দুর্যোগে-দুর্বিপাকে ‘ভরসা’!
প্রকাশিতঃ 8:33 am | September 07, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
শীত, বন্যা বা হালের অদৃশ্য ভয়ানক জীবাণু করোনা সংক্রমণ। বিপন্নতার সময়ে নগরীর অসহায় বাসিন্দাদের কাছে তিনি এক ‘পরীক্ষিত বন্ধু’।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে নিয়ে প্রতিটি দুর্যোগে-দুর্বিপাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করেছেন।
নগরবাসীর সঙ্কটময় মুহুর্তে তাদের কল্যাণেই নিজেকে সমর্পণ করেছেন। রাজনীতির চলতি ধারার যেন সম্পূর্ণ বিপরীত এক চরিত্র!
বিপদে সাহস খোঁজার প্রেরণাময় ও ভরসা রাখার মতোন এক জনপ্রতিনিধি মো.ইকরামুল হক টিটু। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে থেকে মানব কল্যাণের মিশনই তাকে স্থানীয় নাগরিকদের কাছে গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বস্ত করে তুলেছে। রাজনীতিতে সততা ও আদর্শবাদের এক প্রতিকৃতি তিনি।
দীর্ঘ সাড়ে ৯ বছর সামলেছেন বিলুপ্ত ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব। এক সময়কার অবহেলিত, বঞ্চিত, অনুন্নত ও বৈষম্যের শিকার নগরীকে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখিয়েছেন।
ব্রহ্মপুত্র নদের উপকন্ঠের নগরীকে আধুনিক চিন্তা-চেতনার মেলবন্ধন ঘটিয়ে দৃষ্টিনন্দন ও পরিকল্পিত উন্নয়নের মধ্যে দিয়ে ‘সুন্দর শহর’ এর আলোকে গড়ে তুলেছেন।
পরিচ্ছন্ন সবুজ নগরী গড়তে গুরুত্বারোপ করে অপরিচ্ছন্ন নগরীর বদনাম থেকে শহরটিকে বের করে এনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দেশের মডেল নগরে পরিণত করেছেন।
ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করেছেন। সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ নগরীকে শেকলমুক্ত করেছেন। নগরীর বাসিন্দাদের কল্যাণ আর সেবার ভিশন নিয়েই কাজ করেছেন।

নগর সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন, বহুমুখী কাজের মাধ্যমে নগরীকে এগিয়ে নেওয়া, ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ, প্রশস্ত ফুটপাত থেকে শুরু করে সর্বত্রই আধুনিকতার ছোঁয়া নিশ্চিত করেই নগরবাসীর হৃদয়ে ঠাঁই করে নিয়েছেন।
দলীয় নেতা-কর্মীরা তো বটেই স্থানীয় নাগরিকরাও মেয়র টিটুর উৎসাহ, উদ্দীপনায় বিমুগ্ধ, আশ্বস্ত এবং সম্মোহিত।
হালের করোনাকালে চরম বিপর্যয়ের দিনেও যখন অনেক রাজনীতিক বা জনপ্রতিনিধির হদিস নেই সেই সময়েও তিনি নিজের ‘জীবনবাজি’ রেখেছেন। দিন-রাত কাজ করেছেন জনসচেনতনতায়।
মেয়র ইকরামুল হক টিটুও মনে করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করেছেন। ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল ছিল তাঁর জীবন।
ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ পুরুষের সুযোগ্য কন্যা, দেশরত্ন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ষোল কোটি মানুষের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন।
তাঁর হৃদয়েও মানুষের জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা। সাধারণ মানুষের অধিকার সুরক্ষিত করেই বিশ্ব মানচিত্রে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে তিনি বাংলাদেশকে উপস্থাপন করেছেন।
‘মানুষের কল্যাণে রাজনীতি’ প্রধানমন্ত্রীর এ থিম বাস্তবায়নেই মানব সেবার ব্রত নিয়েই নিরন্তর ছুটছেন মেয়র টিটু।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনা মহাপ্রলয়ের শুরু থেকেই জীবন ও স্বজনের মায়া কাটিয়ে ৮ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত মাঠে সক্রিয় রয়েছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ১ হাজার ৩’শ মেট্টিক টন চাল ও ৪৫ লাখ টাকার নগদ বরাদ্দে চাল-ডাল, আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী কিনে অভাবী ও কর্মহীন মানুষের মাঝে তিনি বিতরণ করেছেন।
মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া আরও ৮ লাখ টাকায় কিনেছেন শিশু খাদ্য। করপোরেশনের ৪৪ টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মাধ্যমে এসব কর্মকান্ড সম্পন্ন করেন।
আবার, নিজের কষ্টে অর্জিত অর্থ ব্যয় করে ‘ত্রাণ’ নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশেও দাঁড়িয়েছেন সাধ্যমতোই। নিজের উদ্যোগে বিতরণ করেছেন প্রায় ৭০ হাজার ব্যাগ খাদ্য।
আওয়ামী লীগ, অন্যান্য অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনকে এ কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করেন।
এমন মানবিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হতে পেরে দলীয় নেতা-কর্মীরাও উজ্জীবিত হয়েছেন। এর মাধ্যমে দলীয় নেতা-কর্মীদের সম্মানিত করার পাশাপাশি দলের সাংগঠনিক ভিত্তিও সুসংহত করেছেন।

একজন জনপ্রতিনিধির স্বচ্ছ ও পরিপাটি এমন কর্মকান্ডে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে পারে, কেবল করোনাকালেই হয়তো নিজেকে এমনভাবে মেলে ধরেছেন মেয়র টিটু? কিন্তু বছরের বাকী এগারো মাসও তার ‘রোজনামচা’ এমনই।
স্থানীয় একজন বলছিলেন, প্রতিবারই শীতে দুস্থ ও অসহায় মানুষের প্রতি বিশেষ সহানুভূতি নিয়ে পাশে থাকার নজির রয়েছে নগর পিতা ইকরামুল হক টিটুর। পর্যাপ্ত পরিমাণে শীতবস্ত্র সহায়তার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তাও দিয়েছেন।
নি:স্বার্থভাবে বিপদগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য ও সেবার মাধ্যমে মহৎ ও পুণ্যময় কাজের মাধ্যমে একইভাবে বন্যার্তদের সহায়তার মাধ্যমেও উষ্ণতার পরশ বুলিয়েছেন।
ময়মনসিংহ নগরীর গাঙ্গিনারপাড় হকার্স মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশেও শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিটি দুর্যোগে শ্রমজীবী, অভাবী ও অসহায় জনগোষ্ঠী নিজেদের নাগালেই পেয়েছেন সাহসী ও কর্মবীর এ মেয়রকে। ফলে গোটা ময়মনসিংহ জেলায় ‘লাপাত্তা’ ও ‘অলস’ জনপ্রতিনিধিদের মিছিলে ব্যতিক্রমী এক উদাহরণ হয়ে উঠেছেন তিনি।

বহুমুখী বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এই ‘নগর সেবক’ ব্রহ্মপুত্র উপকন্ঠের এই নগরীর বাসিন্দাদের আশা-আকাঙ্খা, অধিকার ও দাবির পক্ষেও বরাবরই নির্ভীক-সোচ্চায় ভূমিকায় থেকেছেন।
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এ দেশের মাটি বর্ষায় যেন কোমল চৈত্রের রোদে তেমনি কঠিন হয়।’ ময়মনসিংহবাসী দেখেছে মেয়র টিটু’র হৃদয় তাদের জন্য বর্ষার মাটির মতো কোমল আবার জঙ্গী বা আগুন সন্ত্রাসীদের জন্য চৈত্রের মাটির মতো কঠিন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মেয়র টিটু’র আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা তাকে ব্যক্তি ও দলের ঊর্ধ্বে দিয়েছে বিশেষ স্থান। তার সঙ্গে দেখা করতে কোনরকম বাধা পেতে হয় না। দুর্যোগ-দুর্বিপাক বা কোন সমস্যা হলে মুহূর্তেই ছুটে যান।
‘করোনাকাল ছাড়া অন্য সব সময়ে তার বাসার ড্রয়িং রুম থেকে পৌরসভার কক্ষ পর্যন্ত থাকে সাধারণ মানুষের অবাধ যাতায়াত।
সাধারণের সঙ্গে মিশে যাওয়ার অসাধারণ ক্ষমতা তাকে এত জনপ্রিয় করে তুলেছে’, বলছিলেন ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলন ও উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবুল কালাম।

কালের আলো/এসআর/এমএ