ফেরিতে মারা যাওয়া ৫ জনের লাশ হস্তান্তর
প্রকাশিতঃ 5:35 pm | May 13, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলোঃ
শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে এনায়েতপুরি ও শাহ পরাণ দুই ফেরিতে প্রচণ্ড গরমের তাপদাহ ও মানুষের ভিড়ে পদদলিত হয়ে এক শিশু, নারীসহ ৫ জন মারা গেছেন। এ সময় অসুস্থ হয়েছে আরও প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ। নিহত ৫ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
বুধবার(১২ মে) দুপুরে মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে ফেরিতে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত ৫ জনের মধ্যে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩ জনের পরিচয় জানার পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারা হলেন- শরীয়তপুর জেলার নড়িয়ার কালিকা প্রসাদ গ্রামের গিয়াসউদ্দিন মাদবরের ছেলে আনছার মাদবর (১২), মাদারীপুরের কালকিনির বালিগ্রামের আল আমিন বেপারীর স্ত্রী নীপা বেগম (৩৫) এবং বরিশালের হারুণ মিয়া (৪৫)।
পরে রাত ১টার দিকে গোপালগঞ্জ জেলার কাশীয়ানি উপজেলার পদ্মবিলা গ্রামের মজিবর শেখের মেয়ে শিল্পীর (৩৮)। পরিচয় পাওয়া যায়। ওই সময় তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার সকালে ঝালকাঠি জেলার নেছারাবাদ গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে শরীফুল ইসলামের (২৭) লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসে শাহপরাণ নামে একটি ফেরি। অতিরিক্ত যাত্রীদের কারণে পদদলিত হয়ে মাঝ পদ্মায় মারা যায় এক শিশু। পরে ১২টার দিকে শিমুলিয়া থেকে কয়েক হাজার যাত্রী নিয়ে বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে ফেরি এনায়েতপুরি।
অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে ওই ফেরিতে গাদাগাদির সৃষ্টি হয়। মাঝ পদ্মায় খাবার পানির সংকট দেখা দেয়। বাংলাবাজার ঘাটে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মারা যায় আরও ৪ জন। এ সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন অর্ধশতাধিক যাত্রী।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা তাদের মধ্যে ১২ জনকে কাঁঠালবাড়ি অস্থায়ী ক্যাম্প করে চিকিৎসা দেয়। এছাড়া ৩ জনকে গুরুতর অবস্থায় শিবচর উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেরির মধ্যে প্রচণ্ড গরম, খাবার পানির অভাব ও মানুষের গাদাগাদিতে বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাংলাবাজার ঘাটে ফেরি ভিড়লে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অনেকে পদদলিত হয়। এ কারণে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন বলেন, ফেরির মধ্যে প্রচণ্ড গরম ও গাদাগাদি করে যাত্রীরা অবস্থান করায় এবং মানুষের ভিড়ে তাড়াহুড়া করে ফেরি থেকে নামতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত ৫ জনের ১জন শিশু, ২জন নারী ও ২ জন পুরুষ রয়েছে। যার মধ্যে বুধবার তিনজন, রাত দেরটার দিকে একজন এবং বৃহস্পতিবার সকালে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত সবাইকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ফেরিতে দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া প্রত্যেক পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। লাশ পরিবহন ও দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে।
কালের আলো/বিএস/এমএম