আমরা শুধু ভারতের টিকার ওপর নির্ভর করে বসে নেই : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রকাশিতঃ 3:29 pm | April 27, 2021
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
দেশে অক্সিজেনের কোনো ঘাটতি নেই। তবে হাসপাতালে ভর্তি রোগী যদি তিন গুণের বেশি বৃদ্ধি পায় তাহলে সমস্যা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেছেন, ভারত অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধ করলো তিন/চার দিন হলো। এর আগে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ টন লিকুইড অক্সিজেন আমদানি করা হতো ভারত থেকে। দেশে ১৫০ টন লিকুইড অক্সিজেন তৈরির সক্ষমতা আছে। আমাদের সর্বোচ্চ লাগলে প্রতিদিন ১৫০ টন লাগতে পারে। লিকুইড অক্সিজেন ছাড়াও ২৫০ থেকে ৩০০ টন অক্সিজেন গ্যাস তৈরি হচ্ছে। প্রয়োজনে আমরা এগুলোকে লিকুইডে কনভার্ট করবো। এছাড়া দেশের বিভিন্ন সেক্টরে আরও ৪০ টন অক্সিজেনের ব্যবহার হয়। আমরা প্রয়োজনে সেগুলো ব্যবহার করবো।
মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে মহাখালী বিসিপিএস প্রঙ্গণে ‘কোভিড-১৯: মহা দুর্যোগে বিশ্ব, দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় জনসচেতনতার গুরুত্ব ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে’ এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, যথাসময় ভারতের করোনা টিকার না পাওয়ায় টিকা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে আমরা ভারতের টিকার ওপর নির্ভর করে বসে নেই। ইতোমধ্যে রাশিয়া-চীনের সাথে টিকার জন্য যোগাযোগ করেছি। চীন পাঁচ লাখ টিকা উপহার হিসেবে দেবে বলে জানিয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের করোনা হাসপাতালগুলোতে সাত হাজার রোগীর চিকিৎসা দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। রোগী বেড়ে যদি ২১ হাজারে পৌঁছায় তাহলে চিকিৎসা কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হবে। এখন যেভাবে হিমশিম খাচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। অথচ ভারতে পর্যাপ্ত অক্সিজেনসহ চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত ছিল।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাশুল দিচ্ছি। প্রতিদিন গড়ে ১০০ জন করে মানুষ মারা যাচ্ছেন। আক্রান্তের হার গত বছরের তুলনায় অনেকগুন বেড়েছে। তাই এই সময়টিতে ভুল থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনার প্রথম ঢেউ আমরা যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে সামলে নিয়েছিলাম। বর্তমান সময়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণ সম্পর্কে আমরা সচেতন না হলে সামনে আবার করোনার তৃতীয় ঢেউ চলে এলে অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে দেখা দিতে পারে। এ কারণে করোনার হাত থেকে বাঁচতে চাইলে দেশের প্রতিটি মানুষকে করোনা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ফেব্রুয়ারিতে যখন করোনায় মৃত্যু ৩/৪ জনে নেমেছিল তখন মানুষ ভেবেছিল করোনা দেশ থেকে চলে গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষ অনিহা দেখাচ্ছিল। কক্সবাজার, সিলেটসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ২৫ থেকে ৩০ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ভ্রমণ করেছে। অধিক হারে বিয়ে অনুষ্ঠান, পিকনিকসহ নানা রকম সামাজিক অনুষ্ঠান করা হয়েছে। এসব কারণেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। দিনে প্রায় শত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। সময় মতো সরকার ‘লকডাউন’ ঘোষণা করায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ হয়তো সামনেই কমে যাবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম প্রমুখ।
কালের আলো/ডিএসকে/এমএম