মুনিয়াকে আত্মহননে প্ররোচিত করেছেন হুইপপুত্র শারুনও!
প্রকাশিতঃ 2:32 am | April 28, 2021
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
‘তুমি কিছু করলে বসুন্ধরা গ্রুপ শেষ হয়ে যাবে’- আত্মহননের পথ বেছে নেওয়া তরুণী মোসারাত জাহান মুনিয়াকে এমন একটি বার্তাই দিয়েছিলেন চট্টগ্রামের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন। মুনিয়া-শারুনের গোপন হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁসের মাধ্যমে মিলেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
অনেকেই বলাবলি করছেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে ফাঁসিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিতেই কী তাহলে মুনিয়াকে আত্মহননে প্ররোচিত করেছেন শারুন? শুধু তাই নয়, ফাঁস হওয়া চ্যাট থেকে স্পষ্ট অনেক আগে থেকেই মুনিয়ার সঙ্গে অনৈতিক অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন হুইপপুত্র।
আত্মহত্যা করা তরুণীটির সঙ্গে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে গ্রেফতার হওয়া বহিস্কৃত যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটেরও অবৈধ সম্পর্ক ছিল, এটিও বেরিয়ে এসেছে ফাঁস হওয়া চ্যাট থেকেই। সেই চ্যাটে মুনিয়া শারুনকে লিখেছেন- ‘সম্রাট চলে যাওয়ার পর আপনি তো জানেন আমি কতো কষ্টে ছিলাম।
আর লাস্ট ইয়ারে তো আমি খুবই কষ্টে ছিলাম। আপনি ওই টাইমে আমার পাশে না থাকলে আমি কী করতাম জানি না।’ ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এসব চ্যাটের সূত্র ধরেই কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসছে বলেই মনে করছেন কেউ কেউ।
জানা যায়, শারুন-মুনিয়া নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। হোয়াটসআপে ও টেলিগ্রামে নিয়মিত বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীর সংক্রান্ত বিভিন্ন আপডেট শারুনকে জানাতেন মুনিয়া। শারুন কায়দা কৌশল করে মুনিয়াকে নানাভাবেই আনভীরের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করতেন। মুনিয়ার ভাষায় হুইপুত্র যেন সাক্ষাৎ এক ফেরেশতা!
মুনিয়াও শারুনকে আক্ষেপ করে বলতেন, ‘আপনার লাইফে আপনার ওয়াইফের আগে যদি আমি আসতাম।’ এর উত্তরে শারুন বলেছেন, ‘আমি ভালো মানুষ না। জাস্ট উপকার করি।’ কোন কোন চ্যাটে মুনিয়া লিখেছেন, ‘আমার আপনার ভেতরে যা হয়েছে ওইটা কেউ জানবে না। আপনি আমার জন্য অনেক করেছেন।’
নিজেদের মধ্যকার এসব চ্যাট নিয়ে অবশ্য উৎকন্ঠায় ছিলেন শারুন। সেই কথাই জানিয়েছিলেন মুনিয়াকে। উত্তরে মুনিয়া লিখেছিলেন ‘জি না, আমি ডিলিট করে দেই সব।’
এদিকে হুইপপুত্র শারুন চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, মোসারাতের মৃত্যুর পর ফেসবুকে তাঁর সঙ্গে কথোপকথনের যে স্ক্রিনশট ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো মিথ্যা। সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ে এই কথোপকথনগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করারও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যার পর গুলশান-২-এর ১২০ নম্বর রোডের ১৯ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান (মুনিয়া) নামের এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার উজির দিঘিরপাড় এলাকায়। এক লাখ টাকা ভাড়ায় মাস দুয়েক আগে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন মোসারাত।
এ ঘটনায় ওই তরুণীর বোন বাদী হয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ওই তরুণীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে আনভীরের বিরুদ্ধে।
কালের আলো/এসআর/আরআই