রক্তের ঘাটতি বছরে ১ লাখ ব্যাগ

প্রকাশিতঃ 9:29 am | June 14, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

দেশে অসচেতনতা ও যথাযথ প্রচারণার অভাবে বাড়ছে না স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা। বছরে ৮ লাখ ব্যাগ রক্তের চাহিদার বিপরীতে মিলছে ৭ লাখ। এরমধ্যে ২৫ শতাংশ আসে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের কাছ থেকে। আর বাকি ৭৫ শতাংশের মধ্যে ২৫ শতাংশ আসে আত্মীয় এবং ৫০ শতাংশ আসে পেশাদার রক্তদাতাদের কাছ থেকে। আর এসব রক্ত সঠিকভাবে পরীক্ষা না হওয়ায় পরিসঞ্চালনের পর দেখা যায় নানা জটিলতা। ঘাটতি মেটানোর পাশাপাশি নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনের জন্য স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।

বিবি হাওয়া রিংকু। বয়স ১৯। জন্মের পর থেকেই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। প্রতি মাসে তার দরকার হয় চার থেকে পাঁচ ব্যাগ রক্তের। কিন্তু এ রক্ত জোগাড়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবারকে। সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখতে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে রক্তের ব্যবস্থা করতে হয়। এমনকি একবার কোথাও রক্ত না পেয়ে ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত নিয়ে পরীক্ষা না করে দূষিত রক্ত শরীরে প্রবেশ করায় পা হারাতে বসেছিল রিংকু।

রিঙ্কুর মা বলেন, একবার ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত নিয়ে ওর শরীরে দেয়ার পর মৃত্যুর কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। ওই রক্ত দূষিত বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। পরবর্তীতে ওর পা’য়ে কসমেটিকস সার্জারি করতে হয়েছে।

বেসরকারি হিসেবে দেশে বছরে রক্তের চাহিদা ৮ লাখ ব্যাগ। তবে ঘাটতি থাকে ১ লাখেরও বেশি। তাৎক্ষণিক প্রয়োজনেও এক ব্যাগ রক্তের জন্য হণ্যে হয়ে ছুটতে হয় দিগ্বিদিক।

আরেকজন অভিভাবক বলেন, চিকিৎসকরা আমাকে বলেছিলেন, আমার সন্তানকে প্রতিমাসে কমপক্ষে তিনবার রক্ত দেয়ার জন্য। কিন্তুর রক্তের অভাবে অনেক সময় মাসে একবারও দিতে পারি না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব ফিরোজ সালাহ্ উদ্দীন বলেন, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যদি আমরা রক্তের ঘাটতি পূরণ করতে পারতাম তবে সকলেই উপকৃত হতেন।

বিএসএম মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ বলেন, সংগৃহীত রক্তের মধ্যে পেশাদার রক্তদাতাদের রক্ত সবচেয়ে বিপজ্জনক।

নিয়মিত রক্ত দিলে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

কালের আলো/এমবি