সংসদে বিশেষ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর জীবন কর্ম নিয়ে কথা বলবেন ৭৯ এমপি

প্রকাশিতঃ 6:31 pm | March 20, 2020

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বময় আলোকিত বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের অবিস্মরণীয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীকে ঘিরে শুরু হয়েছে মুজিববর্ষ। একটি দেশ, পতাকা ও মানচিত্র উপহার দেওয়ার এই কারিগর নিজের জন্মশতবার্ষিকীতে উচ্চারিত হচ্ছেন নতুন মাত্রায়, উচ্চতায়।

বাঙালির ও বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের এই মহানায়ককে নানাভাবে, প্রকরণে ও প্রাণের শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে ষোল কোটির বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে জাতীয় পর্যায়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকেও থাকছে বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠানমালা।

মহাসমারোহে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে আগামী ২২ ও ২৩ মার্চ মহান জাতীয় সংসদে বসবে বিশেষ অধিবেশন। আগামী রোববার (২২ মার্চ) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভাষণের মধ্য দিয়ে শুরু হবে অধিবেশন।

ওই দিন সকাল ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন। দু’দিনব্যাপী বিশেষ অধিবেশনে আলোচক থাকবেন ৭৯ জন সংসদ সদস্য। মহান জাতির জনকের জীবন-কর্ম নিয়ে তারা কথা বলবেন। খবর সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রের।

বিশেষ অধিবেশনের আদ্যোপান্ত
সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষণের মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া অধিবেশনে কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধিতে প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী। অন্য একজন সেই প্রস্তাব সমর্থন করবেন। তারপর দুই দিনব্যাপী প্রস্তাব সাধারণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেবেন সরকারি ও বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা। আলোচনা শেষে সেই প্রস্তাব সংসদে গৃহীত হবে।

সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭৯ জন সংসদ সদস্য বঙ্গবন্ধুর জীবন কর্ম নিয়ে আলোচনা করবেন আগামী ২২ ও ২৩ মার্চ। এর মধ্যে প্রথম দিন ৩৯ জন এবং শেষ দিনে ৪০ জন সংসদ সদস্য আলোচনা করবেন। ইতোমধ্যেই আলোচকদের আলোচনার বিষয়বস্তুও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

একই সূত্র জানায়, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ গঠন, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিত্ব গ্রহণ এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের শিল্পায়নে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা, ১৯৫৬ সালে সরকারে আওয়ামী লীগ, ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন, বঙ্গবন্ধুর সামরিক শাসন বিরোধী অবস্থান ও ১৯৬২ সালের ৬ দফা আন্দোলন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ, আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিকাশ ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬ দফা দাবি ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও ’৭০ এর নির্বাচন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৭ মার্চের ভাষণ, অসহযোগ আন্দোলন এবং ২৫ মার্চ গণহত্যা হবে আলোচনার মূল উপজীব্য।

এসবের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্র নীতি ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার অবস্থান, গণপরিষদ গঠন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গঠন, বাংলাদেশের সংবিধান ও বঙ্গবন্ধু, জনপ্রশাসন সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ও অবদান, প্রতিরক্ষা নীতিমালা ১৯৭৪ প্রণয়ন, বঙ্গবন্ধুর সামগ্রিক রাজনৈতিক চিন্তাধারা ও পারিবারিক জীবন আলোচনায় প্রাধান্য পাবে।

বাঙালির বুকে অমর হয়ে থাকবেন বঙ্গবন্ধু
নিজের জন্মশতবর্ষে আরও উজ্জ্বল, দীপ্যময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, এমনটিই মনে করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরী। সম্প্রতি কালের আলো’র সঙ্গে সংসদে নিজের বাসায় দীর্ঘ সময় কথা বলেন তিনি।

ড.শিরীন বলেন, ‘একাল ও অনাগত কালের মর্ত্য বাঙালির বুকে অমর হয়ে থাকবেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রাজনীতির এই কবির সাতই মার্চের ভাষণ কবিতারই মতো স্পষ্ট ও সঙ্কেতময়, দ্রোহ ও দেশপ্রেমের রসে সিক্ত।

ইতিহাসের এই মহানায়কের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন শুধু আনুষ্ঠানিকতা-সর্বস্ব নয়, এর লক্ষ্য জাতির জীবনে নতুন জীবনীশক্তি সঞ্চারিত করা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে জাতিকে নতুন মন্ত্রে দীক্ষিত করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া।’

বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়নের অনন্য উদাহরণ এই স্পিকার আরও বলেন, ‘বিশ্ব পরিমন্ডলে উন্নয়নের বিস্ময় বাংলাদেশে মুজিববর্ষ বিশাল পরিসরে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় সংসদ। মহাসমারোহে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে আগামী ২২ ও ২৩ মার্চ বসবে মহান সংসদে বসবে বিশেষ অধিবেশন।

কালের আলো/এমএএএমকে