জনতার ‘হৃদ মাঝারে’ জনপ্রতিনিধি!

প্রকাশিতঃ 12:00 pm | July 28, 2020

পলিটিক্যাল এডিটর, কালের আলো :

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণে স্থবির ধনী-গরিব সব দেশ। অতি আনুবীক্ষণিক এক অনুজীবের হিংস্রতায় দেশে দেশে মৃত্যুর মিছিল। কঠিন এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সময়োপযোগী সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মানুষের জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি জীবিকা নিশ্চিত থেকে শুরু করে অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে নানা প্রণোদনাও ঘোষণা করেছেন। বলা হয়ে থাকে, তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন প্রধানমন্ত্রীর দুর্যোগের সময় সাহস আরও বেড়ে যায়। করোনাকালেও বঙ্গকন্যার বুদ্ধিমত্তার প্রখরতাও চোখে পড়েছে সবার।

গণভবন থেকেই সবকিছু কঠোর মনিটরিংয়ে রেখেছেন। তাৎক্ষণিক সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানেরও নির্দেশ দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ফোর্বস ম্যাগাজিনসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং সংস্থা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছে।

জাতীয় এ দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা।

সাধারণ মানুষের চরম বিপর্যয়ের সময়টিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে অনেকের মতোন তারাও দিন-রাত কাজ করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই।

দেশের সাধারণ মানুষের ‘পরীক্ষিত বন্ধু’ হিসেবেই করোনা সঙ্কটময় মুহুর্তে তাদের কল্যাণে নিজেকে সমর্পণও করেছেন। করোনা যোদ্ধা হিসেবে তাদের কার্যকর উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষের ‘হৃদ মাঝারে’ নিয়েছেন ঠাঁই।

বিভিন্ন সূত্র বলছে, সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতাদের কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্তদের মাঝে যারা সফলভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের পুরস্কৃত এবং ব্যর্থদের তিরস্কৃত করা হবে।

ইতোমধ্যেই সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অনেক তরুণ নেতার প্রশংসা করেছেন। সরকার প্রধানের দিকনির্দেশনা ও পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের ফলেই দেশের মানুষজনের জীবন-মরণ সমস্যা কাটিয়ে সঙ্কট উত্তরণে আশার আলো দেখা দিয়েছে।

এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সভাপতি মন্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান কালের আলোকে বলেন, ‘চলতি সঙ্কটে বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধিই নিজেকে মেলে ধরেছেন।

নিজেদের ইতিবাচক কার্যক্রমের মাধ্যমেই তারা মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। গণমানুষের দল আওয়ামী লীগ অবশ্যই তাদের কথা বিশেষভাবে মনে রাখবে।’

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম
করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

কেবল মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত অফিস কার্যক্রম পরিচালনার গন্ডির মধ্যেই আটকে না থেকে করোনা পরিস্থিতি ও ত্রাণ তদারকি কার্যক্রমও সরেজমিন পরিদর্শন করছেন। এমনকি এই মহামারির সময়েও সাধারণ ছুটি ছাড়াও শুক্রবার এবং শনিবারও অফিস করেছেন।

বাৎসরিক ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতার আওতায় আনতে সক্রিয় রয়েছেন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। স্বাধীনতার পর করোনা সঙ্কটে দেশজুড়ে সবচেয়ে বড় ত্রাণ কর্মসূচি পরিচালিত করেছেন।

তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের অনেকের বিরুদ্ধে এ সময় ত্রাণ আত্নসাতের অভিযোগ ওঠে। অবশ্য এ অভিযোগগুলো একেবারেই পুরনো, নতুন নয় মোটেও।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এক্ষেত্রে সাহসী ও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছেন। জনপ্রতিনিধিরা যে দলেরই হোক না কেন অভিযুক্ত হলেই কাউকে ছাড় দেননি। সবার সঙ্গেই সমান আচরণ করেছেন।

আবার ভালো কাজ করা জনপ্রতিনিধিদের ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন। মন্ত্রীর এমন দৃঢ়তায় জনপ্রতিনিধিদের মাঝে তাকে ঘিরে একটি পরিচ্ছন্ন ইমেজ গড়ে উঠেছে।

তারাও অনুধাবন করতে পেরেছেন মন্ত্রী তাদের মর্যাদার জায়গায় অধিষ্ঠিত করেছেন। আবার ত্রুটি বিচ্যুতির জন্য তাদের শাস্তিও দিয়েছেন। এ সময়ে মন্ত্রী কেবল ইউপি চেয়ারম্যান বা সদস্যদের বিরুদ্ধেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি অনেক উপজেলা প্রকৌশলী এবং নির্বাহী প্রকৌশলীদেরও কাউকে কাউকে তাৎক্ষণিকভাবে সাসপেন্ড ও শোকজ করেছেন।

সূত্র মতে, গত বছর এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু রোগের তিক্ত অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই কীভাবে ঢাকা সিটিতে ডেঙ্গু নির্মূল করা যায় এ লক্ষ্যেই কীট তত্ত্ববিদসহ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বারবার সভা করে সঠিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

মশা নির্মূল করতে গিয়ে মন্ত্রী এসব সভায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত যেমন দিয়েছেন তেমনি পরবর্তী সভাতেও এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়েছে কীনা সেই ফলোআপও করেছেন। সিটি করপোরেশনগুলোতে মানসম্মত কীটনাশক মজদ আছে কীনা, স্প্রে করার মতো যথেষ্ট মেশিন আছে কীনা এসব বিষয় তদারকি করেছেন।

মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, স্প্রে করার মতো প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে মন্ত্রী লোকবল অনুমোদন দিয়েছেন। একটি সভায় প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০ টি সাবজোনে ভাগ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ কারণে দেখা গেছে, খন্ড খন্ড এলাকায় কাউন্সিলররা অনেককেই সম্পৃক্ত করেতে পেরেছেন।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলার পাশাপাশি ডেঙ্গুতে সম্ভাব্য বিপর্যয়ের আশঙ্কায় মন্ত্রী উত্তর দক্ষিণের দু’মেয়রসহ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে দফায় দফায় সভা করেছেন। যদিও আইইডিসিআরসহ বিশেষজ্ঞরা গতবারের চেয়ে মহানগরীতে তিনগুণের বেশি ডেঙ্গু রোগী হবে বলে এমন পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।

সেই পূর্বাভাস মোতাবেক ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এর সুফল হিসেবে ঢাকায় এখন ডেঙ্গুর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। এ সময়ে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতেও বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে মন্ত্রণালয়।

চলতি বছর অল্প সময়ের ভেতরে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পানিতে টইটুম্বর নদীগুলোর পানির উচ্চতা ঢাকা শহর থেকে বেশি। মন্ত্রী আগে থেকেই ওয়াসা ও পূর্ত মন্ত্রণালয়কে খাল পরিস্কার করতে বলেছেন। করোনার মধ্যেও এ কাজগুলো তিনি নিজেই তদারকি করেছেন।

সব খাল পরিস্কার না হলেও অনেক খাল ইতোমধ্যেই পরিস্কার হয়েছে। ঢাকা শহরের অনেক সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। সিঙ্গাপুর, আসাম, পাঞ্জাবসহ বিভিন্ন দেশেও সড়কগুলো পানিতে ডুবে গেছে। ঢাকা সিটির চেয়ে পানির উচ্চতা বেশি হওয়ায় বিলম্ব হলেও ঠিকই পানি নেমে গেছে।

মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা কালের আলোকে বলেন, মন্ত্রীর কথা এবং কাজের মাঝে মিল রয়েছে। তিনি নিজে যা বলেন তাই করেন। তাঁর নেতৃত্বে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এমন অনেক অর্জন রয়েছে।

অতীতে দেশের অন্যতম সর্ববৃহৎ এ মন্ত্রণালয়কে ঘিরে নানা রকম অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও সেক্ষেত্রে বিতর্কহীনভাবেই মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

সূত্র মতে, মন্ত্রীর পুরো কর্মযজ্ঞে সফলতার সঙ্গেই সার্বিক সহযোগিতা করে আসছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। প্রশাসনে দক্ষ একজন কর্মকর্তা হিসেবেও তিনি স্বনামে খ্যাত। মন্ত্রী পুরো মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম কঠোরভাবেই নিয়ন্ত্রণ করেছেন। ফলশ্রুতিতে মন্ত্রণালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তারাই তাকে পছন্দ করেন।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মতোন একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় দক্ষতার সঙ্গেই সামাল দিচ্ছেন মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। অতীতে এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা নানা রকম বেফাঁস কথাবার্তা আর কর্মকান্ডে সমালোচিত হলেও সেক্ষেত্রেও সংযমের পরিচয় দিয়েছেন তৃণমূল থেকে উঠে আসা পোড় খাওয়া এই রাজনীতিক।

বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও সম্ভাব্য খাদ্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাঁর ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। সঙ্কটে নিজের যোগ্যতাকে প্রমাণ করেছেন মন্ত্রী সাধন মজুমদার।

সূত্র মতে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মতোন স্পর্শকাতর মন্ত্রণালয়ে নিজের কর্মযজ্ঞে অনেক দৃষ্টান্তই স্থাপন করেছেন মন্ত্রী। প্রথমেই মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতির বিষবৃক্ষের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়েছেন। নিজের দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জিং অনেক বিষয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

দুর্নীতিমুক্ত খাদ্য মন্ত্রণালয় উপহার দিতে নরম-গরম কৌশলে এগোচ্ছেন। করোনা সংক্রমণের মধ্যকার পরীক্ষাতেও তিনি স্বপ্রতিভ এবং জনআস্থার মন্ত্রী হিসেবে নিজেকে উদ্ভাসিত করেছেন। তাঁর কর্তব্যনিষ্ঠা ও দায়িত্ব পালন নিয়েও কোন প্রশ্ন উঠেনি।

মন্ত্রীর নজরদারির দৌলতেই চালের মূল্য বৃদ্ধির অপচেষ্টা ভেস্তে গেছে। পাশাপাশি খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কাকে মাথায় রেখেই নিজের সরকারি মিন্টু রোডের বাসভবন থেকে প্রতিটি বিভাগে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হচ্ছেন সাধন চন্দ্র মজুমদার।

তাকে পুরো কর্মযজ্ঞে সমানতালেই সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব কৃষিবিদ ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। অনিয়মের টুঁটি চেপে ধরতে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করতে মন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করছেন এ সচিব।

সূত্র মতে, করোনার ভেতরে সরকারি গুদামের মজুদ বাড়াতে ধান-চাল কেনায় গতি ত্বরান্বিত করতে দফায় দফায় নিজ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। পূর্বে সরকার ঘোষিত মূল্যেই ধান-চাল সংগ্রহ এবং কোনোক্রমেই মূল্যবৃদ্ধি করা হবে না বলেও সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর অবৈধ কার্ড বাতিলে শক্ত পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। চাল মালিকদের সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে বলেছেন। তাদের অতি লোভের কারণে যদি সরকারকে আমদানিতে যেতে হয় সেক্ষেত্রে এটি সবার জন্য সুখকর হবে না বলেও কঠোর বার্তা দিয়েছেন।

মন্ত্রী বলেছেন, ‘সরকারের সঠিক দিক-নির্দেশনা এবং তত্ত্বাবধানে এবার কৃষক বোরোতে বাম্পার ফলনে ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে। এই বাজার দর ধরে রাখতে সরকারি সংগ্রহের গতি বাড়াতে হবে। এছাড়া নির্দেশ অনুযায়ী খাদ্যশস্যের মান যাচাই করে সংগ্রহ করতে হবে। ধান-চাল কেনায় কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

মন্ত্রণালয় পরিচালনার পাশাপাশি নিজ এলাকার গরিব ও অসহায় মানুষেরও পাশে দাঁড়িয়েছেন মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চালিয়েছেন ত্রাণ তৎপরতা। ব্যক্তিগতভাবে তিনি ১২ হাজার পরিবারকে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি লবণ, ১ লিটার তেল ও সাবান বিতরণ করেছেন। সবজি বিতরণ করেছেন সাড়ে ৪ হাজার পরিবারের মাঝে।

মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার কালের আলোকে জানান, নওগাঁয় প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। প্রতিটি হাসপাতাল, ইউনিয়ন পরিষদ, ইউএনওর কাছে ২শ থার্মাল স্ক্যানার দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ৬ হাজার টেস্টিং কিট বিভিন্ন হাসপাতালে দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

নওগাঁ সদরে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য ইতোমধ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মন্ত্রীর উদ্যোগে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জনসচেতনতায় ৩ লাখ লিফলেট বিতরণ করেছেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ.ম রেজাউল করিম
শ ম রেজাউল করিম প্রথমবার মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন গৃহায়ন এবং গণপূর্ত মন্ত্রাণালয়ের। সেই সময়ে ওই মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি দমনে তাঁর কঠোর পদক্ষেপের কারণে আলোচিত হয়েছিলেন।

বিশেষ করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বালিশ দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত করে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং সংবাদ সম্মেলন করে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের বিরল নজির স্থাপন করেন।

একইভাবে বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকান্ডের ঘটনা তদন্ত করে ৬২ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেন।

মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, প্রচন্ড চাপ ও প্রলোভন উপেক্ষা করে তাঁর এসব পদক্ষেপ ভূয়সী প্রশংসা কুড়ায়। সেবা খাতকে ভোগান্তিমুক্ত এবং সেবা সহজ করতে রাজউক’র নকশা অনুমোদনের ১৬ স্তরের ছাড়পত্রের সংস্কার করে ৪ স্তরে আনা এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নকশা অনুমোদনের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত প্রদান করেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ওঠে আসেন।

সূত্র মতে, ঠিকাদারি কাজে স্বচ্ছতা ও আর্থিক সাশ্রয় নিশ্চিত করতে তৎকালীন গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ১৪ দফা নীতি নির্ধারণ করেন। ওই সময় রাজউক, গণপূর্ত, সিডিএ, কেডিএ, জাতীয় গৃহায়নের সেবা গ্রহণের দীর্ঘসূত্রতা ও ভোগান্তি কমে আসে।

১ হাজার ১’শ কোটি টাকার বেহাত হওয়া সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার, অনিয়মে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করাসহ অনেক সংস্কার মূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

টেন্ডার সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়ার মতোন দু:সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি ড্যাপ রিভিউ করার বহু প্রভাবশালীদের আবেদনেও তাকে টলাতে পারেনি। সেই সময়েই ইউএন হ্যাবিটাট’র ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশ।

জানা যায়, হঠাৎ করেই শ ম রেজাউল করিমকে সেখান থেকে সরিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই মন্ত্রণালয়ে তিনি নিজেকে সমানভাবেই মেলে ধরছেন।

করোনা সঙ্কটের সময় ডেইরি শিল্প, পোল্ট্রি শিল্পকে বাঁচানোর জন্য তার যে বিভিন্ন উদ্যোগ, সেই উদ্যোগগুলো প্রশংসিত হয়েছে। ডিম, দুধ, মৎস্য খামারিদের প্রণোদনা দেওয়ার জন্য তিনি চেষ্টা করছেন।

করোনা ক্রান্তিকালে ছোট ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা চরম সঙ্কটে পড়ায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সেক্টারের চাষি, খামারি ও উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এ মন্ত্রণালয়। তাঁর বিচক্ষণ প্রতিটি সিদ্ধান্তে প্রান্তিক খামারিরা বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন।

আরও জানা গেছে, রাজধানীর কাটাবন এলাকায় পশু-পাখির দোকানগুলোতে বন্দি হয়ে থাকা পোষা পশু-পাখিদের নিয়ে যে একটি করুণ অবস্থার সৃষ্টি হলে মন্ত্রী নিজেই কাটাবন এলাকায় যান এবং সেই আটকে পড়া পশু-পাখিদের খাবার দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশ দেন।

মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনার শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিম সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার শুরু হয়। এ সময় মন্ত্রীর নির্দেশে অপপ্রচার বন্ধে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়।

করোনাকালীন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমের ভূমিকা সম্পর্কে দেশের সাধারণ মানুষকে সচেতন করে মোবাইলে এসএমএস প্রেরণ করা হয়। একই সঙ্গে গণমাধ্যমেও এ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

আবার নিজ নির্বাচনী এলাকাতেও সমানতালে কাজ করছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এই মন্ত্রী। পিরোজপুর-১ আসনের এ সংসদ সদস্য রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনী এলাকার মানুষকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছেন।

সূত্র মতে, মন্ত্রী নিজ এলাকায় সরকারি ত্রাণ সহায়তা সুষম বণ্টনেও নিয়েছেন কার্যকর পদক্ষেপ। ব্যক্তিগতভাবে করোনা থেকে রক্ষা পেতে সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করেছেন। অসহায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন প্রতিটি ইউনিয়নে। চিকিৎসক ও নার্সদের সুরক্ষাতেও ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন
করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।এই পরিস্থিতির মাঝেও দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম গতিশীল রেখেছেন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। করোনা সঙ্কটে মন্ত্রণালয় পরিচালনায় তিনি নিজের দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

সূত্র মতে, নিজ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থা এবং বিভিন্ন অনুবিভাগের প্রধানদের সঙ্গে নিয়মিতই ‘ভার্চুয়াল’ আলোচনা সভা করেছেন প্রতিমন্ত্রী। প্রতিটি মন্ত্রণালয় চালু রাখতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পিত কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে সামনে থেকেই তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

গোটা প্রশাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা বজায় রেখে সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে সার্বক্ষণিক একজন করোনাযোদ্ধা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন এই প্রতিমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সরকারের সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রশাসনের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত প্রতিটি কর্মকর্তাকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় মাঠে নামাতে দিন-রাত একাকার করেই তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর মাঠ প্রশাসনকে সময়ে সময়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত মাঠ প্রশাসনকে এলাকাভিত্তিক সমস্যা নিরূপণ করে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

ভাইরাসে আক্রান্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উন্নত চিকিৎসা ও প্রণোদনার ব্যবস্থাও করেছেন। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার শঙ্কায় সরকারি সব অফিস ও প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন।

এতসব কর্মযজ্ঞের পরেও নিজের এলাকার বাসিন্দাদের ঠিকই পাশে দাঁড়িয়েছেন। জাতীয় স্বার্থে এলাকায় যেতে না পারলেও তার নির্দেশনায় দলীয় নেতাকর্মী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নিয়মিত খাদ্যসামগ্রী ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছেন।

নিজ এলাকার আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদেরও সার্বক্ষণিক উৎসাহের মাধ্যমে চাঙ্গা রেখেছেন।

করোনা দুর্যোগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মযজ্ঞের বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন কালের আলোকে বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাথে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে সম্পৃক্ততা রয়েছে। মন্ত্রণালয়সমূহ অনেক কাজেই এই মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করে।’

তিনি বলেন, ‘করোনাকালে কিছু ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে কাজ হলেও আমাদের অধিক সর্তকতা ও গতিশীলতার সাথে কাজ করতে হয়েছে। এই সঙ্কটকালীন সময়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আগামীতে আরো সতর্কতা ও দক্ষতার সাথে কাজ করতে সদাপ্রস্তুত ও বদ্ধপরিকর।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান
করোনা দুর্যোগ শুরুর পর শক্ত হাতে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলায় দিন-রাত সক্রিয় থেকেছেন। প্রতিটি কর্মকান্ড বাস্তবায়নে নিজের যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন।

জানা যায়, দেশে লকডাউন শুরুর চারদিন আগে প্রধানমন্ত্রী তাকে গণভবনে ডাকেন। সেদিনই প্রধানমন্ত্রী তাকে নির্দেশ দেন লকডাউনের ফলে দৈনিক আয়ের উপরে নির্ভর করা কর্মহীন সম্প্রদায়কে খাদ্য এবং অন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের নিশ্চয়তার নির্দেশ প্রদান করেন।

পুরো কাজটি জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সমন্বয় করে বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় এ মন্ত্রণালয়কে। এরপর দেশের প্রতিটি জেলা প্রশাসকের কাছে মেইলের মাধ্যমে জানতে চাওয়া হয় কার কতো টাকা প্রয়োজন এবং কী পরিমাণ চাল মজুদ আছে।

জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে ফিরতি মেইল পাওয়ার পরই প্রতিটি জেলায় বরাদ্দ পাঠায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ মোহাম্মদ নাছিম কালের আলোকে জানান, গত ২৫ জুলাই পর্যন্ত দেশের ৬৪ টি জেলায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে করোনাসহ অন্যান্য মানবিক সহায়তা হিসেবে ২ লাখ ১৪ হাজার ৯৫৯ মেট্টিক টন জিআর চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, জি আর বাবদ ৯৮ কোটি ৬০ লাখ ২৮ হাজার ১৬৪ টাকা ও শিশু খাদ্য বাবদ ২৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম
করোনা সংক্রমণে যখন গোটা দেশ অবরুদ্ধ ও আতঙ্কিত ঠিক সেই সময়ে জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীম। কঠিন পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চবার নিজ নির্বাচনী এলাকা সফর করেছেন এবং অবস্থানও করেছেন বেশি সময়।

অঘোষিত লকডাউন শুরুর পর থেকেই নড়িয়া-সখিপুর তথা গোটা শরীয়তপুরকে সুরক্ষিত রাখতে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, দলীয় নেতা-কর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সমন্বিতভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন। করোনার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকাবাসীর কাছেও ছুটে গেছেন।

বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতসহ ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এ সাংগঠনিক সম্পাদক।

জানা যায়, ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনী এলাকার ২৪টি ইউনিয়নে ৮ ধাপে ৫৭ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন এনামুল হক শামীম। গত ২৫ জুলাই ২৪ টি ইউনিয়নে ৫ হাজার ৫’শ পরিবারের মাঝে শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ করা হয়েছে।

নড়িয়া উপজেলা ও সখিপুর থানায় ইমাম, মুয়াজ্জিন, অস্বচ্ছল আলেম, জেলে সম্প্রদায়, চরের ভাসমান মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষক, দিনমজুর, প্রতিবন্ধী, মুচি ও বেদে সম্প্রদায়ের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মানবিক সহায়তা হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।

নিজের প্রতিটি কর্মকান্ডে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন ও প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করেন এনামুল হক শামীম। জেলার ৬টি হাসপাতালে প্রায় ১২ হাজার মাস্ক ও ৩’শ পিপিই বিতরণ করেছেন।

নিয়মিত হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সিলিন্ডার আপডেট করা, আইসোলেশন সেন্টার ঠিক রাখাসহ চিকিৎসকদের খোঁজখবর রেখেছেন। ওই সময় হাসপাতালগুলোতে যেতে সবাই ভয় পেলেও তিনিই চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে সভাও করেছেন।

সাবেক তুখোর ছাত্রনেতা ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি এনামুল হক শামীমের ‘ডাক্তারের কাছে রোগী নয় রোগীর কাছে ডাক্তার’ কর্মসূচি গোটা দেশে ব্যাপক সাড়া ফেলে।

প্রায় তিন মাস অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের মাধ্যমে নড়িয়া ও সখিপুরের করোনা দুর্যোগে ঘরবন্দি মানুষকে তিনি চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। নিজস্ব তহবিল থেকে দুটি চিকিৎসক টিম গঠন করে ঘরবন্দি মানুষকে বাড়িতে গিয়েই চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছেন।

ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসক ব্রিগেড নামে পরিচালিত এ কর্মসূচির আওতায় রোগী দেখার পর ওষুধ দেয়া হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ দলের কাছে রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ না থাকলে দেওয়া হয় ওষুধ কেনার জন্য নগদ টাকা।

এসব বিষয়ে সোমবার (২৭ জুলাই) রাতে কালের আলো’র সঙ্গে কথা বলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। এ সময় তিনি নিজের নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছিলেন।

তিনি বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশরত্ম শেখ হাসিনার একজন কর্মী। নেত্রীর নির্দেশনায় আমরা নির্বাচনী এলাকা নড়িয়া-সখিপুরসহ গোটা শরীয়তপুরবাসীর জন্য কাজ করছি। ‘মানবতার জননী’ শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই কাজ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।

সামনের দিনগুলোতেও একইভাবে কাজ করে যেতে চাই। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ প্রতিটি অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আমার সঙ্গে একযোগে কাজ করছেন।’

রেজওয়ান আহাম্মেদ তৌফিক
কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসন থেকে টানা তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মেদ তৌফিক অবিকল যেন বাবা মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ‘ফটোকপি’। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই হাওরের মাটি-আলো-বাতাসে দিনের পর দিন পরিণত হয়েছেন।

হাওরের আপামর মানুষের কাছে ‘ভাটির রত্ন’ হিসেবে পরিচিত এ সংসদ সদস্য করোনা সঙ্কটের শুরু থেকেই বঙ্গভবনের সুরম্য প্রাসাদ ছেড়ে এলাকার অতি দরিদ্র, অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। বাবার মতোই বঙ্গভবনে যেন তাঁর মন টিকে না। শরীর বঙ্গভবনে থাকলেও হৃদয়-মন যেন থাকে হাওরেই!

অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইন উপজেলার কোন ইউনিয়নের মানুষ খাবারের কষ্টে আছেন, খোঁজ খবর নিয়ে তাদের কাছেই চাল-ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন রেজওয়ান আহাম্মেদ তৌফিক। ছুটেছেন এক মাথা থেকে আরেক মাথায়।

সরকারি ত্রাণ সামগ্রীতেও চাহিদা না মেটায় নিজের উদ্যোগে সাধারণ মানুষের দূয়ারে সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন। নিজের নির্বাচনী এলাকার ২৪ টি ইউনিয়নের গরিব ও খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে ইতোমধ্যেই প্রায় ৮’শ বস্তা চাল, ৪ টন খেজুর, দেড়শ’ বস্তা ডাল, দেড়শ’ বস্তা আলু ও ৬০০ লিটার সয়াবিন তেল বিতরণ করেছেন।

পর্যাপ্ত পিপিই, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, থার্মাল গান তুলে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোর কর্তৃপক্ষের কাছে। তিনিই একমাত্র সংসদ সদস্য, যিনি সরকার প্রধানের ঘোষণার আগেই মানবতার টানে হাওরের অসহায় কৃষকের ধান কেটে নেওয়ার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে নজির স্থাপন করেন। এক্ষেত্রে তিনি ছাত্রলীগকে পুরোপুরি কাজে লাগান।

তিন উপজেলার ২৪ টি ইউনিয়নের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে সংসদ সদস্য তৌফিক ধান কাটার জন্য ১ হাজার ৭০০ কাঁচি উপহার দেন। এতে করে কৃষকদের মনোবল ফিরে আসে এবং তারা ফসল বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পান।

মাশরাফি বিন মুর্তজা
বাংলাদেশ জাীতয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা দ্রুতই রাজনৈতিক অঙ্গনে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হয়েও পাক্কা রাজনীতিবিদরা যা করতে পারেননি তাই করে দেখিয়েছেন রাজনীতিতে নবীন মাশরাফি।

নিজ এলাকার বাসিন্দাদের এ কঠিন পরিস্থিতিতে পাশে থাকতে গিয়ে নিজেই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশের মানুষের হৃদয় নি:সৃত আবেগ-ভালোবাসায় আবারও সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

করোনাকালে নড়াইল-২ আসনের মানুষের জন্য তার ভূমিকা সব মহলেই প্রশংসা কুড়িয়েছে। নিজ এলাকার দরিদ্র মানুষের খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক এ কাপ্তান।

করোনার সময় সারা দেশে যখন বিনা চিকিৎসায় রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন তখন তিনি ‘কাপ্তান’ নামের একটি ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম গঠন করেন। এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

সদর হাসপাতালে একটি জীবাণুনাশক কক্ষ স্থাপন করেছেন। চিকিৎসকদের জন্য তৈরি করে দিয়েছেন সেফটি চেম্বারও। এলাকার কৃষকদের জন্য ধানকাটার মেশিনের ব্যবস্থা করেছেন।

নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন
করোনাকালীন সময়ে নিজ হাতে মাইক্রোফোন তুলে নিয়ে গ্রামের পর গ্রাম ছুটেছেন দেশের আলোচিত সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন। নিজের ও সহকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেই গ্রামের পর গ্রাম মানুষকে সচেতন করেছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় তিন মাস নিয়মিত এলাকায় থেকেছেন সংসদ সদস্য শাওন। প্রায় ২৫ হাজার পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, আলু, লবণ ও সাবান বিতরণ করেছেন। গত ছোট ঈদে যাকাতের নগদ অর্থ গরিবদের মাঝে বিতরণ করেছেন। রমজানে পুরো মাস অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করেছেন।

ভোলা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, দুই উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা অফিস, দুই থানার সামনে জীবাণুনাশক বুথ স্থাপন করেছেন। দুই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দু’টি করোনার নমুনা সংগ্রহের বুথ করে দিয়েছেন।

করোনাকালে সুপার সাইক্লোন আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা নিজে যেমন পরিদর্শন করেছেন তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত অভাবী মানুষদের পর্যাপ্ত অর্থ সহায়তাও দিয়েছেন। সরকারি ত্রাণ সুষ্ঠুভাবে বন্টনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এ সংসদ সদস্য। তাকে নিয়ে নানা রকম কথাবার্তা শোনা গেলেও চরম সঙ্কটে মানবিকতার উজ্জ্বল আভায় তিনি নিজেকে উদ্ভাসিত করেছেন।

শেখ সারহান নাসের তন্ময়
বঙ্গবন্ধুর পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম শেখ সারহান নাসের তন্ময় (৩২)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ভাই শেখ আবু নাসেরের ছেলে সংসদ সদস্য (এমপি) শেখ হেলাল উদ্দীনের একমাত্র ছেলে তিনি।

করোনার কঠিন পরিস্থিতিতেও ব্যতিক্রমী সব উদ্যোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টি কেড়েছেন বাগেরহাট-২ আসনের এ সংসদ সদস্য।

নিজের ব্যক্তিগত সহকারীর করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসার পর চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি নিজেও আইসোলেশনে ছিলেন। করোনা ভাইরাস মাথাচাড়া দেওয়ার পর থেকেই নির্বাচনী এলাকার মানুষের পাশে থেকেছেন। অসহায়, কর্মহীন ও অভাবী মানুষের মাঝে নিয়মিত খাবার সামগ্রী বিতরণ করেছেন।

হটলাইনের মাধ্যমে ‘ডাক্তারের কাছে রোগী নয়, রোগীর কাছে ডাক্তার’ স্লোগানে নিজের সংসদীয় আসনে চিকিৎসাসেবা চালু করে হৈচৈ ফেলে দেন। ‘গর্ভবতী মায়েদের ঘরে পুষ্টিকর খাবার, ভবিষ্যতের কাছে বর্তমানের অঙ্গীকার’ এ স্লোগানে প্রায় দুই হাজার সন্তান সম্ভবা মায়ের জন্য পুষ্টিকর খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।

করোনার সম্মুখ যোদ্ধা চিকিৎসদের জন্য সেফটি চেম্বারও স্থাপন করেছেন। সব ধরণের সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।

ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম করোনা সঙ্কটেও নগরীর বাসিন্দাদের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েছেন প্রাণের মায়ায়। করোনা দুর্যোগে জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন সাধারণ মানুষের।

প্রথম লকডাউনের সময় তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে কর্মহীন ৬৭ হাজার পরিবারের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন। এছাড়া ডিএনসিসির পক্ষ থেকে ৫ লক্ষাধিক পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন।

জীবাণুনাশক স্প্রে, জনসচেতনতা তৈরি, সামাজিত দূরত্ব নিশ্চিত করা, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমসহ কর্পোরেশনের সার্বিক কাজ পরোক্ষভাবে তদারক করেছেন।

এরপর দায়িত্ব গ্রহণ করে নগর পরিচ্ছকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে প্রথমেই পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মশককর্মীদের মধ্যে ১ হাজার জোড়া গামবুট, ৫ হাজার জোড়া উন্নত মানের লম্বা গ্লাভস, ৮ হাজার মাস্ক, ৫ হাজার স্মার্ট জ্যাকেট (স্বাস্থ্যকর্মী ও হাসপাতালসমূহের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজে নিয়োজিত পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য) বিতরণ করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।

প্রতিটি ওয়ার্ডে সপ্তাহব্যাপী পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা যেমন করেছেন তেমনি জলবদ্ধতা নিরসনে বিশেষ ড্রেন পরিষ্কার কার্যক্রমও সম্পন্ন করেছেন। ডিএনসিসির এলাকার সকল সরকারি হাসপাতাল পরিচ্ছন্নতার আওতায় এনেছেন। কড়াইল, ভাষানটেক, বাউনিয়া বাঁধ ও ধামাল কোট বস্তিসহ মোট ২৩০টি স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

করোনা সংক্রান্ত তথ্য ও পরামর্শের জন্য ডিএনসিসির নগর ভবনে একটি সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর জন্য দু’টি হটলাইন চালু করা হয়েছে। ৫টি অঞ্চলে করোনা ভাইরাসসংক্রান্ত চিকিৎসা-তথ্য ও পরামর্শ সেবা চালু করা হয়েছে।

করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েও উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তির দাফনের জন্য প্রথমে ডিএনসিসির আওতাধীন খিলগাঁও-তালতলা কবরস্থান বরাদ্দ করলেও বর্তমানে রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা হচ্ছে। এখানে প্রায় ১ লাখ কবর দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

করোনার ভেতরে ‘মরার ওপর খাড়ার গা’ হিসেবে দেখা যায় এডিস মশা। এ মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে পরপর দুই দফা পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।

এবার দায়িত্ব গ্রহণ করেই এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে প্রতি মাসে অন্তত ১০ দিন করে চিরুনি অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছিলেন আতিকুল। পরবর্তীতে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযানে জরিমানাও করা হয়।

জানা যায়, অভিযান চলাকালে যেসব বাড়ি বা স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা কিংবা এডিস মশার বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া গেছে তার ছবি, ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে একটি অ্যাপে সংরক্ষণ করা হয়।

ফলে ডিএনসিসির কোন কোন এলাকায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে তার একটি ডাটাবেস তৈরি হয়েছে। ডাটাবেস অনুযায়ী পরবর্তীতেও মনিটর করা হয়।

সূত্র মতে, দ্বিতীয় দফায় অভিযানে নেমে, বাসা বাড়িতে ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশার লার্ভা প্রথমবারের তুলনায় কম পাওয়া যায়। ফলে ডিএনসিসি ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের সুফল পেয়েছে। এর ফলে গতবারের মতো এবার এখনও এডিস মশায় মৃত্যুর মিছিলের ঘটনা ঘটেনি।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো.ইকরামুল হক টিটু
করোনা সঙ্কটে একেবারে শুরু থেকেই স্থানীয় নগরবাসীর কল্যাণে নিজেকে সমর্পণ করেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা মেয়র মো.ইকরামুল হক টিটু। ‘কর্মবীর’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এ নগর পিতা করোনা ভীতির মাঝেও মানবসেবাতেই নিজেকে নিবিষ্ট রেখে আলোচিত হয়েছেন।

জানা যায়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর যখন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ‘সেফ জোন’ বেছে নেন সেই সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আদাজল খেয়ে মাঠে নেমে পড়েন মেয়র টিটু। প্রতিদিনই কোন না কোন কার্যক্রমে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের এ সহ-সভাপতি।

এমনকি ওই সময় নতুন এ সিটির কাউন্সিলরদের অনেকেই ‘সঙ্গ নিরোধ’ তত্ত্বে গা ভাসিয়েছেন। কিন্তু ব্যতিক্রম এ মেয়র নগরীতে জীবাণুনাশক ছিটানোর কার্যক্রম থেকে শুরু করে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য পয়েন্টে পয়েন্টে হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বাজার স্থানান্তর করা, সামাজিক সচেতনতা তৈরি থেকে ত্রাণ বিতরণ সবকিছুই সামাল দিয়েছেন সমানতালে।

নীরবে-নিভৃতে মানবিক সহায়তা হিসেবে নিজের সুবিশাল কর্মী বাহিনী দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন মানুষের বাড়ি বাড়ি। সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত এক হাজার ৩’শ মেট্টিক টন চাল ও ৪৫ লাখ টাকা নগদ বরাদ্দে চাল-ডাল, আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী কিনে অভাবী ও কর্মহীন সাধারণ মানুষের মাঝে বিতরণ করেছেন।

মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া আরও ৮ লাখ টাকায় কিনেছেন শিশু খাদ্য। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের মাধ্যমে এসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছেন। আবার নিজের কষ্টে অর্জিত অর্থে প্রায় ৭০ হাজার ব্যাগ খাদ্য বিতরণ করেছেন।

নিজের অর্থায়নে বিতরণ করা খাদ্য সামগ্রীতে সম্পৃক্ত করেছেন দলীয় নেতা-কর্মী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শ্রমজীবী ও কর্মজীবী নেতৃত্বকে। মেয়র টিটু’র সহায়তায় দলীয় নেতা-কর্মীরাও মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ অর্জন করায় বিল্ড হয়েছে দলীয় ইমেজ, চাঙ্গা হয়েছে কর্মীদের মনোবলও।

করোনা মহাপ্রলয়ের শুরু থেকেই জীবন ও স্বজনের মায়া কাটিয়ে মাঠে সক্রিয় এ নগর সেবকের স্বচ্ছ ও পরিপাটি এমন কর্মকান্ডে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে পারে, কেবল করোনাকালেই হয়তো নিজেকে এমনভাবে মেলে ধরেছেন মেয়র টিটু? বিষয়টি মোটেও নয় তেমন। বছরের বাকী এগারো মাসও তার ‘রোজনামচা’ এমনই।

চারিত্রিক দিক থেকেই বহুমুখী বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম এ প্রশাসক ব্রহ্মপুত্র উপকন্ঠের এই নগরীর বাসিন্দাদের আশা-আকাঙ্খা, অধিকার ও দাবির পক্ষে বরাবরই নির্ভীক-সোচ্চায় ভূমিকায় থেকেছেন।

মেয়র টিটু’র বড় ভাই আমিনুল হক শামীম দেশের ব্যবসায়ীদের পার্লামেন্ট হিসেবে পরিচিত এফবিসিসিআই’র টানা তিনবারের নির্বাচিত পরিচালক ছিলেন। রেকর্ড ভোটে জিতেছেন বারবার।

এখন দায়িত্ব পালন করছেন ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের সভাপতি হিসেবে। করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকেই তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি গণ পরিবহনে ‘সুরক্ষা বলয়’ নিশ্চিতে সর্বোচ্চ জোর দিয়েছেন।

ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের এ সহ-সভাপতি একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল, নিরবিচ্ছিন্ন পণ্য সরবরাহ নিশ্চিতেও নিবিষ্ট মনে কাজ করেন।

করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার শ্রমিকের মাঝে কয়েক দফায় চাল, ডালসহ নিত্যপণ্য সামগ্রী বিতরণ করেন নিজের উদ্যোগে। এর মধ্যে ১৫ হাজারই পরিবহন শ্রমিক।

দুই ভাইয়ের এমন মানবিক কর্মযজ্ঞ জেলাজুড়েই ব্যাপক সাড়া ফেলে। তৈরি করে অনন্য উদাহরণ। ফলে বাধ্য হয়েই অনেক বড় বড় জনপ্রতিনিধিদেরও ‘নিস্তরঙ্গ’ জীবনের ইতি টেনে দাঁড়াতে হয় মানুষের পাশে।

কালের আলো/আরআই/এমএএএমকে