ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বললেন, ‘এটা পড়ে আয়’ : অ্যাটর্নি জেনারেল
প্রকাশিতঃ 5:48 pm | October 24, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
জীবনাবসান হয়েছে প্রবীণ আইনজীবি ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের। সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে তিনি ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। সেই সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আইনজীবী হিসেবে আলোচিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ওয়ান ইলেভেন’র দুঃসময়ে দুই নেত্রীর আইনজীবী ছিলেন রফিক উল হক
সমাজ ও মানবতার সেবায় তার হাত ছিল সবসময়ই উদারহস্ত। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়। ফলে স্বভাবতই তাঁর মৃত্যুতে দল-মত নির্বিশেষ শোকে মুহ্যমান দেশের আপামর জনসাধারণ।
বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিনও ব্যারিস্টার রফিক উল-হকের মৃত্যুতে দু:খ ভারাক্রান্ত। তিনি মনে করেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ছিলেন বর্ণাঢ্য চরিত্রের একজন গুণী মানুষ। তাঁর এ প্রস্থান দেশের আইন অঙ্গণে অপূরণীয় এক ক্ষতি।
আরও পড়ুন: বনানীতে চিরনিদ্রায় শায়িত ব্যারিস্টার রফিক উল হক
দেশের আইন অঙ্গণে ‘জীবন্ত আইন ডিকশনারি’ হিসেবে খ্যাত ছিলেন প্রয়াত ব্যারিস্টার রফিক উল-হক। তাঁর সঙ্গে চমৎকার হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিনের। রয়েছে অনেক সুখ স্মৃতিও।
সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমি যখন অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কাজ করতাম তখন তিনি দাপুটে আইনজীবী হিসেবে কোর্টে প্র্যাকটিস করতেন। একদিন আমি মামলা করতে গিয়েছি কিন্তু সেই মামলার একটা বিষয়ে রেফারেন্স দিতে পারিনি।
আরও পড়ুন: একজন ‘জীবন্ত আইন ডিকশনারী’ ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক উল হক
তখন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক আমাকে তার গাড়িতে নিয়ে গেলেন। তিনি গাড়িতেই আইনের অনেক বই-খাতা রাখতেন। সেখান থেকে একটা খাতা রেব করে আমাকে বললেন, ‘এটা লেখ’ ‘এটা পড়ে আয়’। তার আচরণ ছিল একজন অভিভাবকের মত। তিনি শেখানোর চেষ্টা করতেন।’
‘ব্যারিস্টার রফিক-উল হক আইনজীবীদের ভুল হলে শুধরে দিতেন’ মন্তব্য করে আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন আরও বলেন, তিনি (ব্যারিস্টার রফিক উল-হক) চাইতেন বাংলাদেশে যারা আইন পেশায় যুক্ত, তারা যেন লেখাপড়া করেন, আইনের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা রাখেন।
আরও পড়ুন: তাপসের ‘ব্যারিস্টার’ হবার পেছনেও ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক উল হক
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এই মানুষটি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তিনি অনেক পড়াশোনা করতেন। কখনও কোনো আইনজীবী যদি কোনো বিষয় না বুঝতেন তাহলে তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে বুঝিয়ে দিতেন’ যোগ করেন তিনি।
ব্যারিস্টার রফিক উল-হকের মানবিক গুণের কথা জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ব্যারিস্টার রফিক-উল হক আইনজীবীদের অসুস্থতার কথা ভাবতেন। কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেন। একবার অসুস্থ এক আইনজীবীকে তার কাছে নিয়ে গেলাম, তিনি তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে বলে দিলেন ওই আইনজীবীকে ভালোভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে।
একই সঙ্গে তিনি অসম্ভব রকমের একজন নিয়মানুবর্তি মানুষ ছিলেন। কোনো মামলা করতে আসলে সেই বিষয়ে আদ্যোপান্ত পড়ে সঠিক সময়ে আসতেন। সবকিছুতেই তিনি সুশৃঙ্খল ছিলেন। আইন পেশার বাইরে তিনি একজন সমাজিক ও মানবিক মানুষ ছিলেন। সমাজ ও মানুষের কল্যাণে সমবসময় কাজ করেছেন’ বলছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন।
কালের আলো/এসআর/আরআই