ক্যাপ্টেন আবিদের ওপর দায় চাপাতে চায় নেপাল

প্রকাশিতঃ 7:35 pm | August 27, 2018

কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিএসএস-২১১ দুর্ঘটনার ঘটনায় নেপাল সরকারের তদন্ত কমিটির বরাত দিয়ে ক্যাপ্টেন আবিদের উপর দায় চাপিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে নেপালি গণমাধ্যম দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট।

সরকারি ভাবে তদন্তের কোন বিবৃতি না জানালেও তাদের দাবি তদন্তের একটি কপি হাতে পেয়েছে তারা। সেই সূত্র ধরেই সংবাদ মাধ্যমটি বলছে, গত মার্চে বিধ্বস্ত ওই বিমানের পাইলট আবিদ সুলতান ত্রিভুবনে বিমান অবতরণের ব্যাপারে বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ‘অসত্য’ তথ্য দিয়েছিলেন।

কাঠমান্ডু পোস্টের মতে, ঢাকা থেকে যাত্রা করার পর থেকেই অনবরত সিগারেট ফুঁকছিলেন পাইলট। তারা উল্লেখ্য করেছে, ‘এই এক ঘণ্টার পথে ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান ভয়াবহ ব্যক্তিগত মানসিক চাপ ও উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন এবং ধারাবাহিকভাবে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন; যে কারণে ফ্লাইট বিএস২১১ বিধ্বস্ত হয়।’

দ্যা কাঠমান্ডুর মতে, প্রতিবেদনে এসেছে, বিমান পরিচালনার পুরো সময়জুড়ে আবিদ সুলতান অস্বাভাবিক আচরণ করেছিলেন, যে কারণে দ্রুত লাল পতাকা উত্তোলন করা উচিত ছিল।

বিমানটি অবতরণের ছয় মিনিট আগে আবিদ সুলতান নিশ্চিত করেছিলেন যে, বিমানের অবতরণ গিয়ার নিচে নেমে গেছে এবং লক হয়েছে। বিমানের ককপিটের ইলেকট্রিক নির্দেশক লাইটের উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘পাইলট বলেছিলেন, গিয়ার নিচে নেমেছে এবং তিনটি সবুজ বাতি জ্বলেছে।’

এসময় বিমানের কো-পাইলট পৃথুলা রশিদ বিমান অবতরণের জন্য চূড়ান্ত পরীক্ষা করেন, তখন তিনি দেখতে পান ল্যান্ডিং গিয়ার নিচে নামেনি। এর কয়েক মিনিট পরে দ্বিতীয় অবতরণ চেষ্টার সময় ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুবাহী বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়লে আগুন ধরে যায়।

তদন্তকারীদের বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘ককপিট ভয়েস রেকর্ডারের কথোপকথন বিশ্লেষণের সময় এটা পরিষ্কার হয়েছে যে, প্রচণ্ড মানসিক চাপ সামলে নেয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন আবিদ। এছাড়া কম ঘুমের কারণে তাকে ক্লান্ত এবং অবশাদগ্রস্ত মনে হয়েছে। ককপিটে থাকাকালীন বেশ কয়েকবার কান্না করেছিলেন তিনি।’

তবে কাঠমান্ডু পোস্টের এ তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে একমত নন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। তারা বলেন, ‘বিএস-২১১ ফ্লাইটের উড়োজাহাজে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না। পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন।’

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার কামরুল ইসলাম বলেন, ‘নেপাল সরকারের তদন্ত প্রতিবেদন শেষ হওয়ার আগেই দেশটির গণমাধ্যমে বিমান বিধ্বস্তের জন্য পাইলটকে দায়ী করে যে খবর প্রকাশ করা হয়েছে তা ‘ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট’। এর মাধ্যমে তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত হতে পারে’

কালের আলো/বি/এমএইচএ