ইংল্যান্ডের হৃদয় ভেঙে ক্রোয়েশিয়ার ইতিহাস
প্রকাশিতঃ 9:52 am | July 12, 2018
খেলা ডেস্ক, কালের আলো:
ইতিহাস রচনা করে ফেললো ক্রোয়েশিয়া। রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে গেলো তারা। যেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে ফ্রান্স।
বুধবার রাতে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলো ক্রোয়েশিয়া। এবারই প্রথম ক্রোয়েশিয়ার পা পড়লো বিশ্বকাপের ফাইনালে। পক্ষান্তরে ১৯৬৬ সালের পর প্রথমবার ফাইনালের এতো কাছে গিয়েও বিদায় নিতে হলো তিন সিংহের দেশকে।
ইংল্যান্ড ম্যাচটা শুরু করে দারুণ দাপট দেখিয়ে। ম্যাচের মাত্র পাঁচ মিনিটে কিরেন ট্রিপিয়ার, টটেনহ্যামের ডিফেন্ডার গোল করে এগিয়ে দেন ইংল্যান্ডকে। এগিয়ে যাওয়ার পর ইংল্যান্ড যেনো আরো অনুপ্রাণিত হয়ে উঠে এবং ম্যাচটা জেতার জন্যই খেলতে থাকে তারা।
ফ্রি কিক থেকে পাওয়া গোলের পর ইংল্যান্ড কৌশলগতভাবে ক্রোয়েশিয়াকে আরো চেপে ধরে। কিন্তু ক্রোয়েশিয়া ছিলো তাদের লক্ষ্যে স্থির। পিছিয়ে পড়লো মনোবল হারায়নি তারা। উল্টো ইংল্যান্ডের দেয়া সব রকম চাপ মেনে নিয়েই আক্রমণ করতে থাকেন ইভান রাকিতিচরা।
৬৮ মিনিটে গিয়ে দারুণ এক ফিনিশ করেন ইভান পেরিসিচ। তার গোলে সমতায় আসে ক্রোয়েশিয়া। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আর কোনো দল গোলের দেখা পায়নি। অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে আরো এক গোল করে ইংল্যান্ডকে বিদায় করেন দেয় ক্রোয়েশিয়া।
১০৯ মিনিটে মারিও মান্দজুকিচের বাঁ পায়ের জোরালো শট থেকে পাওয়া গোল ক্রোয়েশিয়াকে নিয়ে যায় স্বপ্নের ফাইনালে। পক্ষান্তরে ইংল্যান্ডের প্রতীক্ষা বেড়ে যায় আরো চার বছরের জন্য। ইতিহাস গড়তে নেমে ক্রোয়েশিয়াকেই নতুন ইতিহাস লিখতে দেখে তারা।
শেষ পরিণতি বেদনার হলেও ইংল্যান্ডের শুরুটা ছিলো অসাধারণ। ট্রিপিয়ার যে ফ্রি কিক নেন এবং গোল করেন, তাতে মনে হয়েছিলো মস্কোতে কেবল হ্যারি কেনরা নিজেরাই খেলছেন না; বরং তাদের পক্ষে মাঠে নেমেছে ভাগ্যও!
প্রথম গোল দেয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে আরো একটা গোল পেতে পারতো ইংল্যান্ড। ভাগ্যের পক্ষপাতিত্ব প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েও তা হারান হ্যারি কেন। ইংলিশ অধিনায়ক অফসাইডের ফাঁদে পড়ার পর শটও মেরে দেন গোলবারের অনেকটা বাইরে দিয়ে।
প্রথমার্ধে ম্যাচের গল্পে প্রাধান্য ছিলো ইংলিশদেরই। কিন্তু দৃশ্যপট পাল্টে যায় বিরতির পর। যখন ক্রোয়েশিয়া সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং এলোমেলো করে দেয় ইংলিশদের ডিফেন্স। ক্রোয়েশিয়ার ওই আক্রমণের কোনো জবাব ছিলো না ইংলিশদের কাছে।
১৯৯০ সালের পর প্রথমবার শেষ চারে উঠা ইংলিশরা স্বপ্ন দেখছিলো আরো একটা শিরোপা জেতার। ১৯৬৬ সালের পর আবার বিশ্ব জয়ের আনন্দে মাততে সেজে উঠছিলো টেমস পাড়। কিন্তু নিয়তির পরিহাসে সেমিফাইনালে এগিয়ে থেকেও বিদায় নিতে হলো তাদের। ইংলিশদের জন্য যা হৃদয় ভাঙার মতোই বেদনার বিষয়।
পক্ষান্তরে ১৯৯৮ সালে প্রথমবার সেমিফাইনালের স্বাদ পাওয়া ক্রোয়েশিয়া ২০ বছরের মধ্যে উঠে গেলো ফাইনালে। স্বপ্নের প্রথম ফাইনালটা জেতাই এবার লক্ষ্য তাদের। কিন্তু কাজটা সহজ হবে না। বিশ্বকাপের অন্যতম দুর্দান্ত দল ফ্রান্সকে হারাতে তাদের দেখাতে হবে নিজেদের সামর্থ্যের সেরাটারও বেশি। রোববার অনুষ্ঠিত হবে এই বিশ্বকাপের ফাইনাল।
কালের আলো/ওএইচ
তার আগে বিশ্বকাপে আরো একটা ম্যাচ খেলতে নামবে বেলজিয়াম ও ইংল্যান্ড। তৃতীয় স্থানের জন্য লড়বে তারা। বেলজিয়াম প্রথম সেমিফাইনাল হারে ফ্রান্সের কাছে। এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়।