স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কেন ডিজি খুরশীদেই ‘আস্থা’ প্রধানমন্ত্রীর?

প্রকাশিতঃ 9:10 am | December 25, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

কোন লবিং করেননি! সম্ভবত তাকে খুঁজে বের করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। অনেক গণমাধ্যমে অন্য একজনের ডিজি পদে নিয়োগের খবর বেরিয়েছিল। সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগেই ছড়িয়ে পড়েছিল সেই খবর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিয়োগ পেয়ে চমকই সৃষ্টি করেন অধ্যাপক ডা: আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।

কেউ কেউ অবাকও হয়েছিলেন। তবে কী কঠিন সময়ে এতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বড় রকমের ঝুঁকিই নিলেন প্রধানমন্ত্রী? অনেক প্রশ্ন আর নিজেদের মতোন উত্তরের ফুলঝুড়ি বিলিয়ে দিতেই ব্যস্তসমস্ত তারাই।

কিন্তু পাঁচ মাসের মাথায় অধিদপ্তরটির শক্ত হাল ধরার মাধ্যমে নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের এ সার্জারী অধ্যাপক। পরিপূর্ণ সফলতার হিসাব নিকাশের সময় না এলেও নিজের ডিজি পদটিকে জনস্বার্থে নিবেদন করতেই নিজের সর্বোচ্চ আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছেন। দিন-রাতেই হিসাব না করেই ঘন্টার পর ঘন্টা অফিসে সময় দিয়েছেন। সুলুক সন্ধান করেছেন অধিদপ্তরের মুখ থুবড়ে পড়ার অপার রহস্য।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ ছেড়েছেন আবার ছক কষেই।অফিসের চার দেয়ালে নিজেকে বন্দি না করে ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায়। ‘মিডিয়া মার্চ’ না করে তৃণমূলে স্বাস্থ্য সেবার সমস্যা সনাক্ত করেছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পর কমপ্লেক্সে ঢু মেরেছেন। সংশ্লিষ্টদের কথা শোনেছেন, মন দিয়েই।

স্বাস্থ্য অঙ্গণে অনেকটাই নিয়ম হতে যাওয়া অনিয়মকে হিমাগারে পাঠানোর সব ব্যবস্থাই পাকাপোক্ত করেছেন ডিজি খুরশীদ। ক্রিকেট মাঠের ২২ গজের দাপুটে ওপেনারের মতোই এই পরিমন্ডলে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন ‘ডিপেন্ডেবল’ হিসেবে।

শুধু কী তাই? ভৎসনার চিরায়ত প্রথায় না হেঁটে দায়িত্বশীলদের ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন। সংশোধনের সময় দিয়েছেন। মোবাইল ফোনে হলেও নিজেই ফলোআপ করেছেন। কাজ না হলে সরাসরি অ্যাকশনে গেছেন। দায়িত্বশীল কারও বাড়াবাড়িতে নিজেই ক্ষমা চেয়েছেন, ঔদার্য্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।পরিবর্তনের একটি ধারার সূত্রপাত করতেই উদয়াস্ত মনোনিবেশ করেছেন।

যারা তার নিয়োগকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন এখন তারাও শুকনো মুখেই তার সক্ষমতার কথা স্বীকার করছেন। বিচক্ষণ সিদ্ধান্তে প্রাজ্ঞ প্রধানমন্ত্রী আবারও নিজেকে অনন্য উচ্চতায় মেলে ধরলেন। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যার সিদ্ধান্ত একদম ‘পারফ্যাক্ট’।

ঝানু ‘ডিসিশন মেকার’ প্রধানমন্ত্রী নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আবারও আস্থা রেখেছেন ডা: আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের ওপর।বৃহস্পতিবার(২৪ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে আগামী দুই বছরের জন্য তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. অলিউর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে তার অবসরোত্তর ছুটি ও সে সংক্রান্ত সুবিধা স্থগিত করার শর্তে আগামী ৩১ ডিসেম্বর অথবা যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী দুই বছর মেয়াদে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।’

কালের আলো/এসআর/এসএকে