অনেক কিছুতেই প্রথম আইজিপি ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী
প্রকাশিতঃ 4:37 pm | June 20, 2018
অ্যাক্টিং এডিটর, কালের আলো:
পুলিশ সদর দপ্তরের ২ হাজার ৪’শ ফোর্স। কর্মকর্তা থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নতা কর্মী, বাগানের মালি সবাই পেলেন দুই কেজি করে খেজুর। মাহে রমজানে পুলিশ সদস্যদের মাঝে খেজুর বিতরণের একটি নতুন ধারা চালু করলেন পুলিশ প্রধান ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী (বিপিএম) বার।
একজন কর্মকর্তার কাছে হয়তো বিষয়টি অনেক বড় কিছু না হলেও একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী কিংবা বাগানের মালিকের কাছে বাহিনীর প্রধানের এমন উপহার নি:সন্দেহে আনন্দের। ইফতার মাহফিলের কথাই ধরা যাক!
অতীতে পরিচ্ছন্নতা কর্মী, বাগানের মালিরা তেমনভাবে মূল্যায়িত না হলেও এই বছরই প্রথমবারের মতো একই মেন্যুতে ইফতার খেয়েছেন সবাই। এতে গুচেছে গেছে ভেদাভেদ। আনন্দের প্লাবন তৈরি হয়েছে অবহেলিত পরিচ্ছন্নতাকর্মী বা মালিদের হৃদয়েও।
ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর পুলিশের সবাইকে এক সুতোয় গাঁথার এমন দু’টি ছোট্ট উদাহরণ তুলে ধরলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরে আলাপকালে তিনি জানাচ্ছিলেন এসব তথ্য।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্যে- ‘বাংলাদেশ পুলিশের ক্লিন ইমেজের এ সর্বোচ্চ কর্মকর্তার কাছে পেশাদারিত্ব ও সততার সঙ্গে মানবিকতাই মুখ্য। সাধারণ পুলিশ সদস্য থেকে কর্মকর্তা সবার হৃদয় জয় করে নেওয়ার এক ব্যতিক্রমী ক্ষমতা রয়েছে তাঁর।’
বাংলাদেশ পুলিশে অনেক কিছুতেই প্রথম আইজিপি ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, এমনটিই বলছিলেন আরেক পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান হিসেবে প্রায় ৯ বছর সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের সময় ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান চালু করেছিলেন বর্তমান আইজিপি।
গত ১৮ জুন ঈদ পরবর্তী প্রথম কর্ম দিবসেও তিনি বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসবি’র রেওয়াজটা তিনি পুলিশ প্রধান হিসেবেও ধরে রেখেছেন।’
আইজিপি ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী’র জামানায় প্রথমবারের মতো পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দায়িত্ব পালনকালে ২০১৭ সালে নিহত ১৩০ পুলিশ সদস্যের পরিবারকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদ শুভেচ্ছা বার্তা, খাদ্য ও উপহার সামগ্রী দেয়া হয়েছে।
জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার (০৭ জুন) তিনি আগাম ঈদের শুভেচ্ছাও বিনিময় করেন। এ সময় অসহায় ওই পরিবারের সদস্যদের মুখেও ছিল হাসির ঝিলিক।
আইজিপি আবেগঘন বক্তৃতায় সেদিন বলেছেন, ‘সমাজ ও রাষ্ট্রের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার মহান ব্রত পালন করতে গিয়ে আপনার পরিবারের পরম প্রিয় ব্যক্তিটি আজ আমাদের মাঝে নেই। আমরা তাঁর বিদেহী আত্নার শান্তি কামনা করি। তাঁর অনুপস্থিতি যেমন অত্যন্ত বেদনার তেমনি পরম গৌরবেরও।’
ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী আরো বলেন, ‘জাতীয় ও পারিবারিক জীবনের সকল উৎসব ও আনন্দঘন মুহূর্তে তিনি আমাদের হৃদয়ে জাগ্রত আছেন এবং থাকবেন। বাংলাদেশ পুলিশ সব সময় আপনার পরিবারের সকল প্রকার সুখ-দুঃখ ও আনন্দ বেদনায় আপনাদের পাশে আছে এবং থাকবে।’
বাহিনীর প্রধানের এমন হৃদয়গ্রোথিত আবেগ-ভালোবাসায় বিমোহিত নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের সদস্যরাও একবাক্যে বলছিলেন, ‘ঈদের আগে নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গের খোঁজ অতীতে কেউ নেয়নি।
বর্তমান আইজিপি একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর এমন উপহার ও বক্তব্য আমাদের আশান্বিত করেছে, সাহস ও মানসিক শক্তি জুগিয়েছে। আমরা সত্যিকারের একজন অভিভাবক পেয়েছি। তাঁর মতো বড় হৃদয়ের মানুষ সত্যিই এই বাহিনীতে বিরল।’
কালের আলো/এসএস/এএ
আরও পড়ুনঃ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে: আইজিপি
আরও পড়ুনঃ যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন আইজিপি, বক্তব্য রাখবেন জাতিসংঘ পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে
আরো পড়ুনঃ সরকারি হাসপাতালে মাদকাসক্তদের চিকিৎসার জন্য ১০ শয্যা রাখার মত আইজিপি’র