আরও বেশি বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী মোতায়েনে জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তাদের আহ্বান সেনাপ্রধানের

প্রকাশিতঃ 5:43 am | February 10, 2021

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলোঃ

যুক্তরাষ্ট্র সফরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.আজিজ আহমেদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তারা। গত দু’দিনে পৃথক পৃথক এসব গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ জাতিসংঘের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যেসব বিষয়ে সেনাপ্রধানের ফলপ্রসু আলোচনা

বৈঠকে বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আরও অধিক সংখ্যক বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আহ্বান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্কের জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ-পিয়েরে ল্যাক্রুয়া এবং অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারের সঙ্গে মঙ্গলবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বৈঠককালে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল প্রতিশ্রুতি ও অব্যাহত সমর্থন পূনর্ব্যক্ত করেন।

এছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম ও জাতিসংঘ সদরদপ্তরের শান্তিরক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিক সংখ্যক বাংলাদেশী কর্মকর্তাদের পদায়নের জন্যও তাদের প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।

বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীগণের পেশাগত জ্ঞান, নিয়মানুবর্তিতা, নিষ্ঠা ও সাহসিকতার ভূয়সী প্রশংসা করেন আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাক্রুয়া। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

এছাড়াও ভবিষ্যতে আরও বেশী বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী মোতায়েনের বিষয়েও তিনি প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সৈন্য ও পুলিশ প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে বাংলাদেশ শীর্ষে অবস্থান করছে।

এদিকে, অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারের সাথে সেনাবাহিনী প্রধানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় সোমবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে। বৈঠককালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পরিবহনে বাংলাদেশ বিমানকে তালিকাভূক্ত করার জন্য অতুল খারেকে ধন্যবাদ জানান সেনাপ্রধান। আগামী দিনেও যেন আমাদের ন্যাশনাল কেরিয়ার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কেই ব্যবহার করা হয় সেজন্য আহবান জানানো হয়।

অতুল খারেও শান্তিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়নসহ মানবাধিকার ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বশীল ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান। এছাড়া কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশ বিমান সফলতার সাথে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পরিবহণে ভূমিকা রাখায় বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ নৌ ও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর অংশগ্রহণ ও তাদের বকেয়া পাওনা সংক্রান্ত বিবিধ বিষয় নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।  

আরও জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মিলিটারি অ্যাডভাইজর লেফটেন্যান্ট জেনারেল কার্লোস হামবার্টো লয়টে এর সাথেও বৈঠক করেন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান।

একই দিনে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার সাথেও সেনাবাহিনী প্রধানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে স্থায়ী প্রতিনিধি সেনাপ্রধানকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

শান্তিরক্ষা কার্যক্রমসহ সার্বিকভাবে জাতিসংঘে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমাকে ধন্যবাদ জানান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

এসব বৈঠকে সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল জুবায়ের সালেহীন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: ছাদেকুজ্জামান।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আমন্ত্রণে সরকারি সফরে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান গত ৩০ জানুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

ইতোমধ্যেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ও মার্কিন সেনাপ্রধান জেমস সি.ম্যাক কনভেলসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে পৃথক পৃথক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সম্পন্ন করেছেন।

এসব বৈঠকেও দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সফর শেষে আগামী শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ড.আজিজ আহমেদের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

কালের আলো/এমএএএমকে