কুবিতে ‘আপত্তিকর’ অবস্থায় ধরার অভিযোগে, শিক্ষার্থীকে পেটাল ছাত্রলীগ
প্রকাশিতঃ 8:45 am | September 04, 2018
বিশেষ প্রতিনিধি, কালের আলোঃ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের অভিযোগ ওই শিক্ষার্থী বান্ধবীর সাথে ‘আপত্তিকর’ ও ‘অশালীন’ অবস্থায় ফ্যাকাল্টির ছাদে ছিল ছাত্র।
রবিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইমরান খান ও তার বান্ধবী ফারজানা ইয়াসমিন ক্লাসের ভাইভার পড়াশোনা নিয়ে কথা বলতে আর্টস ফ্যাকাল্টির ছাদে যায়।
এই সময় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, এআইএস বিভাগের ৭ম ব্যাচের ক্যাসাইয় মং মারমা (বামী); ছাত্রলীগ কর্মী, সিএসই বিভাগের ৯ম ব্যাচের নিয়াজ মোহাম্মদ শান্ত ও শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক, গণিত বিভাগের ৯ম ব্যাচের রনি বসাক তাদের জিজ্ঞাসার জন্য আটক করে এবং ইমরানকে মেরে আহত করে।
মারধরে তার শার্ট ছিঁড়ে যায় এবং বাম কান ফেটে গিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। একপর্যায়ে ইমরান দৌড়ে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে গেলে সেখানেও আরেক দফা মারের শিকার হয় সে। সেখান থেকে বেঁচে গিয়ে কুমিল্লা মুক্তি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় ইমরান।
আহত ইমরান জানান, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আমি, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইরা বিনা দোষে, অন্যায়ভাবে জনসম্মুখে আমাকে মারছিল, আমাকে বাঁচানোর মত কেউ ছিল না। অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়া দুজন ছেলেমেয়ে কি ক্যাম্পাসে একসাথে নির্ভয়ে চলতে পারবে না?’
ইমরানের বান্ধবী ফারজানা ইয়াসমিন জানান, ‘আমরা ছাদে ছিলাম। এমন সময় ওরা তিন জন এসে ইমরানকে ডেকে নিয়ে, কিছু না বলে এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করে। কতটা বর্বর আর অসভ্য হলে এভাবে মারা যায় আমি জানি না। আমার লজ্জা লাগছে এই ভেবে যে আমি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী এবং তারাও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র নামধারী পশু।’
ফ্যাকাল্টির ছাদের চিলেকোটায় তাদের দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেই তারা হল (শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল) থেকে গিয়েছেন বলে জানান নিয়াজ মোহাম্মদ শান্ত। তিনি বলেন, ‘আমরা হল থেকে বাজে অবস্থায় দেখে তাদের জিজ্ঞাসা করার জন্য গিয়েছিলাম। তাদের গায়ে আমরা হাত দিইনি। ইমরান হয়তো রং জাতীয় কিছু লাগিয়ে তার কান রক্তাক্ত করেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কেউ যদি ‘অপ্রীতিকর’ কিছু করেও থাকে তার বিচার নিজেরা করবেন কি না বা গায়ে হাত দিবেন কি না এই প্রশ্নের জবাবে শান্ত জানান, ‘আমরা তার গায়ে হাত দিইনি। সে এটা বানিয়ে বলছে।’
ক্যাসাইয় মং মারমা (বামী) জানান, ‘আমরা তাদের ফ্যাকাল্টির ছাদে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছি। আর সেটা অনেকক্ষণ ধরে। যখন গিয়ে জিজ্ঞেস করেছি তখন সে আমাদের সাথে উঁচু গলায় কথা বলেছে। তাকে ধরতে গেলে সে দৌড় দেওয়ার সময় তার শার্ট ছিঁড়ে যায়। আমরা মারধর করিনি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন জানান, ‘বিষয়টা শুনেছি। তবে যে মারধরের শিকার হয়েছে। তার কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখবো।’
কালের আলো/এমএইচ