যেভাবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চান আইজিপি
প্রকাশিতঃ 8:50 pm | July 31, 2018
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:
মহান মুুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে তিনি পথ চলেন। একটি দক্ষ, আধুনিক, যুগোপযোগী ও চৌকস পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছেন। মুক্তিযুদ্ধের সুমহান আদর্শকে লালন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনা অনুযায়ী সরকার ও সংবিধানের প্রতি অবিচল আস্থা রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।
দেশপ্রেমিক পুলিশ বাহিনীর এই প্রধান বলেছেন, আমরা সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই যার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখিয়েছেন এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেখাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা, রাষ্ট্র এবং আত্নশক্তি দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হলে মাদক এবং জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের মতো দু’টি চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিটি সচেতন নাগরিককে নিয়ে মাদকমুক্ত বাংলাদেশের জন্য পুলিশ প্রশাসন যে যুদ্ধ করছে আশা করি আমরা সফল হবো।
একটি উদাহরণ টেনে আইজিপি বলেন, পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানে যেসব বাঙালি অফিসার ছিলেন তাদের কোন অবস্থান ছিল না। বাংলাদেশ না হলে আমরা আজকের অবস্থানে আসতে পারতাম না।
মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) সকালে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ বীর পুলিশ সদস্যদের স্মরণে নির্মিত চেতনায় একাত্তুর’এ শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ শেষে এই কথা বলেন আইজিপি।
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে দেশপ্রেম ও জনসেবার মহান আদর্শকে সমুন্নত রেখে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য পেশাদারিত্ব এবং নিরলসভাবে নিজের অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে বলেও মনে করেন বাহিনীর এই কর্ণধার। চলতি বছরের শুরুতেই পুলিশ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে তিনি দৃঢ়কন্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ এক এবং অভিন্ন। তিনি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা।’ আইজিপি বিশ্বাস করেন, বঙ্গবন্ধু নিজের নেতৃত্বের কারিশ্মায় সময়কে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
এই বিষয়ে আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে পুলিশ বাহিনী মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বপ্রথম ঢাকার রাজারবাগে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তারা দেশকে স্বাধীন করায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। পুলিশ বাহিনীর বীরসদস্যগণ দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
পুলিশ বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নে সরকার প্রধান শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক।
তিনি বলেন, পুলিশকে আরো বেশি জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। পুলিশি সেবাকে দেশের মানুষের জন্য আরও সহজলভ্য করতে সরকার বাহিনীর উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে একাত্তুরের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়ে আইজিপি ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে প্রত্যেককে কাজ করতে হবে।
মাদক নির্মুলে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, আমরা সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই যেখানে জঙ্গিবাদ, মাদক, ইভটিজিং ও সন্ত্রাস থাকবে না। বর্তমানে আমাদের জন্য মাদক নির্মুলের বিষয়টি হলো বড় চ্যালেঞ্জ। মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে জনগণকেও সম্পৃক্ত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা সারা বাংলাদেশের মানুষকে মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সম্পৃক্ত করতে পেরেছি। আজকে কুমিল্লায় আসার উদ্দেশ্য কিন্তু একটিই, তাহলো মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কুমিল্লাবাসীকে কিভাবে সমপৃক্ত করতে পারি। মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের যুদ্ধে আমরা তখনই জয় লাভ করতে পারবো, যখন আমরা সবাই এক সাথে এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারবো, যোগ করেন আইজিপি।
ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, আমরা সমাজকে সচেতন করতে চাই। সমাজের সর্বস্তরের যারা জনগণ আছেন আপনাদের সকলের সহযোগিতা যদি আমরা না পাই তাহলে কিন্তু খুব সহসায় মাদক এবং জঙ্গি ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠনে সম্ভব হবে না। সমাজ ও জনগণকে নিয়ে পুলিশ মাদক ও জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযান চালিয়ে আসছে, তা অব্যাহত থাকবে।
পরে আইজিপি পুলিশ লাইন্সে জেলা পুলিশের নবনির্মিত অস্ত্রাগার, ভূশ্চি বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, মেঘনা থানা কম্পাউন্ডের একটি ভবনের ফলক উন্মোচন করেন। দুপুরে তিনি নগরীর টাউন হলের বীর চন্দ্র নগর মিলনায়তনে দ্বিতীয় আন্ত:জেলা মাদক, ইভটিজিং ও জঙ্গিবাদ বিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
বিকেলে জেলার লালমাই উপজেলায় শহীদ কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক প্রফুল্ল কুমার দে ফায়ারিং রেঞ্জ কুমিল্লার উদ্বোধন করেন।
কালের আলো/এসআর/এএ
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে কালের আলো’র ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: KalerAlo/Facebook