সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে আল-জাজিরার ‘মিশন উইন্টার প্রোপাগান্ডা’

প্রকাশিতঃ 9:41 pm | February 02, 2021

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :

মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির আগেই চলমান মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাতের জন্য পুরোদমে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এজন্য স্বাধীনতা বিরোধী অশুভ চক্রটি হাজার কোটি টাকার ফান্ড নিয়ে মাঠে নেমেছে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বসে নতুন ষড়যন্ত্রের ছক কষে পুরো দায়িত্বই তুলে দেওয়া হয়েছে কাতারভিত্তিক জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতকারী কুখ্যাত টিভি চ্যানেল আল-জাজিরাকে।

আরও পড়ুন: কন্ঠ দিলেও দৃশ্যপটে ‘লাপাত্তা’ সেই কনক সারওয়ার?

ইতোমধ্যেই সরকারের পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উগ্রপন্থি মতাদর্শে বিশ্বাসী আল-জাজিরার ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স ম্যান’ শীর্ষক কথিত প্রামাণ্যচিত্রকে মিথ্যা, মানহানিকর ও বেপরোয়া অপপ্রচারকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) একই প্রতিবেদনকে কঠোর ভাষায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

দেশের সচেতন সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার হাতিয়ার হিসেবেই কল্পিত এ প্রতিবেদনটি বিএনপি-জামায়াত শিবিরের চেনা ‘প্রোপাগান্ডা স্কোয়াড’র এর নব সংস্করণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কেউ কেউ সরকার ও সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্যে মঞ্চস্থ নির্জলা মিথ্যাচারকে ‘মিশন উইন্টার প্রোপাগান্ডা’ হিসেবেও মত দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: আল-জাজিরার আবিস্কার ‘ধুরন্ধর’ সামির আসল পরিচয় জানলে চমকে উঠবেন

সূত্র মতে, আওয়ামী লীগ সরকার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুজব ও অপপ্রচার চালাতেই বিপুল বিনিয়োগে প্রস্তুতকৃত ১ ঘন্টা ২১ সেকেন্ডের প্রামাণ্যচিত্রটি আদতে অসত্য, বিভ্রান্তিতে ভরপুর ও মিথ্যাচারের উৎকৃষ্ট এক উদাহরণ।

এ প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে নতুন করে দৃশ্যপটে হাজির হয়েছেন বিএনপি’র তারেক জিয়ার বেতনভুক্ত, ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড.কামাল হোসেনের জামাতা, যুদ্ধাপরাধীদের আইনজীবী ডেভিড বার্গম্যান এবং ‘গুজব গুরু’ হিসেবে পরিচিত ভূইফোঁড় অনলাইন নিউজপোর্টাল নেত্র নিউজের সম্পাদক তাসনিম খলিল।

আরও পড়ুন: ‘গুজব’ উৎপাদনের ‘কারখানা’ আলজাজিরা!

তবে পুরো প্রামাণ্যচিত্রটির গ্রন্থনা ও পরিকল্পনায় রয়েছেন দুর্নীতির দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত দেশত্যাগী বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। নিজের অশুভ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মুসলিম এইড ও আল খাইর ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে আল-জাজিরাকে হাজার কোটি টাকার অর্থের যোগানের ব্যবস্থা করিয়ে দিয়েছেন তারেক নিজেই।

কোথাও নেই দুর্নীতির চিত্র
হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ধর্মীয় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মদদদাতা আল-জাজিরার তৈরিকৃত প্রতিবেদনটিতে কোথাও দুর্নীতির কোন চিত্র দেখানো হয়নি। অস্বাভাবিক লেনদেনের কোন ব্যাংকিং ডকুমেন্টও দেখানো হয়নি। কোন ব্যক্তি নেই, যিনি বলেছেন যে, হারিছ বা তার সংশ্লিষ্ট কাউকে ঘুষ দিয়েছেন।

প্রতিবেদনের শুরুতেই পরিচয় করে দেওয়া হারিছকে একজন সাইকো প্যাথ হিসেবে উল্লেখ করলেও একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির কথাতেই এতো দেশ ঘুরে এই প্রতিবেদন তৈরির অসৎ উদ্দেশ্যও এখন দেশের সাধারণ মানুষের কাছেই স্পষ্ট।

শুধু কী তাই? কে টাকা দিলো, কে টাকা পেলো এমন কিছুও দেখানো হয়নি প্রতিবেদনে। যদিও বলা হয়েছে, এমপি নির্বাচনের সময় নাকি কোটি টাকা মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দিয়েছে। কোন মনোনয়ন প্রত্যাশী টাকা দিলো, কাকে দিলো, এসবের কিছুরই খোঁজ মেলেনি।

কেবল কিছু কল্পিত কথা, কিছু ভাড়াটে লোকের মুখ দিয়ে বলানো হয়েছে নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। এছাড়া উল্লেখিত অভিযোগগুলো যে একেবারেই মনগড়া এবং প্রতিহিংসার গর্ভে জন্ম নেওয়া তা বায়বীয় এ প্রামাণ্যচিত্রেই সবার কাছে ধরা পড়েছে।

সরকার ও সেনাবাহিনীই স্বাধীনতা বিরোধীদের টার্গেট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি পুরো প্রতিবেদনটিতে মনগড়া গালগপ্প তৈরি করা হয়েছে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকে নিয়েও। ইতোপূর্বেও তাকে ঘিরে নানামুখী ষড়যন্ত্র করেছে কনক ও শহীদগং। কিন্তু কাল্পনিক ঘটনাপ্রবাহের কোন প্রমাণ মেলেনি।

তবে পুরনো বোতলে ‘নতুন মদ’ কায়দায় আবারও তারেক জিয়ার ভাড়াটে বাহিনীর মাধ্যমে তৈরিকৃত আলজাজিরার প্রতিবেদনটিতেও সেনাপ্রধানকেও টার্গেট করা হয়েছে। কোন রকম তথ্য উপাত্ত না থাকলেও, কথিত প্রামাণ্যচিত্রে ফিল্মী কায়দায় সুপার এডিটিং আছে, আছে ভয়েজ টেম্পারিং। বাংলাদেশ ছাড়াও সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হাঙ্গেরি এবং ফ্রান্সে এর শ্যুটিং হয়েছে।

সূত্র জানায়, দেশের ভেতরে ও বিদেশে বসে স্বাধীনতার পক্ষের প্রগতিশীল শক্তির পাশাপাশি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়িয়ে দেয়ার জন্য কাজে লাগানো হয়েছে স্বাধীনতা বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠীকে। এসবের মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল ও অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তাকে নষ্ট করতেও নানা কূটকৌশল করা হচ্ছে।

কালের আলো/এসআর/এমসি