১৮ মার্চ থেকে হাম-রুবেলার টিকা
প্রকাশিতঃ 2:06 pm | March 12, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ৯ মাস থেকে ১০ বছরের নিচে প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ শিশুকে এমআর টিকা দেয়া হবে। এসব শিশুকে ১ ডোজ এমআর টিকা প্রদান কর হবে। এর উদ্দেশ্য হাম-রুবেলা রোগের বিস্তার দ্রুত হ্রাস করা।
বৃহস্পতিবার(১২ মার্চ) স্বাস্ব্য মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে রুবেলা ক্যাম্পেইন ২০২০ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ক্যাম্পেইনটি দুইভাগে পরিচালিত হবে। ১৮ মার্চ-২৪ মার্চ ক্যাম্পেইনের প্রথম সপ্তাহে সারা দেশের ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৮৯টি বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি বা সমপর্যায় পর্যন্ত অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের এক ডোজ এমআর টিকা প্রদান করা হবে। ২৮ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল ক্যাম্পেইনের দ্বিতীয় সপ্তাহে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৪৪টি নিয়মিত, স্থায়ী ও অতিরিক্ত টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে এমআর টিকা প্রদান করা হবে। ক্যাম্পেইন শুরুর দিন থেকে শেষদিন পর্যন্ত শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকা প্রদান করা হবে।
তিনি বলেন, এর উদ্দেশ্য নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রম থেকে ২ বছর বয়সের নিচের সকল বাদ পড়া ও ঝরে পড়া শিশুদের খুঁজে বের করে নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রমের মাধ্যমে এমআর টিকা নিশ্চিত করা ।
মন্ত্রী বলেন, হাম রোগ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ইতোপূর্বে দেশে ২০০৬ সালে ক্যাচ আপ এবং ২০১০ সালে ফলো আপ ক্যাম্পেইন করার ফলে হামের প্রভাব বহুলাংশে কমে গিয়েছিল। ২০১২ সাল থেকে রুবেলা নিয়ন্ত্রণে হামের টিকার সাথে রুবেলা টিকা সংযোজন করে এমআর টিকা দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে হাম-রুবেলা দূরীকরণে এমআর ক্যাম্পেইন+ পরিচালিত হয়। কিন্তু রোগ নিরীক্ষণ তথ্য অনুযায়ী ২০১৭ সাল থেকে দেশব্যাপী হামের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামী ১৮ মার্চ থেকে আবার টিকা দান কর্মসূচি শুরু হবে।
তিনি বলেন, তিন সপ্তাহব্যাপী সারা দেশে পরিচালিত হতে যাচ্ছে জাতীয় হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইন- ২০২০।
তিনি বলেন, ঝুঁকিতে থাকা শিশু অর্থাৎ দোকান বা বাজার, কারখানা, রাইস মিল ইত্যাদিতে কর্মরত মায়েদের শিশু, বেদে বহরের শিু, সুবিধাবঞ্চিত শিশু যারা রেল-বাস স্টেশনে ঘুমায়, হাসপাতালে ভর্তি বা মায়েদের সাথে অবস্থানরত শিশু, জেলখানায় মায়েদের সাথে অবস্থানরত শিশু, পতিতালয়ের শিশু, বস্তির শিশু ও দুর্গম এলাকার শিশুদের টিকা প্রদানের জন্য সেসব এলাকায় আলাদা টিকাকেন্দ্র পরিচালিত হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানান যে, জাতীয় হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইন-২০২০ বাস্তবায়ন করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বরাবরের মতো এবারও সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে। ক্যাম্পেইন সফল করতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। আর তা নিশ্চিত করতে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রয়োজন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের লেখনি দিয়ে ব্যাপক প্রচার করে আমাদের এই প্রয়াসকে সফল করবেন এবং ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ থেকে হাম-রুবেলা দূরীকরণের মাধ্যমে শিশুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন বলে আমি আশা করছি ।
এসময় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আলী নুর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মওলা বক্স চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/এনআর/এমএম