শোকের উচ্চারণে স্বাধীন ভূখন্ডের চিত্রকর, রাজনীতিক-জনপ্রতিনিধিদের মর্মস্পর্শী মূল্যায়ন

প্রকাশিতঃ 2:09 pm | August 15, 2020

কালের আলো রিপোর্ট :

পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও বঙ্গোপসাগরের কূলে বসবাসকারী এই জনসম্পদের ইতিহাসে সর্বোত্তম আসনে অধিষ্ঠান তাঁর। উজ্জ্বল সূর্যের মতোই দেদীপ্যমান। রক্তাক্ত সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের রূপকার। মৃত্যুঞ্জয়ী বিশ্বের নেতা।

আরও পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাদের ‘সুখস্মৃতি’, জ্বলজ্বল মনের হীরক দ্যুতিতে

আমাদের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত, নদীর কলতান বা পাখির কুজন-কোথায় নেই বদ্বীপের এ স্বাধীন ভূখন্ডের চিত্রকর। সবুজ-শ্যামল, আর সুনীল প্রান্তরে তিনি আছেন এবং থাকবেন অনন্তকাল।

প্রধানমন্ত্রীত্বের হাতছানি প্রত্যাখ্যান করে দেশের স্বাধীনতার পথ বেছে নিয়েছিলেন। দেশ স্বাধীনতা এনে দিয়ে রাষ্ট্রচিন্তার কেন্দ্রভাগে স্থান দিয়েছিলেন অসাম্প্রদায়িকতাকে।

আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুকে হারানোর শোক অনুভব করেছিলেন বিশ্বনেতারা

বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে পিছিয়ে দিতে একাত্তরের পরাজিত পাকি শক্তি, ক্ষমতালোভী নরপিশাচ কুচক্রী মহল ৭৫’র ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল সপরিবারে।

আরও পড়ুন: শোকের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত ব্যারিস্টার তাপস

আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু পকেট থেকে ৩০০ টাকা বের করে দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ওই সময় তৎকালীন পশ্চিম জার্মানীতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান। গোটা বাঙালি জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। জাতির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় অবদানই ‘অজেয়’ করে রেখেছে বঙ্গবন্ধুকে।

শোকাবহ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে সর্বস্তরের মানুষের শোকের উচ্চারণে, ভালোবাসায় স্মরিত হচ্ছেন জাতির জনক। বাঙালির মননে, চেতনায়, ভালোবাসায় অমর অক্ষয় এবং অব্যয় হয়ে আছেন নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালি জাতির এ মুক্তির কান্ডারি।

উজ্জ্বল ফুলকলির মতো ফুটে, লাল গোলাপের মতো পরিস্ফুটিত হাজার বছরের এ শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে নিয়ে মর্মস্পর্শী মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন সরকারি দল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিরা। কালের আলো’র সঙ্গে তাদের আলাপচারিতার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হচ্ছে পাঠকদের জন্য।

প্রতিটি শোক দিবসেই বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যাকে যেমন দেখেছেন মুহাম্মদ ফারুক খান
বাঙালি জাতির শোকের দিন ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি কিছু বিশ্বাসঘাতক রাজনীতিকের কূট চক্রান্ত ও সেনাবাহিনীর একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের নির্মম বুলেটের আঘাতে সেদিন প্রাণ হারান জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

প্রবাসে থাকায় সেদিন প্রাণে রক্ষা পান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। চরম রকমের বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশেও ভাগ্যলিখনে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর এই দুই আমানত।

ফলশ্রুতিতে প্রতিটি শোক দিবসেই শোককে শক্তিতে পরিণত করে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দল-মতের উর্ধ্বে উঠে তিনি স্টেটসম্যান বা রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছেন। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আদায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারানোর শোকাবহ দিনটিতে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে কেমন দেখেছেন এমন প্রশ্ন ছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে: কর্ণেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি’র কাছে।

গোপালগঞ্জ-১ (মকসুদপুর-কাশিয়ানী) থেকে টানা ৫ বার নির্বাচিত এ সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহানা’র ‘বিশ্বস্ত স্বজন’ হিসেবে পরিচিত। সফলতার সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর। আছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবেও।

কালের আলো’র প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বলছিলেন এভাবে-‘স্বজন হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে বজ্রকঠিন এক ব্রত নিয়েই ১৯৮১ সালে দেশের মাটিতে পা রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের সংকল্পে শত প্রতিকূলতাও হার মানাতে পারেনি দৃঢ়চেতা শেখ হাসিনাকে। প্রতিটি শোক দিবসেই আমি বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যাকে দেখেছি ধৈর্য্যরে সঙ্গে শোক দিবস পালন করেন।’

তিনি বলেন, ‘গভীর শোকের পাশাপাশি দৃঢ় প্রত্যয়ের সঙ্গে জাতির জনকের ত্যাগ এবং তিতিক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ ধারণ করেই পথ চলেছেন বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। তাদের হৃদয় দু:খ ভারাক্রান্ত হলেও জাতির পিতার স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতেই নিবিষ্টমনে তারা কাজ করছেন।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে: কর্ণেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি বলেন, ‘মহান জাতির পিতাকে হারানোর শোক আজ গোটা বাঙালি জাতির মধ্যেই প্রবাহিত হয়েছে। জাতির পিতা আমাদের নিজস্ব রাষ্ট্র, নিজস্ব পতাকা আর জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে গেছেন।

জাতির পিতার মতোই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী, সাহসী ও ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বের দৌলতেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে নিজেদের সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে।’

সেদিন হত্যা করা হয়েছিল বিশ্ব মানবতাকে
ক্ষোভ প্রকাশ করেই বর্ষীয়াণ এই আওয়ামী লীগ নেতা বলছিলেন, ‘১৫ আগস্ট শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশে^র জন্যই একটি অন্যতম শোকাবহ দিন। এই দিন শুধু আমাদের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েনি, সেই দিন বিশ^ মানবতাকে হত্যা করা হয়েছে।

বিশে^র ইতিহাসে এ ধরণের কলঙ্কজনক এবং শোকাবহ রাজনৈতিক হত্যাকান্ড অতীতে কখনো ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। নারকীয় এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল বাংলাদেশের কিছু ষড়যন্ত্রকারী, দুর্নীতিপরায়ণ ও দেশদ্রোহীরা।’

পরিবারের অন্য সদস্যদের সম্পর্কে মূল্যায়ন
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে: কর্ণেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি কালের আলোকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর প্রিয় সহধর্মিনী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, যিনি সবসময় তাকে সকল কাজে সহযোগিতা করেছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রগঠন, বাংলাদেশের আন্দোলনে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছিল তাঁর।

তার বড় ছেলে শেখ কামাল, যিনি আমার বন্ধু ছিলেন। ঢাকা কলেজে আমরা একসঙ্গে পড়াশুনা করেছি। ওর সাথে আমার সব সময় কথা হতো। কত সুখস্মৃতি রয়েছে আমাদের। সেই সময় আমিও ছাত্রলীগ করতাম।

ক্যাপ্টেন শেখ কামাল খেলাধুলা ও সংস্কৃতিচর্চার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সংগঠিত বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিজেকে নিবেদন করেছিলেন।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাড়ি থেকে বের হয়ে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেছিলেন। শহীদ শেখ কামাল ছিলেন তার প্রজন্মের অগ্রবর্তী পথপ্রদর্শক। একই সঙ্গে দূরদর্শী ও গভীর চিন্তাবোধের অধিকারী।

শেখ জামাল একজন সাহসী চৌকস সামরিক সামরিক অফিসার ছিলেন। আমরা দু’জনেই প্যারাট্রুপার ছিলাম। বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও নিজ নিজ অবস্থানে কৃতিমান ছিলেন। তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছিল।

এই পরিবারের প্রতিটি সদস্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের আধুনিক বিনির্মাণে বিশেষ অবদান রেখেছেন।

তারা যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে আজকেও তারা বাংলাদেশের অগ্রগতিতে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারতেন বলেই আমি মনে করি।

মনেপ্রাণে বঙ্গবন্ধু; শোকার্ত উচ্চারণ স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের

সেই শৈশব থেকেই বঙ্গবন্ধুকে মনেপ্রাণে ধারণ করেন। নিজের প্রতিটি বক্তব্যেই বারবার বলেছেন, শত বছরেও বঙ্গবন্ধুর মতোন মহান নেতা আর দ্বিতীয়টি হবে না। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা কাপুরুষোচিতভাবে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ পুরুষ বঙ্গবন্ধুকে পরিবার-পরিজনসহ হত্যা করেছে।

বঙ্গবন্ধু কেবল নিজেই ইতিহাস নন, তাঁর পরিবারের প্রতিটি সদস্য ব্যক্তিত্বের দ্যুতিতে মহান হয়ে আছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর রক্তের নামে আদর্শবোধ বুকে নিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশকে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

শোকার্ত হৃদয় নিয়েই এমন সব উচ্চারণ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি’র। বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কিত, শোকের ও কান্নার দিন ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কালের আলো’র সঙ্গে আলাপে নিজের এমন মূল্যায়ন উপস্থাপন করেন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক যড়যন্ত্রের মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে ইতিহাস থেকে তাঁর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।

ষড়যন্ত্রকারীদের সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। বরং ইতিহাসে চির স্মরণীয় হয়ে আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’

মন্ত্রী মনে করেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে বঙ্গবন্ধুসহ পুরো পরিবারকে নৃশংস হত্যার মধ্য দিয়ে দেশকে গভীর সঙ্কটে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে দেশ এখনও গভীর সঙ্কটেই রয়েছে।’

কথার সঙ্গে কাজের সমন্বয় সাধন করে পথচলায় বিশ্বাসী মানুষ মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। একজন আপাদমস্তক অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতিবিদ হিসেবে সততা সাহস নীতি ও আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে, দেশ ও মানুষের প্রতি গভীর মমতা নিয়ে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারূভাবেই পালন করছেন এ স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।

নিজের প্রতিটি বক্তব্যেই মন্ত্রী তাজুল ইসলাম অমিত দৃঢ়তায় উচ্চারণ করেন রাজনীতির অমর কবি, স্বাধীন বাংলাদেশের চিত্রকর বঙ্গবন্ধুর কথা। কালের আলো’র সঙ্গে আলাপেও তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু নিপীড়িত মানুষের জন্য আন্দোলন করেছেন।

জেল, জুলুম, নির্যাতন উপেক্ষা করে জাতিকে সংগঠিত করেছেন। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করেছেন। এই মহান নেতাকে ভুলানোর জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল।

বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসসহ কোনো দিবসে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করা হতো না। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। এই বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভুলেনি।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু বুভুক্ষু ও দরিদ্র মানুষের জন্য আন্দোলন করেছেন। আমরা আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে দেশের মানুষ ভালো থাকবে। আর দেশের মানুষ ভালো থাকলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে।’

মন্ত্রী তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মাত্র সাড়ে ৩ বছর পেয়েছিল বাংলাদেশ। এই কম সময়ের শাসনামলেই প্রায় শূন্য অর্থনীতির দেশকে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে যান।’

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের সময় দীর্ঘ ৯ মাস দেশে কোনো ফসল উৎপাদন হয়নি। বিজয়ের পরে দেশ ছিল গভীর সঙ্কটে। খাদ্য ছিল না, সড়ক ও কালভার্ট ছিল না, পরিবহন ছিল না। এই গভীর সংকটের মধ্যেই অল্প দিনে বঙ্গবন্ধু দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে নানা পরিকল্পনা করেছেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত রাস্তাঘাট মেরামত শুরু করেন, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা খুলে দেন, স্বাভাবিক হতে শুরু করে পরিস্থিতি। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বে সঙ্কট কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ।’

কালো ব্যাচ ধারণ ও মুজিববর্ষের কোট পিন ব্যবহার
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং এর আওতাধীন দপ্তর-সংস্থা ও সব স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে শোকের মাস শুরুর পর থেকেই সবাইকে কালো ব্যাচ ধারণ এবং মুজিববর্ষের কোট পিন ব্যবহার করার নির্দেশনা প্রদান করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ কালের আলোকে বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকতা পালনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে ধারণ করে তার আদর্শ লালন ও পালন করা। জাতির পিতা যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণ করা।’

তিনি জানান, মাননীয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম মহোদয়ের নির্দেশে শোকের মাসে কালো ব্যাচ-মুজিববর্ষের কোট পিন ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন সব দপ্তর-সংস্থা এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালনের জন্য জাতীয় শোক দিবসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্ব-স্ব কর্মসূচি প্রণয়ন ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বাস্তবায়ন করতে ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।

জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক জাতীয়ভাবে আয়োজিত শোক দিবসের কর্মসূচিতে দেশের সব সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদকে অংশ নিতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বেঁচে গিয়েছিলেন বলেই জাতি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছি : খাদ্যমন্ত্রী

সেই ভয়াল, বীভৎস্য ১৫ আগস্ট। কাল থেকে কালান্তরে জ্বলছে শোকের আগুন। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫ তম শাহাদাতবার্ষিকীতে বাঙালি জাতি গভীর শোক-শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানবকে।

জাতীয় শোক দিবসকে ঘিরে এ প্রসঙ্গেই কালের আলো’র সঙ্গে কথা বলেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তৃণমূল থেকে ওঠে আসা পোড় খাওয়া এ রাজনীতিক মনে করেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মতোন একজন রাষ্ট্রনায়ককে বাঙালি জাতির হৃদয় থেকে চিরতরে মুছে ফেলা সম্ভব নয়। তিনি মৃত্যুঞ্জয়ী।’

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘৭৫ এর সেই কালোরাতে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বেঁচে গিয়েছিলেন বলেই আজ আমরা জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছি। ঘাতকরা তাকে হত্যা করলেও তার আদর্শকে সাধারণ জনগণের মন থেকে মুছে ফেলতে পারেনি।’

১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মোটিভ এবং এই খুনের বেনিফিসিয়ারি কারা, তা খুঁজে বের করারও জোর দাবি জানান বর্ষীয়াণ এ রাজনীতিক। তিনি বলেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলনের সময় রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু জেলে যান।

তারপর আসে ৬৬’র ৬ দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০’র নির্বাচন এবং সর্বশেষ ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ। ৭ মার্চের তাঁর সেই অমোঘ বাণী ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’।

আর তাঁর সেই সংগ্রামের সুফল আজ আমরা পাচ্ছি। স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছি।’

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার।

কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তার সে স্বপ্ন পূরণ হতে দেয়নি। দীর্ঘদিন পর তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা জাতির পিতার সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে আমরা ইতোমধ্যেই জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন করেছি। তার নেতৃত্বেই দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে।

তার শাসনামলের মধ্যেই ২০২১ সাল নাগাদ আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবো। আমরা কোথায় ছিলাম, আর এখন কোথায় আছি। প্রতিটি সেক্টরে দেশ এখন অনেক এগিয়েছে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে আমরা অনেক আগেই সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলা গড়তে পারতাম উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আজীবন মানুষের জন্য নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। তাঁর জীবনাদর্শ ছিল বিশাল।’

‘বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক দেয়াল চিত্র
গত বৃহস্পতিবার (০৬ আগস্ট) সকালে খাদ্য ভবনের নিচতলায় স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা’ শীর্ষক দেয়াল চিত্রের উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এ দেয়ালচিত্রে যেন জ্বলজ্বল করছে দেশের অভ্যুত্থানের ইতিহাস।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবনের বীরত্বগাঁথা, দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসও সেখানে ঠাঁই করে নিয়েছে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কর্মকান্ডও ফুটে উঠেছে।

দেয়াল চিত্রটিতে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার লড়াই করতে নেমে বাঙালি একটি নতুন রাষ্ট্রের স্বপ্ন হয়ে উঠেছে অন্যতম উপজীব্য। দেয়াল চিত্রটিতে বস্তুত রক্তমাখা একুশের পর ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন এবং একই ধারাবাহিকতায় ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলন ধীরে ধীরে সে স্বপ্নটাকে তুলে আনা হয়েছে।

রয়েছে, একাত্তর সালের ২৫ মার্চ পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণ এবং তার বিরুদ্ধে স্বাধীনতাকামী বিক্ষুব্ধ বাঙালি জাতির গণজাগরণের সশস্ত্র লড়াই ও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বীর জাতি হিসেবে বাঙালির আত্নপ্রকাশও উঠে এসেছে দেয়াল চিত্রটিতে। #

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে ‘দক্ষ জনপ্রশাসন’ গড়ে তোলার অঙ্গীকার প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের

বাবা প্রয়াত ছহিউদ্দীন বিশ্বাস ছিলেন ইতিহাসের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠকও। মহাকাব্য যুগের রাজনীতিতে মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি সেই শৈশব থেকেই নিজের গভীর হৃদয়গ্রোথিত আবেগ।

বাবার মুখ থেকেই মেহেরপুর-১ আসন থেকে টানা দু’বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জেনেছেন, শোনেছেন গোটা বাংলাদেশকে একটি পরিবার ভাবতেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

স্বাধীনতার অর্জনকে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে নিতে আদর্শ ও ত্যাগের মহিমায় একটি জাতিকে নৈতিক চরিত্রে দাঁড় করাতে বঙ্গবন্ধু আত্নত্যাগ করেছেন।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালো রাতে একাত্তরের পরাজিত শক্তিই স্বপরিবারে নৃশংস হত্যাকান্ডের মাধ্যমে বাঙালির হাজার বছরের অর্জন স্বাধীনতা ও সব মহতী আকাঙ্খাকেও হত্যা করতে চেয়েছিল বলে মনে করেন এ প্রতিমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনা যেন তাঁর কাছে অনুভূতি এবং অহংকার দু’টোই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক চিন্তা-চেতনা, মননশীলতায় ও মেধায় জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি নিবেদিত থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দক্ষ জনপ্রশাসন গড়ে তোলার মিশনে নেমেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) কালের আলো’র সঙ্গে আলাপে এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালি জাতির জন্য এক আশীর্বাদ।’

বলতে থাকেন ‘বাংলাদেশ হঠাৎ করে একদিনেই স্বাধীন হয়নি। বঙ্গবন্ধু ধীরে ধীরে এ জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। অনেক প্রতিকূলতা, জেল-জুলুম উপেক্ষা করে তিনি এদেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।’

ফরহাদ হোসেনের বাবা প্রয়াত ছহিউদ্দীন বিশ^াস ১৯৬২ সালে মেহেরপুর মহকুমা আওয়ামী লীগ সভাপতি ছিলেন। ফরহাদ হোসেন নিজেও সভাপতি হিসেবে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

বাংলাদেশের প্রথম সরকার মেহেরপুরের মাটিতে শপথ নিলেও স্বাধীনতার পর মেহেরপুরের কেউ মন্ত্রিপরিষদে স্থান পাননি। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা দ্বিতীয়বার ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফরহাদ হোসেনের কাঁধে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বভার অপর্ণ করেন।

কালের আলো’র সঙ্গে আলাপচারিতায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দুটি স্বপ্ন ছিল। একটি স্বপ্ন ছিল, বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। দ্বিতীয় স্বপ্নটি হচ্ছে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করা।

বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় স্বপ্নটি পূরণ করতে হলে একটি সুদক্ষ জাতি গঠন করতে হবে। তাই একটি দক্ষ জনপ্রশাসন গড়ে তুলে দেশকে উন্নতসমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে সরকারি কর্মচারীদের কর্মদক্ষতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘একটি জাতি কতটা উন্নত হবে, তা নির্ভর করে ওই জাতিতে কত বেশি কর্মদক্ষ জনসম্পদ রয়েছে তার ওপর। বঙ্গবন্ধু এটি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।

তাই তিনি এ দেশের মানুষকে দক্ষ জনসম্পদে পরিণত করার জন্য ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতার দেখানো পথ অনুসরণ করে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে হবে।’

ফরহাদ হোসেন কালের আলোকে আরও বলেন, ‘এই দেশ ও জাতির জন্য বঙ্গবন্ধুর ছিল অকৃত্রিম ভালোবাসা । তিনি সুযোগ পেলেই বারবার সে ভালবাসার প্রমাণ দিয়েছেন। তিনি এদেশের স্বাধীনতার জন্য দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন।

এ দেশকে স্বাধীন করার জন্য বঙ্গবন্ধু যেভাবে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন তা ইতিহাসে বিরল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারণেই আমরা কাঙ্খিত স্বাধীনতা অর্জন করেছি।’

বঙ্গবন্ধুকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান উল্লেখ করে এ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি জাতিসংঘে বাংলায় বক্তৃতা করেছেন । বাংলা ভাষা ও মাতৃভাষার মর্যাদা তিনি বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছেন।’

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার মিশনের কথাও তুলে ধরেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা, জাতীয় ঐক্যের প্রতীক।

বঙ্গবন্ধুকে সামনে রেখেই জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে বিশ্বের বুকে আমরা উন্নত ও সম্মৃদ্ধ দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব।’

‘স্বাধীনতার ইতিহাস এবং সেই ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুকে জনগণের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরার ওপর গুরুত্বারোপ করে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচরের এ রাজনৈতিক উত্তরাধিকার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে আরও বেশি গবেষণার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।

নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে যাতে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে ভবিষ্যতে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে পারে।’

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে ‘সোনার মানুষ’ চান এমপি রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক

‘বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন’ এমনটিই মনে করেন কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা খ্যাত অষ্টগ্রাম-ইটনা-মিঠামইনের (কিশোরগঞ্জ-৪) সংসদ সদস্য (এমপি) প্রকৌশলী রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক। এ আসন থেকে টানা তিনবার নির্বাচিত এ সংসদ সদস্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের এ জ্যেষ্ঠ সন্তান।

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে ‘ভাটির রত্ন’ হিসেবে পরিচিত এ সংসদ সদস্যের একটি বক্তব্য অতীতেও হৃদয় ছুঁয়েছে সবার। তিনি একাধিকবার বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে সোনার মানুষের খুব প্রয়োজন।’

আপাদমস্তক আওয়ামী লীগ পরিবারের এ সন্তান নিজের এ উক্তির পেছনে বিশ্লেষণী তথ্যও উপস্থাপন করেন কালের আলো’র সঙ্গে আলাপচারিতায়। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন পূরণেই সোনার মানুষের খুব প্রয়োজন। আর এটি সম্ভব হলেই মহান জাতির জনকের বিদেহী আত্মা তৃপ্ত হবে, শান্তি পাবে।’

বঙ্গবন্ধুর ৪৫ তম শাহাদাতবার্ষিকীর অঙ্গীকারও ঠিক করেছেন মহামান্যের এ জ্যেষ্ঠ সন্তান। তিনি বলেন, ‘আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের অঙ্গীকার হোক তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শ বুকে লালনের মাধ্যমে দেশ-জাতি এবং দলের জন্য আত্মনিবেদন করার।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতার চেয়ে জনসেবা ও জনগণের পক্ষে আন্দোলনকে ভালোবেসেছিলেন বলেও মন্তব্য করেন সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহম্মেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা গোটা বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর কাছে অসীম ঋণে আবদ্ধ। বঙ্গবন্ধু ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন আর ষড়যন্ত্রকারীরাই ইতিহাস থেকে মুছে গেছে।’

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও গতিশীল নেতৃত্বকেও উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেন প্রকৌশলী রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক।

বলেন, ‘মহান জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড় তুলতে জাতির কান্ডারি হিসেবেই কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বজন হারানোর শোককে তিনি শক্তিতে পরিণত করেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সম্মিলিতভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের দৃপ্ত অঙ্গীকার।’

বঙ্গবন্ধু ছিলেন এক জ্যোতির্ময় নক্ষত্র : নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি বহিষ্কৃত ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজেদের মৃতদেহ ভোলার মাটিতে দাফন করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন।

নিজের কথা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করেছেন এ সংসদ সদস্য। ভোলার মাটিতে ঠিকই দাফন করতে দেওয়া হয়নি খুনির লাশ। মৃতদেহ বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দিতে বলেছিলেন। মূলত সংসদ সদস্য শাওনের অনড় সিদ্ধান্তের কারণেই ওই সময় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কঠোর গোপনীয়তায় এ নরপিশাচকে দাফন করা হয়।

খুনি মাজেদের ফাঁসি কার্যকরের মধ্যে দিয়ে ভোলাকে কলঙ্কমুক্ত করার কথাও সেই সময় গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন এ সংসদ সদস্য।

তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ছিলেন এক জ্যোর্তিময় নক্ষত্র। তাঁর আলোকচ্ছটায় আলোকিত হয়েছিল বাঙালি। উদ্দীপ্ত হয়েছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে।

তিনিই বঞ্চিত বাঙালির মুখে প্রতিবাদের ভাষা জুগিয়েছিলেন। ঘুমিয়ে পড়া বাঙালিকে রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামে টেনে নিয়ে এসেছিলেন। নেতৃত্বগুণে সব বাঙালিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত করেছিলেন।’

বঙ্গবন্ধু দেশজুড়ে বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু করেছিলেন মন্তব্য করে ‘দ্বীপবন্ধু’ নূরুন্নবী চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মাথা তুলে দাঁড়াতে শুরু করেছিল। কিন্তু হায়! ওই কর্মযজ্ঞ থেমে গিয়েছিল ভয়াল ১৫ আগস্টে।

বাতাস ফুঁপিয়ে কেঁদেছিল, আকাশ হয়ে গিয়েছিল অধিক শোকে পাথর। সৃষ্টির পর থেকে এমন শোকের ঘটনা বিশ্ব প্রকৃতি আর কখনই বোধহয় প্রত্যক্ষ করেনি। এমন বিশ্বাসঘাতকতাও বোধহয় আর কখনও দেখেনি। তাই পুরো বিশ্ব প্রকৃতিই হয়ে গিয়েছিল নিস্তব্ধ, শোকে মুহ্যমান পাষাণ।’

তিনি বলেন, ‘যে মহান ব্যক্তি একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিলেন, তাকে তারই দেশের মানুষের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে প্রাণ দিতে হয়েছে। এর চেয়ে শোকের, বিস্ময়ের আর কী থাকতে পারে।

শুধু তাই নয়, যাদের জন্য তিনি আজীবন মরণপণ লড়াই করে গিয়েছিলেন, যাদের সুখের জন্য, যাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য নিজের জীবনের সব আরাম-আয়েশ ত্যাগ করেছিলেন, জেলজুলুম-অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছিলেন।

তারাই তার নির্মম মৃত্যুতে উচ্চ:স্বরে কাঁদতে পারেনি। ঘাতকের উদ্ধত সঙ্গিন তাদের কাঁদতে দেয়নি, পিতা হারানোর শোকগাথা তৈরি করতে দেয়নি।’

শোকাবহ ১৫ আগস্ট উপলক্ষে কালের আলো’র সঙ্গে আলাপে পরিশ্রমী রাজনীতিক নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন আরও বলেন, ‘১৫ আগস্টের ওই ভোররাতটি ছিল বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কময়, অশ্রুভেজা এক ভোররাত।

ওই রাতের কথা ৫৬ হাজার বর্গমাইল জনপদের প্রতিটি ধূলিকণা কখনো ভুলতে পারবে না। পারা সম্ভবও নয়। রক্তের কালিতে লেখা ওই রাতের শোকগাথা বীণার করুণ সুর হয়ে বাঙালির হৃদয়ে বেজে চলে অনবরত।’
বঙ্গবন্ধুর নির্মম ওই হত্যাকান্ডের খবরে বিশ্ববাসী শোকে মুহ্যমান হয়ে গিয়েছিল জানিয়ে এমপি শাওন বলেন, ‘পত্রিকার পাতাজুড়ে ছিল ওই শোকের সংবাদ। নোবেল জয়ী পশ্চিম জার্মানির নেতা উইলি ব্রানডিট তখন বলেছিলেন, ‘মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না।

যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে, তারা যে কোনো জঘন্য কাজ করতে পারে।’ ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক নীরদ শ্রী চৌধুরী বাঙালিদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, ‘বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি বিশ্বের মানুষের কাছে নিজেদের আত্মঘাতী চরিত্রই তুলে ধরেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘টাইমস অব লন্ডন পত্রিকার ১৬ আগস্টের সংখ্যায় বলা হয়, ‘সবকিছু সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সব সময় স্মরণ করা হবে। কারণ তাকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোনো অস্তিত্ব নেই।’

ওইদিন লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের লাখ লাখ লোক শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকান্ডকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করে যাবে আজীবন।

কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি। কিন্তু শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্বে, সাহসিকতাই এ মানবই হিমালয়। আর এভাবেই আমি হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতা লাভ করেছি।’

বাঙালি জাতির ইতিহাসে সুনির্দিষ্ট ও স্বীয় মহিমায় উজ্জ্বল বঙ্গবন্ধু এমনটি উল্লেখ করে নূরুন্নবী চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু আছে তার আদর্শ। বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ও দর্শন তথা আদর্শ বাঙালি জাতির পথ চলার পাথেয়। এর মধ্যে দিয়েই তিনি বাঙালির কাছে চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন।’

‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে তার কন্যা, দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে পৌঁছে দিয়েছেন বাংলাদেশকে। যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের মাধ্যমে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। দিগভ্রান্ত প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ।

তরুণ প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং চেতনা বুকে ধারণ করে দেশের ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে, জাতীয় শোক দিবসে নিজের এমন প্রত্যাশার কথাই জানান লালমোহন-তজুমদ্দিন উপজেলা নিয়ে গঠিত ভোলা-৩ আসনের এ সংসদ সদস্য।

বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনার দাবি মেয়র টিটুর

জাতীয় শোক দিবসের শোকাবহ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনার দাবি জোরালো কন্ঠে উচ্চারণ করেছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো.ইকরামুল হক টিটু।

তিনি বলেছেন, ‘অভিশপ্ত ১৯৭৫’র ১৫ আগস্টের কালো রাতে বাঙালি জাতির ললাটে যে কলঙ্কতিলক পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল; দীর্ঘ ৩৪ বছরের বেশি সময় পর ওই কলঙ্ক থেকে জাতির দায়মুক্তি ঘটেছে। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে পাঁচ খুনির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।

এরই মধ্যে দিয়ে একটি ঘৃণ্য ও অন্ধকারাচ্ছন্ন অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঙালির বিজয় অভিযাত্রা আরেক ধাপ এগিয়েছে।’

বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা অন্ত:প্রাণ এ নগর পিতা আরও বলেন, ‘মহান জাতির জনকের ছয় খুনি এখনও বিদেশে পালিয়ে রয়েছে। ওইসব নরঘাতকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আমি বলবো, বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরী ও নূর চৌধুরীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর হবে মুজিব শতবর্ষের প্রত্যয়।’

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ আইনি-প্রক্রিয়া শেষে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে ১২ খুনির মধ্যে পাঁচ খুনির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। তারা হল- কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান, কর্নেল (অব.) সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, লে. কর্নেল (অব.) মহিউদ্দিন আহমদ, মেজর (অব.) একে বজলুল হুদা এবং মেজর (অব.) একেএম মহিউদ্দিন (আর্টিলারি)। বাকি সাতজনের মধ্যে আজিজ পাশা ২০০১ সালে জিম্বাবুয়েতে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করে।

মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ইতিহাসের মহানায়ক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি চির জাগরূক রাখতে স্বাধীনতা ভাস্কর্য ‘জয় বাংলা চত্বর’ নির্মাণ কাজও শুরু করেছেন সিটি মেয়র ইকরামুল হক।

তিনি জানান, ময়মনসিংহের প্রাণকেন্দ্র চায়না ব্রিজ ও বেড়িবাঁধের পাশে নির্মিত লিংক সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে অচিরেই মাথা তুলে দাঁড়াবে থাকবে ‘জয় বাংলা চত্বর’।

এ চত্বরে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবন ইতিহাস স্থান পাবে। এ চত্বরকে দৃষ্টিনন্দন ও নান্দনিক হিসেবে গড়ে তোলার কাজও চলছে।’

অন্তরালের ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করার দাবি ডা: ইকবাল আর্সনালের

বাঙালির শোকের দিন শোকাবহ ১৫ আগস্ট। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫ তম শাহাদাতবার্ষিকীতে ১৯৭৫’র ১৫ আগস্টের কালো রাতে বিশ্ব ও মানব সভ্যতার ইতিহাস ঘৃণ্য, নারকীয় ও নৃশংসতম হত্যাকান্ডের অন্তরালের ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করার জোর দাবি জানিয়েছেন ডা: ইকবাল আর্সনাল।

তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি। কালের আলো’র সঙ্গে আলাপে ডা. ইকবাল আর্সনাল বলেছেন, ‘আমাদেরকে ইতিহাস এবং ঘটনার গভীরে প্রবেশ করতে হবে। তুলে আনতে হবে দৃশ্যমান ষড়যন্ত্রকারীদের এবং অন্তরালে ষড়যন্ত্রকারীদেরও।

কারণ ১৫ আগস্টের কালো রাতে দেশি-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল সেজন্যই শেষ মুহূর্তে শেখ রাসেলের মত একজন অবুঝ শিশুকে হত্যা করতে খুনিদের হাত এতোটুকু বুক কাঁপেনি। বঙ্গবন্ধুর পলাতক বাদ বাকী খুনিদেরও দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে এনে বাঙালি জাতিকে পূর্ণ কলঙ্কমুক্ত করতে হবে।’

ইতিহাস হাতড়ে ডা: ইকবাল আর্সনাল আরও বলেন, ‘১৭৫২ সালের ২৩ জুন বাংলার কিছু বিশ্বাসঘাতকের ষড়যন্ত্রে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল।

ঠিক একইভাবে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট খুনী মোস্তাক-জিয়ার প্ররোচনা আর নেতৃত্বে এদেশের কিছু বিশ্বাস ঘাতক রাজনীতিবিদ আর বিপথগামী সেনাবাহিনীর সদস্যরা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে নিভিয়ে দিয়েছিল বাঙালির আশার প্রদীপ।

তারা হত্যা করেছিল বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে, আত্মীয়-পরিজন নারী-শিশু নির্বিশেষে সবাইকে। হত্যা করেছিল সদ্য স্বাধীন বাংলার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নকে। ধ্বংস করতে চেয়েছিল স্বাধীনতার মূলমন্ত্রকে।’

স্বাধীনতার সাফল্যকে ধ্বংস করতেই খুনিরা সেই কালো রাতে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল অভিযোগ করে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) এ সভাপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন বিধ্বস্ত অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তুলেছিলেন।

বাংলাদেশ যখন তাঁর নেতৃত্বে বিশ্ব পরিমন্ডলে তাদের আসন সুদৃঢ় করে চলছিল, স্বাধীনতা যখন অর্থবহ হয়ে উঠেছিল সেই সময় স্বাধীনতা বিরোধী চক্র কুঠারাঘাত হানে স্বাধীনতার চেতনা, স্বাধীনতা সাফল্য আর ফসলকে ধ্বংস করার জন্য।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ কৃপায় সেদিন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহেনা দেশের বাইরে থাকার কারণে বেঁচে যান।

আজ জননেত্রী শেখ হাসিনা অনেক চড়াই-উৎরাই পার হয়ে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছেন। বাঙালি জাতির স্বাধীনতার সুফল ৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লক্ষ মা-বোনের আত্মত্যাগের ফসল মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দিচ্ছেন।’

‘বাংলাদেশ এখন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা বিশ্বের কাছে অনুকরণীয় দেশ জাতি হিসেবে উপনীত হয়েছে। বাংলাদেশে তার সাফল্যের চূড়ায় অধিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। একের পর এক সব রকমের দুর্যোগ মোকাবেলায় সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ যোগ করেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) এ সভাপতি।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত করতে এবং স্বাধীনতার সুফল প্রাপ্তিতে স্বাধীনতার চেতনার শেষ আশ্রয়স্থল শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী ও সুদৃঢ় করতে হবে।’

কালের আলো/এনআরকে/এমএসএএ