করোনার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত যুদ্ধে সেনাবাহিনী, সেনাপ্রধানের বক্তব্যে আশার সঞ্চার

প্রকাশিতঃ 6:26 pm | April 01, 2020

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

ভয়ঙ্কর এক ক্ষুদ্র জীবাণুর আক্রমণের মুখে অসহায় বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ভয়াবহ ছোঁয়াচে এই রোগ থেকে দেশের সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দিতে সরকারের নির্দেশে কার্যত যুদ্ধে অবতীর্ণ সেনাবাহিনী নিজেদের জীবন বিপন্ন করে দেশের প্রতিটি জেলায় জেলায় সাধারণ মানুষকে সজাগ ও সচেতন করছেন। চরম অনিশ্চয়তা ও ভয় দূর করে সতর্ক করছেন সবাইকে।

আরও পড়ুন: প্রকৃতিতে ফিরেছে প্রাণ, আতঙ্ক নয় প্রতিরোধের ডাক সেনা সদস্যদের (ভিডিও)

জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস মোকাবেলাকে ‘একটি যুদ্ধ’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। যতদূর সম্ভব মানুষকে ঘরে থাকতে বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ছয়দিনের মাথায় চলমান এই যুদ্ধ নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদও।

করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলা ও দেশের সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতি নিয়ে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিজের বক্তব্যে দেশের বিষাদগ্রস্ত মানুষের মনে তিনি আশার সঞ্চার করেছেন।

আরও পড়ুন: প্রখর খরতাপেও পথে পথে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সেনাবাহিনী (ভিডিও)

মানবতার লড়াইয়ে সরকারকে সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাইডলাইন অনুসারে বিমর্ষ বিপন্ন বিষাদগ্রস্ত মানুষকে মানবিক হৃদয়ে জেগে উঠার শক্তি জাগিয়েছেন।

বুধবার (০১ এপ্রিল) সকালে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে সরকারকে সব ধরণের সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী কাজ করছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রনায়কোচিত নেতৃত্বে এক মোহনায় দেশ, মানুষকে ‘সুরক্ষার যুদ্ধে’ সেনাবাহিনী

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার এই করোনার ব্যাপারে শুধু সেনাবাহিনীই না, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রিশন এবং অন্যান্য যারা সকল স্টেক হোল্ডাররা কে কী করবে সব ক্লিয়ারলি বলে দিয়েছেন। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ওনার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। আগামীতেও কাজ করবো।’

সেনাবাহিনী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছে। পরিস্থিতির আলোকে কতদিন সেনাবাহিনী কাজ করবে তা প্রধানমন্ত্রী বিবেচনা করবেন এমনটি জানিয়ে জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, ‘এই করোনাভাইরাসকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

আরও পড়ুন: বৃত্তের মাধ্যমে দূরত্ব চিহ্নিত; সেনাবাহিনীর কর্মযজ্ঞে দেশজুড়ে স্বস্তির সুবাতাস (ভিডিও)

আমরা সৈনিক, আমরা সব সময় যুদ্ধ করতে প্রস্তুত এবং সেই প্রস্তুতি নিয়ে আমরা আছি। সবাইকে সহযোগিতা করবো।’

এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘যত প্রয়োজন, তত সেনা সদস্য দেওয়া হবে। কিন্তু অহেতুক আতঙ্ক সৃষ্টির প্রয়োজন নেই। সব ধরণের সহায়তা প্রদানের প্রস্তুতি ও সক্ষমতা সেনাবাহিনীর রয়েছে। দেশের প্রতিটি জেলায় আমাদের সৈনিকরা কাজ করছেন। প্রয়োজন হলে এই সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে লক ডাউন মানতে যে কোন মূল্যে সাধারণ মানুষকে বাধ্য করা হবে এমন কড়া বার্তা দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড.খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘চলমান এই বিশেষ ছুটিতে জনসাধারণের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আপনাদের কাছে (মিডিয়া) অ্যাপিল করছি, বিষয়টি যদি মিডিয়াতে ক্লিয়ারলি বলে দেন। জনসাধারণের কাছে বিশেষ অ্যাপিল, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব একদিন বলেও দিয়েছেন, এই ছুটি ইনজয়ের কোন বিষয় না।’

এই বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড.খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের মাঝখানে বসেছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। অনুষ্ঠানে অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বাণিজ্য সচিব ড. জাফর উদ্দীনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি করোনা পরিস্থিতির মধ্যে চাইলে সুরক্ষা দিয়ে পোশাক কারখানা চালানো যাবে এমন মত দেন। মূলত দেশের অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় ঠিক করতেই আন্ত:মন্ত্রণালয়ের এই বৈঠক ডেকেছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

কালের আলো/এমএএএমকে