রেললাইন সংস্কারে পাথরের পরিবর্তে ইটের সুড়কি!

প্রকাশিতঃ 9:41 am | August 26, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

ময়মনসিংহ নগরীর কেওয়াটখালী রেলওয়ে লোকোশেড থেকে রেলওয়ে জংশন স্টেশনের আউটার সিগন্যাল পর্যন্ত পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রেললাইন সংস্কার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ইটের সুড়কি।

সাধারণত রেললাইনে পাথর ব্যবহার করা হলেও এবারই প্রথম ইটের সুড়কি দিয়ে বেহাল রেললাইনটি উঁচু করার কাজ করছে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বিভাগ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন ছবি নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। তবে, রেলওয়ের দায়িত্বশীলরা বলছেন, নিজেদের চুক্তি মোতাবেকই পাথরের পরিবর্তে ইটের সুড়কি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে অন্তত রেল লাইনচ্যুত হবার ঘটনা কমে আসবে।

জানা যায়, নগরীর কেওয়াটখালী রেলওয়ে লোকোশেড থেকে রেল স্টেশনের আউটার সিগন্যাল পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রেললাইনে পানি জমে এ অংশটুকু দেবে গেছে। এতে করে কাঠের স্লিপারেও পচন ধরেছে। এ অবস্থায় সপ্তাহখানেক আগে এ রেললাইনটি সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, এ সংস্কার কাজের জন্য প্রায় ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ময়মনসিংহ রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হাসান নিজেই পুরো বিষয়টি মনিটরিং করছেন।

সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, এ রেললাইনের পাশ দিয়েই একটি আরসিসি সড়ক নির্মাণ করেছে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন। এ সড়ক নির্মাণের শুরু থেকেই বিরোধীতা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। মূলত এ সড়কের কারণেই পাশের রেললাইনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

পানি জমে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের ময়লা-আবর্জনা এখানে সেখানে ফেলার কারণে রেললাইনটি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রায় দুই কিলোমিটার রেললাইনেই বালুর সঙ্গে ইটের সুড়কি ফেলা হয়েছে। এর মাধ্যমে রেললাইনটি উঁচু করা হচ্ছে। তবে ব্যবহৃত ইটের সুড়কি অত্যন্ত নিম্নমানের বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ জেলার সাধারণ সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, ‘রেললাইনে ইটের সুড়কি ব্যবহার এবারই প্রথম দেখেছি। আবার ব্যবহৃত সুড়কিও অনেক নিম্নমানের। এ সংস্কার কাজে অনিয়মই নিয়ম হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।’

তবে ময়মনসিংহ রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হাসান দাবি করেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে পানি জমে দুই কিলোমিটার রেললাইনের স্লিপার একেবারেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া আমাদের নিয়মের মধ্যেই আছে কোন স্থান দেবে গেলে ভিত্তি উঁচু করার জন্য বালু ও সুড়কি ব্যবহার করা হয়।

পাথর বসানো হবে পরবর্তী ধাপে। তবে এজন্য বরাদ্দ প্রয়োজন। আমাদের অ্যাগ্রিমেন্ট মোতাবেকই এ কাজ চলছে। এখানে কোন অনিয়ম হয়নি। কিংবা পাথরের পরিবর্তে ইটের সুড়কি বসানো হয়নি। প্রয়োজন মোতাবেকই নিয়মের মধ্যে থেকে ইটের সুড়কি ব্যবহার করা হচ্ছে।’

নিম্নমানের ইটের সুড়কি ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কেবল ইটের সুড়কি ও বালু সরবরাহ করছেন। আমরা নিজেদের লোক দিয়েই সেগুলো রেললাইনে বসাচ্ছি। এখানে নিম্নমানের কোন ইটের সুড়কি ব্যবহার করা হয়নি।’

কালের আলো/এসবি/এমএ