অন্যদের তুলনায় দেশের গণমাধ্যম মুক্তভাবে কাজ করছে: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 11:38 pm | May 03, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলোঃ

দেশে গণমাধ্যম যেভাবে স্বাধীন এবং মুক্তভাবে কাজ করছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য তা অবশ্যই একটি উদাহরণ। একই সঙ্গে অনেক উন্নত দেশের তুলনায়ও বাংলাদেশের গণমাধ্যম মুক্ত। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে এমনটাই মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সোমবার (৩ মে) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কবি ও সাংবাদিক মিজান মালিকের ‘মন খারাপের পোস্টার’ কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, এই করোনা মহামারির মধ্যেও সরকারের অভিযাত্রা থমকে দাঁড়ায়নি, এই সাফল্যের গল্পগুলো গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আসা প্রয়োজন। তাহলে জাতি আশাবাদী হবে এবং দেশ এগিয়ে যাবে।

গণমাধ্যমের অপরিসীম শক্তি, যার মুখে ভাষা নেই, তাকে যেন ভাষা দিতে পারে। যে স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছে, তাকে যেন স্বপ্ন দেখাতে পারে। যার কাছে ক্ষমতা নেই, তাকে যেন ক্ষমতাবান করতে পারে। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, সমাজের অব্যক্তদের পক্ষে যেভাবে গণমাধ্যম কথা বলছে, মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে সেটি যেন আরও জোরালো হয়। যারা স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছে, তারা গণমাধ্যমের ওপর ভরসা করে যেন স্বপ্ন দেখতে পারে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে কোনো পত্রিকায় যদি ভুল সংবাদ পরিবেশিত হয়, তার প্রতিবাদ জানালে সংবাদটা যে মাত্রায় পরিবেশিত হয়েছিল প্রতিবাদটা সেই মাত্রায় ছাপানো হয় না। এদেশে ভুল, অসত্য সংবাদ পরিবেশনের জন্য পত্রপত্রিকার কোনো জরিমানা গুনতে হয় না, যেটি উন্নত দেশগুলোতে গুনতে হয়। উন্নত দেশগুলোতে কোনো ভুল, সংবাদ অসত্য সংবাদ বা কারো ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, হস্তক্ষেপ হয়েছে এমন সংবাদ পরিবেশিত হলে কেউ যখন আইনের আশ্রয় নেন, তাদেরকে জরিমানা গুনতে হয়। এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা না নিয়মিতই হয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১১ সালে পৃথিবীর এক সময়কার সবচেয়ে বহুল প্রচারিত যুক্তরাজ্যের ইংরেজি দৈনিক নিউজ অব দ্যা ওয়ার্ল্ড-এ একটি অসত্য সংবাদ পরিবেশিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক বছর আগে একজন এমপির বিরুদ্ধে ভুল সংবাদ পরিবেশিত হওয়ার কারণে বিবিসির পুরো টিমকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। আমাদের দেশে এই ধরনের ঘটনা নেই।

মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমকে বহুমাত্রিক সমাজের অন্যতম পূর্বশর্ত হিসেবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীন বিকাশ ছাড়া গণতান্ত্রিক সমাজের বিকাশ সম্ভবপর নয়। সে বিশ্বাসেই আমাদের সরকারের হাত ধরে দেশে বেসরকারি টেলিভিশন ও বেতারের যাত্রা শুরু হয়েছে, যেটি আগে ছিল না।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় গ্রেফার বিষয়ে দেশি-বিদেশি বেসরকারি সংগঠনের বিরূপ মন্তব্যের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, এদেশের ও বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যম নিয়ে যে সমস্ত সংগঠন বিবৃতি দেয় তাদের সাথে একমত হবার কারণ নেই। তারা নির্দিষ্ট কিছু জায়গা থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে। আমাদের কাছে বা তথ্য কমিশনের কাছেও কোনো তথ্য চায় না। তাদের ঢালাও মন্তব্য ঠিক নয় এবং আমরা এগুলোর সঙ্গে একমত নই।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে আগে ডিজিটাল বিষয়টা ছিলো না অর্থাৎ ডিজিটাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও যখন ছিলো না, তখন সেখানে নিরাপত্তার জন্য কোনো আইনেরও প্রয়োজন ছিলো না। যখন সেটি এসেছে তখন আইনেরও অবশ্যই প্রয়োজন আছে।

এর আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী কবি ও সাংবাদিক মিজান মালিকের ‘মন খারাপের পোস্টার’ কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনকালে বলেন, মানুষ যখন প্রচন্ড আত্মকেন্দ্রিক হচ্ছে, কল্পনা হারিয়ে যাচ্ছে, সেসময় কবিতা এবং কবিতার বই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মিজান মালিক এখনো তরুণ, তার হাত দিয়ে আরো অনেক কবিতার বই আমাদের সাহিত্য, আমাদের বাংলা ভাষা পাবে, এটিই আমার প্রত্যাশা।

মন্ত্রীর সাথে কবি মিজান মালিক, সাংবাদিক সাঈদ আহমেদ, খায়রুল আলম, আশীষ সেন, আলমগীর স্বপন বইটির মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।

কালের আলো/টিআরকে/এসআইএল