আইনের মাধ্যমেই দুর্নীতিকে নিশ্চিহ্ন করার মিশন নতুন দুদক চেয়ারম্যানের

প্রকাশিতঃ 7:34 pm | March 13, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন স্বপ্ন নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ। আইনের মাধ্যমেই দুর্নীতিকে নিশ্চিহ্ন করার মিশন নিয়েছেন। দুর্নীতিমুক্ত দেশ ও সমাজ গঠনে সবার প্রত্যাশার সঙ্গেই কন্ঠ মিলিয়েছেন। অঙ্গীকার করেছেন এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের।

চাকরি জীবনে স্বনাম খ্যাত অভিজ্ঞ এ সাবেক আমলা দুর্নীতিবিরোধী সব আইনের নিখুঁত ও নির্মোহ প্রয়োগ ঘটাতে চান। দুদকের অনুসন্ধান-তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে আনার চেষ্টার কথা বলেছেন। কঠিন চ্যালেঞ্জকে হাসিমুখে আলিঙ্গণ করা নতুন দুদক চেয়ারম্যান এক মিনিটও সময় অপচয় করতে চান না।

নিজের লক্ষ্যপূরণে গণমাধ্যমকর্মীদেরও সার্বিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন। গত তিন দিনে কমপক্ষে দু’বার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবার (১৩ মার্চ) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীতে মহান জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দুদকের কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘পুরোপুরি দুর্নীতি মুক্ত করা খুবই দুরূহ কাজ। তাই দুর্নীতি একটা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে কাজ করবো আমরা।’

মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ আরও বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিলো শোষণ মুক্ত, বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীতে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করবে দুদক।’

এর আগে দুদক চেয়ারম্যান বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহাপাঠ ও মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন। দুদক চেয়ারম্যান বঙ্গবন্ধু ভবনে রক্ষিত পরিদর্শন বইতে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন।

দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ নিজের দীর্ঘ চাকরি জীবনে সুনাম ও দক্ষতার সঙ্গেই নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে তিনি চাকরি থেকে অবসরে যান। এরপর ২০১৯ সালের জুলাই মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত উন্নয়ন সংস্থা পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউণ্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান।

কুমিল্লার এই বাসিন্দাকে সদ্য বিদায়ী দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।

গত বুধবার (১০ মার্চ) দুদক কার্যালয়ে নিজের প্রথম কর্মদিবস অতিবাহিত করার পর তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, দেশ আমরা সবাই চাই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা সবাই একমত। কিন্তু তার পরও পৃথিবীর সব দেশে কম-বেশি দুর্নীতির প্রকোপ আছে।

আমাদের লক্ষ্য হবে দুর্নীতিমুক্ত দেশ ও সমাজ বিনির্মাণ। দুর্নীতি দমনে সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। বাংলাদেশে বিদ্যমান প্রতিটি আইনই দুর্নীতিবিরোধী। আমরা চেষ্টা করব দুর্নীতিবিরোধী এসব আইনের নিখুঁত ও নির্মোহ প্রয়োগ করতে। জনগণের আকাঙ্খা অনুসারে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে সবার সহযোগিতা নিয়ে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করতে চাই। এক্ষেত্রে কৃষক থেকে শুরু করে গণমাধ্যমসহ সবার সার্বিক সহযোগিতা আমরা প্রত্যাশা করি।’

আইনের মাধ্যমে দুর্নীতিকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টার কথা জানিয়ে সেদিন দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘দুর্নীতি দমনের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন আছে আমাদের, যা দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশে যতগুলো আইন আছে, প্রতিটি আইনে দুর্নীতি যাতে না হয় সে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত আছে। আমার প্রত্যাশা থাকবে সবগুলো আইনের মাধ্যমে দুর্নীতি যাতে কম হয় বা নিশ্চিহ্ন করা যায় সেই চেষ্টা করা।’

কালের আলো/এসআর/এমএ