পারে বলেও জানান ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

কালের আলো/ওএইচ

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে কালের আলো’র ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: KalerAlo/Facebook