হ্যাট্টিক জয়ের অপেক্ষায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী!

প্রকাশিতঃ 12:02 pm | January 13, 2018

অ্যাক্টিং এডিটর | কালের আলো:

সাধারণত রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সরকারের অর্জন ও উজ্জ্বল ভাবমূর্তির পেছনে এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর থাকে প্রভাবকের ভূমিকা। অতীতে নানা কথন ও মন্তব্যের ফুলঝুরিতে বিতর্কিত হয়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা। ওইসব মন্ত্রীরা বেঁফাস কথা বলে সরকারকে বিপাকে ফেলেছেন। ঝড় তুলেছেন সমালোচনার।

কিন্তু এক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যতিক্রম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। পুরনোদের সেই পথে না হেঁটে দিন-রাত নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে ক্লান্তিহীন পরিশ্রম করে অন্যরকম এক ইমেজ তৈরি করেছেন একাত্তুরের রণাঙ্গণের এ লড়াকু সৈনিক। ব্যক্তিত্ব, মেধা আর প্রজ্ঞায় তিনি হয়ে উঠেছেন অনন্য সাধারণ।

অতিকথন যেমন তাঁর ধাঁচে নেই তেমনি একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবেও তাঁর ব্যবহার মুগ্ধ করে সবাইকে। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গেও রয়েছে বর্ষীয়াণ এ নেতার নিবিড় যোগাযোগ। নিজের নির্বাচনী এলাকাতেও ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন তিনি।

আর এসব কারণেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় সামলে সমানতালেই শিল্পাঞ্চল তেজগাঁও-শেরেবাংলা নগর ও রমনার একাংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-১২ আসনের ভোটারদের আস্থা অর্জন ও হৃদয় জয় করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের এ সহ-সভাপতি।

এগিয়ে আসা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এ আসনটিতে ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে তাঁর মনোনয়ন নিশ্চিত বলে মনে করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে টানা জয়লাভের পর এবার হ্যাট্টিক বিজয়ের পথেই হাঁটছেন মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

হেভিওয়েট এ প্রার্থীর জনপ্রিয়তার জোয়ারে বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থী খড়কুটোর মতোই ভেসে যাবেন বলে মনে করছেন ভোট বিশ্লেষকরা।

জানা যায়, ভোট রাজনীতিতে ঢাকা-১২ সংসদীয় আসনটি ‘ভিআইপি’ আসন হিসেবে পরিচিত। ৯১’র নির্বাচনে এ আসন থেকে নতুন মুখ হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর আব্দুল মান্নান। ৯৬’র নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে এখান থেকে নির্বাচিত হন ডা. এইচ বি এম ইকবাল।

২০০১ সালের নির্বাচনে মেজর মান্নান আবারো আসনটিতে জয়ী হলেও দল থেকে পদত্যাগের কারণে আসনটি শূন্য হয়ে যায়। পরে বিএনপি’র প্রার্থী মোসাদ্দেক আলী ফালু বিপুল কারচুপির প্রশ্নবিদ্ধ উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হন।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েই বিজয়ের হাসি হাসেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মন্ত্রিসভায় প্রথমে তাকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী করা হয়। ওই সময় তাঁর পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট হন বঙ্গবন্ধু কন্যা। পরে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে পদোন্নতি দিয়ে তাঁর হাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব তুলে দেয়া হয়।

স্বচ্ছ ইমেজের প্রার্থী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নৌকা প্রতীকে এ আসনটিতে নির্বাচনে লড়বেন বলে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিশ্বাস। তাদের কথায়- ‘পরপর দু’বারের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের দলের ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।

তার কোনো বদনাম নেই। এলাকার উন্নয়নে সব সময়ই তাঁর দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল। রাত-দিন ২৪ ঘন্টা দলীয় নেতা-কর্মী এবং স্থানীয় ভোটারদের জন্য তিনি নিবেদিত।’

ক্লান্তিহীন পরিশ্রমই আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে সফল মন্ত্রীর তালিকায় শীর্ষে নিয়ে গেছে। তাঁর বক্তব্যের প্রশংসা করেন সবাই। তিনি সেই পথে হাঁটেন যেখানে দেশের জনসাধারণকে তুষ্ট রেখে স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করা যায়।

মন্ত্রী হিসেবে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিও স্বাভাবিক রেখেছেন। সামাজিক অপরাধ নিয়ে মাঝে মাঝে সমস্যা তৈরি হলেও কঠোর হস্তে সবকিছুই মোকাবিলায় পারঙ্গম এ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এমন মত অনেকের।

দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, অতীতে এ আসনটিতে জয়ী এমপিরা বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত হয়েছিলেন। কিন্তু হ্যাট্টিক জয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে এখন পর্যন্ত কোন বিতর্ক স্পর্শ করেনি। দলীয় নেতা-কর্মীরা আপদে-বিপদে তাকে যেভাবে পাশে পায় তা অন্য মন্ত্রী ও এমপিদের জন্যও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে।

এ আসনের অন্তর্গত আ’লীগের একটি থানা ইউনিটের সভাপতি কালের আলোকে বলেন, আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের নেতৃত্বে ঢাকা-১২ আসনটি আ’লীগের শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে তাঁর অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কই ভোট রাজনীতিতে তাকে ফ্যাক্টর করে তুলেছে। প্রার্থী হিসেবে আ’লীগে তিনি বিকল্পহীন।

একই রকম মত পোষণ করে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান কালের আলোকে বলেন, ঢাকা-১২ আসনটিকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতে রূপ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি সজ্জন ব্যক্তি। দলীয় নেতা-কর্মীদের জন্য তাঁর দূয়ার সব সময় খোলা থাকে। তাঁর সময়ে এ নির্বাচনী এলাকায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন কর্মকান্ড সাধিত হয়েছে।

তিনি বলেন, এমপিত্ব এবং মন্ত্রীত্ব দু’টিকেই জনস্বার্থেই নিবেদন করেছেন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এসব কারণে এলাকার মানুষের কাছেও এ নেতার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে তিনি প্রার্থী হলে তাঁর বিজয় সুনিশ্চিত,’ যোগ করেন এ ছাত্রনেতা।