পেশাদারিত্বেই কঠিন সব চ্যালেঞ্জে উত্তীর্ণ এসএসএফ

প্রকাশিতঃ 2:25 pm | June 16, 2020

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে হিসেব কষলে কেটে গেছে ৩৩ টি বছর। পদ্মা-মেঘনা-যমুনায় জল গড়িয়েছে অনেক। দীর্ঘ সময়ে ভারী হয়েছে স্মৃতির মলাট।

আরও পড়ুন: এসএসএফ’র কর্মদক্ষতায় মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী, চিন্তা করেন ওদের নিরাপত্তার কথাও!

রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান এবং ভিভিআইপি বিদেশি সম্মানিত অতিথিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকারী স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) পা রেখেছে গৌরবময় ৩৪ বছরে।

করোনার মহাসঙ্কটময় সময়ে সোমবার (১৫ জুন) বেশ ঘটা করে উদযাপিত হয়নি কর্মদক্ষতা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা, পেশাদারিত্ব ও আনুগত্যের মাপকাঠিতে বারবার কঠিন সব চ্যালেঞ্জে উত্তীর্ণ আধুনিক ও সুসজ্জিত এ বাহিনীটির ৩৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

তবে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যদের সততা, দায়িত্বশীলতা, আন্তরিকতা ও পেশাগত দক্ষতার আবারও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসএসএফও তাদের এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মানবিকতার উজ্জ্বল আভায় নিজেদের উপস্থাপন করেছেন। নিজেদের একদিনের বেতন ও বাহিনীর তহবিল থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও দুস্থদের সাহায্যার্থে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে এক কোটি এক লক্ষ ৬৬ হাজার টাকার একটি চেক হস্তান্তর করেছে।

এই টাকায় গরিব, অসহায় ও দু:খী মানুষের চোখে সরকার এঁকে দেবে নতুন স্বপ্ন। অন্ধকার সরিয়ে নতুন আলোয় উদ্ভাসিত হবে ওদের ভুবন।

প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (পিএসএফ) হিসেবে ১৯৮৬ সালে যাত্রা শুরু করে এই বিশেষ নিরাপত্তা ইউনিট এখন কালের বিবর্তনে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) হিসেবে পরিচিত।

রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান এবং ভিভিআইপি বিদেশি সম্মানিত অতিথিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়ে নামকরণ হওয়া এসএসএফ যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়েই নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

৬ বছর আগে এসএসএফ’র ২৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘এসএসএফ’র উন্নয়নে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে তার সরকার একটি আধুনিক ফায়ারিং রেঞ্জের পদক্ষেপ নিয়েছিল। এরপর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর তাদের জন্য আবাসন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়।’

তিনি আরও বলেছিলেন, ‘২০১৩ সালে এসএসএফকে ইনসিগনিয়া (বিশেষ ব্যাজ) প্রদান করা হয়, যা এসএসএফকে একটি পূর্ণাঙ্গ বাহিনীতে উন্নীত করে এবং পর্যায়ক্রমে এই বাহিনীর জন্য অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারিত করা হচ্ছে।’

এই বাহিনীটির ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশী অতিথিরাও যে এসএসএফ’র প্রশংসা করেন সেই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গেই বলেছিলেন।

সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘এসএসএফের সদস্যদের ওপর দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও বিদেশি অতিথিদের নিরাপত্তার ভার ন্যস্ত থাকে।

আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি, তাদের কর্তব্যপরায়ণতা, আন্তরিকতা ও কর্মদক্ষতা। বিদেশি অতিথিরাও এসএসএফের আন্তরিকতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার প্রশংসা করে যান।’

সোমবার (১৫ জুন) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও প্রধানমন্ত্রী এই বাহিনীটির সদস্যদের কর্মদক্ষতায় নিজেদের মুগ্ধতার কথা প্রকাশ করেন।

বলেন, ‘তোমরা নিরাপদ থাক, সেটা সব সময় আমার চিন্তা। তোমাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি। আমাদের সবার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য তোমরা যেভাবে আন্তরিকতার সাথে কাজ কর, তোমাদের আন্তরিকতায়, তোমাদের কর্মদক্ষতায় আমরা সত্যি মুগ্ধ।’

অনুষ্ঠানে এএসএফের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো.মজিবুর রহমান স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। নিজের বক্তব্যে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব ও সঠিক দিক নির্দেশনা এবং শতভাগ আন্তরিকতার দৌলতেই স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) আধুনিক ও সুসজ্জিত বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেন।

এখনও আলোড়িত সেই ছবি
নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে পিতার মতোই অবিচল, দৃঢ় ও সাহসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে দেশকে বিশ্বের পরিমন্ডলে অনন্য উচ্চাতয় নিয়ে গেছেন।

নিজেদের ব্যক্তিগত দু:খ-বেদনা বা হাসি-আনন্দকে এক সঙ্গে ভাগ করে নেন শেখ হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধুর দুই রক্তের উত্তরাধিকারের সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়।

যখনই সময় পান এক সঙ্গে থাকতে চেষ্টা করেন। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোট বোন শেখ রেহানার গালে স্নেহের চুমু দিচ্ছেন।

ছবিটির পেছনের ব্যাক গ্রাউন্ডেই ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি।

এমনই একটি প্রতিকৃতি গত বছরের ৩৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিয়েছিলেন এসএসএফ’র মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মো.মজিবুর রহমান।

প্রতিকৃতিটিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মম ঘাতকের বুলেটের ঝাঁক বিদীর্ণ করে দেওয়া পিতা মুজিবের সেই বক্ষ, যেখানে প্রগাঢ় ভালোবাসা ছিল সমগ্র বাঙালি জাতির জন্য। বঙ্গবন্ধুর এ প্রতিকৃতিও অপরূপ দক্ষতায় এঁকেছেন সেই চিত্রশিল্পী।

করোনার সময়ে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এমন কোন আয়োজন না থাকলেও গতবারের এই ছবিটির কথা ভুলেনি কেউই।

কালের আলো/এসআর/এমএইচ