বঙ্গবন্ধু-প্রধানমন্ত্রীর স্বজনদের কবরে গোলাপের নরম পাপড়ি ছড়ালেন নতুন আইজিপি (ভিডিও)

প্রকাশিতঃ 4:26 pm | April 16, 2020

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

মাত্র একদিন আগে পুলিশ প্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরেই ছুটে গেছেন বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ‘আপন ভুবন’ ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে। ইতিহাসের এই তীর্থস্থানেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে তিনি নিবেদন করেছেন বিনম্র শ্রদ্ধা।

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সাথে নবনিযুক্ত আইজিপি’র সৌজন্য সাক্ষাত

পুলিশের আইজি হিসেবে ড.বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) নিজের দ্বিতীয় কর্মদিবসেও ছিলেন নিজস্ব স্বকীয়তায় সমুজ্জ্বল। বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সকালে বাঙালি জাতির ধন্য সেই পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা ও হৃদয়নিসৃত ভালোবাসায় বনানী কবরস্থানে নিবেদন করেন শ্রদ্ধাঞ্জলী।

বঙ্গবন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রিয়জনেরা শুয়ে আছেন বনানীর এই কবরস্থানে। ইতিহাসের স্বাক্ষী বনানীর এই কবরস্থানে মাটির শীতল বিছানায় গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন মহিয়সী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শেখ কামাল, শেখ জামাল, ১০ বছরের ছোট্ট শেখ রাসেল, নবপরিনীতা দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামালসহ বাঙালি জাতির স্বাধীনতার লাল সূর্য এনে দেওয়া পরিবারটির নির্মল-নিষ্কলুষ সদস্যরা।

সারি সারি এসব সবুজ কবরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার স্বজনদের শেষ চিহ্ন। সেইসব কবরের ওপরেই নিজ হাতে পুলিশের ৩০ তম মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.বেনজীর আহমেদ ছড়িয়ে দিয়েছেন গোলাপের নরম পাপড়ি। অর্পণ করেছেন পুস্পস্তবক।

ভালোবাসার শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে পুলিশের নতুন আইজি ড.বেনজীর আহমেদ সেখানে সূরা ফাতেহা পাঠ করেন। এবং বঙ্গবন্ধু-প্রধানমন্ত্রীর স্বজনদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে মোনাজাত করেন। মুখে কিছু না বলেও কেবল অন্তর দিয়েই জাতির চির আরাধ্য পুরুষের স্বজনদের যেন বলে গেলেন না বলা ‘অনেক কথা’।

মহামানব বঙ্গবন্ধুর পুণ্যভূমি গোপালগঞ্জের এই সন্তান এরপর সকাল সাড়ে ১০ টায় ছুটেছেন মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিদের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে উঠা রাজারবাগ পুলিশ লাইনে। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর নামে ঢাকায় প্রথম গণহত্যা শুরু করেছিল।

আর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ওই রাতেই প্রথম প্রতিরোধ শুরু হয়েছিল। সাড়ে তিনঘণ্টার সেই প্রতিরোধ যুদ্ধে জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন অনেক পুলিশ সদস্য। প্রতি বছর মহান বিজয় দিবসে রাজাবার পুলিশ লাইন স্মৃতিসৌধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

কিন্তু নতুন আইজিপি ড.বেনজীর আহমেদ দায়িত্বভার গ্রহণ করেই নিজের পূর্বসূরী পুলিশ সদস্যদের বীরত্বের কথা স্মরণ করেছেন। এবং সৎ, মেধাবী ও চৌকস পুলিশ প্রধান তাদের স্মৃতির প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ পুলিশের ৩০ তম আইজিপি হিসেবে নিয়োগের পর বুধবার (১৫ এপ্রিল) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ড.বেনজীর আহমেদকে র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়ে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

সপ্তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ ১৯৮৮ সালে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি দীর্ঘদিন এলিট ফোর্স র‌্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে বাহিনীটিকে নেতৃত্ব দিয়ে যুগান্তকারী সব সাফল্য এনে দেন। র‌্যাব ডিজির দায়িত্ব পালনের আগে প্রায় সাড়ে চার বছর তিনি সুনামের সঙ্গেই ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন।

ড. বেনজীর আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া প্যাসিফিক সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্ট্যাডিজ, অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা চার্লস স্ট্রার্ট ইউনিভার্সিটি ও সিঙ্গাপুরের বিশ্বব্যাংক আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়াশোনা করেছেন। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিভাগে চিফ অব মিশন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট সার্ভিসেস হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন তিনি।

কর্মদক্ষতার জন্য তিনবার জাতিসংঘ শান্তি পদক অর্জন করেন নতুন আইজিপি ড.বেনজীর আহমেদ। এছাড়া পুলিশের পেশাগত সর্বোচ্চ পদক বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) অর্জন করেন। নিজের পেশাদারিত্ব ও যোগ্যতা দিয়েই সরকার প্রধান শেখ হাসিনাসহ সবার গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেই আইজিপি পদে নিজেকে অধিষ্ঠিত করেছেন।

কালের আলো/এমএএএমকে