উন্নত অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আক্রান্ত-মৃত্যুর হার অনেক কম : প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 12:21 pm | June 15, 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলোঃ
মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে উন্নত অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আক্রান্ত, মৃত্যুর হার অনেক কম বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: এসএসএফ’র কর্মদক্ষতায় মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী, চিন্তা করেন ওদের নিরাপত্তার কথাও!
সোমবার (১৫ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এই মুহূর্তের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এই প্রাণঘাতী ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিহত করা এবং অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমি ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছি এবং ব্যক্তিগতভাবে মাঠপর্যায়ে এর বাস্তবায়ন তদারকি করছি।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে যে গভীর আঁধারে নিমজ্জিত এই পৃথিবী, সে আঁধার ভেদ করে আমরা নিশ্চয়ই বেরিয়ে আসব এক নতুন দিনের সূর্যালোকে। মনে রাখতে হবে, দুর্যোগেই হয় মনুষ্যত্বের পরীক্ষা। এ ভাইরাস মোকাবিলাও একটি যুদ্ধ। এই অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করবই, ইনশাআল্লাহ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসজনিত বৈশ্বিক মহামারির ফলে সমগ্র বিশ্বই আজ বিপর্যস্ত। এই মহামারি গোটা বিশ্বের অর্থনীতি, সমাজব্যবস্থা, রাজনীতিসহ সকল বিষয়ে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। আমাদের দেশও এই বিপর্যয় থেকে মুক্ত নয়। এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছি। যার মধ্যে মানবিক সহায়তা প্রদান, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখাসহ নানা আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা ও সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম অন্যতম।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চাই আমাদের মানুষের মধ্যে যেন একটা আস্থা থাকে, বিশ্বাস থাকে, সেই বিশ্বাস-আস্থাটা ধরে রাখতে হবে। আমরা হার মানবো না, মৃত্যু তো হবে, মৃত্যু যেকোনো সময় যেকোনো কারণে হতে পারে। কিন্তু তার জন্য ভীত হয়ে হার মানতে হবে? এ ধরনের একটা অদৃশ্য শক্তির কাছে এটাতো না। সেজন্য আমাদেরও সেভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’
‘সেজন্য আমি দেশবাসীকে বলবো- স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যা যা নির্দেশনা সেগুলো মেনে চলে নিজের জীবনকে চালাতে হবে। কিন্তু নিজেকে সুরক্ষিত রাখা, অপরকেও সুরক্ষিত রাখা সেটাকেও মাথায় রাখতে হবে। সেটা যেন সবাই করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একদিকে মানুষকে বাঁচানো, আবার মানুষের খাবারের ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা, শিক্ষার ব্যবস্থা সেগুলো যাতে ঠিক থাকে সেদিকেও আমরা বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখছি।’
‘আমি বার বার মানুষের মধ্যে যাই এ কারণে। আজকে ডিজিটাল পদ্ধতি আছে বলে আমি যেতে পারছি, কথা বলতে পারছি।’
ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে পেরেছিলাম বলে আজকে করোনা নামে একটা ভাইরাস সারা বিশ্বকে একেবারে স্থবির করে দিয়েছে তারপরও আমরা আমাদের দেশের মানুষের সেবা করতে পারছি। তাদের জন্য কাজ করতে পারছি।’
‘তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া থেকে শুরু করে আর্থিক সহায়তা দেওয়াসহ সবধরনের সুযোগ আমরা দিতে পারছি। যেহেতু আজকে সত্যিই বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে পেরেছি।’
এসএসএফ সদস্যদের উন্নত প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিতে সর্বোচ্চ দক্ষতা অর্জনের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, ক্রাইমের ধরণটাও বদলে যাচ্ছে। আগে এক ধরনের হতো এখন অন্যভাবে হয়। প্রতিনিয়ত আমরা এটাও দেখতে পাই প্রযুক্তি যেমন ভালো কাজে ব্যবহার হয়, আবার মন্দ কাজেও ব্যবহার হয়।’
‘সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের যারা নিরাপত্তায় আছেন তাদেরও সেই আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে। কী ধরনের ক্রাইম হচ্ছে সেটা জেনে নিয়ে সেই ক্রাইম কীভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। তার জন্য যেমন প্রশিক্ষণ প্রয়োজন প্রশিক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে ইক্যুপমেন্টসও দরকার।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মজিবুর রহমান।
এসময় এসএসএফ সদস্যদের একদিনের বেতন অনুদান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে দেওয়া হয়। এসএসএফ সদস্যদের পক্ষে তাদের মহাপরিচালক অনুদানের চেকটি হস্তান্তর করেন।
কালের আলো/এনএল/পিএম