বিজিএমইএ’র ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পরিচালক হলেন মা-ছেলে
প্রকাশিতঃ 2:54 pm | April 06, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
দেশের তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনে বর্তমান সভাপতি রুবানা হক ও তাঁর ছেলে নাভিদুল হক বিজয়ী হয়েছেন। ফলে সংগঠনের পরবর্তী পর্ষদে পরিচালক পদে একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন মা-ছেলে। সংগঠনটির ইতিহাসে এমন ঘটনা এই প্রথম ঘটছে। দেশের ব্যবসায়িক সংগঠনের পরিচালনা পর্ষদেও এমন ঘটনা বিরল।
বিজিএমইএ’র ২০২১-২৩ মেয়াদের কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে রোববার (৪ এপ্রিল)। দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঘোষণা হয় ফল। নির্বাচনের ফলে জানা গেছে, রুবানা ও তার ছেলে নাভিদুল দু’জনেই পরিচালক পদে বিজয়ী হয়েছেন। তাদের মধ্যে রুবানা হক চলতি মেয়াদের কমিটিতে বিজিএমইএ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ড. রুবানা হক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্ত্রী। নাভিদুল হক তাদের ছেলে। নাভিদুল এবারই প্রথম বিজিএমইএ পরিচালক হয়েছেন। রুবানা হক ২০১৯ সালের এপ্রিলে বিজিএমইএর সভাপতির দায়িত্ব নেন। তিনিই এই সংগঠনের প্রথম নারী সভাপতি। রুবানা হকের স্বামী আনিসুল হক ২০০৪ সালের মার্চ থেকে ২০০৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বিজিএমইএর সভাপতি ছিলেন। পরে তিনি দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন।
বিজিএমইএ’র এবারের নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম— এই দুইটি প্যানেল অংশ নেয়। নির্বাচনে পরিচালকের ৩৫টি পদের মধ্যে ২৪টিতে বিজয়ী হয়েছে ফারুক হাসানের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদ। ফলে বিজিএমইএ’র পরবর্তী সভাপতি হচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে এ বি এম সামছুদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ফোরাম ১১টি পরিচালক পদে বিজয়ী হয়েছে। বর্তমান সভাপতি রুবানা হক এই ফোরামের অন্যতম নেতা। মা ও ছেলে এবার এই ফোরাম থেকে নির্বাচন করেই জয় পেয়েছেন। পরবর্তী বোর্ডে তারা একসঙ্গে পরিচালক পদে থেকে নেতৃত্ব দেবেন।
প্রথমবারের মতো বিজিএমইএর পর্ষদে মা-ছেলে দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রুবানা হক বলেন, ‘মানুষ হিসেবে আমাদের সন্তান আমাদের চাইতে অনেক ভালো। মা হিসেবে আমি আশা করি, আমার ছেলে তাঁর শিক্ষা, নিষ্ঠা আর সততা দিয়ে বিজিএমইএর পর্ষদে কাজ করবে।’
জানতে চাইলে বিজিএমইএর নবনির্বাচিত পরিচালক নাভিদুল হক বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বাবা-মার কারণেই আমি আজকের অবস্থানে আসতে পেরেছি। এটিও সত্য যে আমি কিছু কাজ করেছি। আমাকে আমার কাছে আমার যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়েছে। সংগঠনের পরিচালক পদে গেলে পোশাকশিল্পের জন্য কিছু করতে পারব, সেটি নিশ্চিত হওয়ার পরই কিন্তু মা আমার নাম প্রস্তাব করেছেন।’ পর্ষদে মায়ের সঙ্গে কাজ করা চ্যালেঞ্জিং হবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সব ক্ষেত্রেই আমার বাবা-মার কাজ দিয়েই আমাকে সবাই বিচার করে। এটি আমার প্রতিদিনকার চ্যালেঞ্জ। কোনো দিনই আমি তাঁদের কাছাকাছি যেতে পারব না। তবে তাঁদের সুনাম নষ্ট হবে এমন কোনো কাজ আমি কখনোই করব না।’
এবারের নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০৪ ভোট পেয়েছেন সম্মিলিত পরিষদের ফারুক হাসান। ১ হাজার ১৫৭ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন রুবানা হক। তবে তার ফোরামের প্যানেল লিডার এ বি এম সামছুদ্দিন পরাজিত হয়েছেন। রুবানার ছেলে নাভিদুল ৯৪৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এবারের নির্বাচনে প্রায় ১০ ঘণ্টার ভোটে ২ হাজার ৩১৪ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১ হাজার ৯৯৬ জন, যা সংগঠনটির ঢাকা ও চট্টগ্রামের মোট ভোটারের ৮৬ শতাংশ।
কালের আলো/ডিএসকে/এমএইচএ