জটিল চিকিৎসায় এভারকেয়ার চট্টগ্রামের সাফল্য নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা

প্রকাশিতঃ 10:56 am | May 28, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:

৪২ বছর বয়সী নূরুন্নাহারের ব্রেইন টিউমারের সফল নিউরোসার্জারির খুটিনাটি নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় সভার আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল, চট্টগ্রাম।

বৃহস্পতিবার (২৭ মে) স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের অংশগ্রহণে এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে ডা. মো. আনিসুল ইসলাম খান ও তার দলসহ সার্জারির সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা সার্জারি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত ৬ মাস ধরে রোগীর মাথাব্যথার সমস্যায় ভুগছিলেন, যা ধীরে ধীরে চরম মাত্রায় বাড়তে থাকে। তিনি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিলেও তেমন ভালো ফল পাননি। এদিকে পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে, এক পর্যায়ে অসাড়তায় ভুগতে শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে ডান হাত ও পায়ের উপর নিয়ন্ত্রণ হারান।

সার্জারির কয়েক সপ্তাহ আগে রোগী কথাও বলতে পারছিলেন না। সংকটাবস্থা বিবেচনা করে রোগীর পরিবার ডা. খানের সাথে যোগাযোগ করেন এবং তিনি জানান রোগীর ব্রেইনের বাম পাশে বেশ বড় একটি টিউমার রয়েছে।

অবস্থা বিবেচনা করে ডা. খান সার্জারির মাধ্যমে টিউমার অপসারণের সিদ্ধান্ত নেন। এ ধরনের সার্জারিগুলো বেশ জটিল এবং উচ্চ পর্যায়ের ও নির্ভুল দক্ষতার প্রয়োজন হওয়ায় এই কেসটি একটু ব্যতিক্রম ছিল এবং অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তবে ডা. খান এবং তার দল সাফল্যের সঙ্গে সার্জারি সম্পন্ন করতে সক্ষম হন।

রোগীর সার্বিক অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর সিনিয়র কনসালট্যান্ট অ্যান্ড কোঅর্ডিনেটর ও নিউরোসার্জারি বিভাগের ডা. মো. আনিসুল ইসলাম খান বলেন, ব্রেইন টিউমারের কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে। যেমন- মাথাব্যথা, অসাড়, বমি, খিচুনী অনুভব করা এবং আরও কিছু লক্ষণ আছে যা দ্বারা ব্রেইন টিউমারের সম্ভাব্য উপস্থিতি বুঝা যায়।

তিনি বলেন, যেহেতু রোগীর মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে টিউমারের লক্ষণ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট জটিলতা দেখা দিয়েছিল, তাই অত্যন্ত জটিল হলেও সার্জারির মাধ্যমে এটি অপসারণ করাই এর উত্তম চিকিৎসা ছিল।

কর্মকর্তারা জানান, এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামের রয়েছে বিশ্বমানের মডিউলার অপারেশন থিয়েটার। অত্যাধুনিক অপারেটিং মাইক্রোস্কোপ, এন্ডোস্কোপ, ক্রানিওটোম ও ড্রিল মেশিন, সি-আর্ম মেশিন। অপারেশন থিয়েটারের পাশেই রয়েছে সকল সুবিধা ও দক্ষ জনবলসহ সার্জিক্যাল আই সি ইউ, যা নিউরো সার্জিক্যাল অপারেশন পরবর্তী সময়ের জন্য খুবই জরুরি।

ব্রেইনের বিভিন্ন অপারেশন, স্ট্রোক অপারেশন, হেড ইনজুরি, স্পাইন ইনজুরি, স্পাইনাল টিউমার পিএলআইডি, পেডিয়াট্রিক নিউরোসার্জারিসহ অন্যান্য নিউরো সার্জিক্যাল সেবা দিতে এভারকেয়ার হসপিটাল, চট্টগ্রাম প্রস্তুত।

আর এভারকেয়ার হাসপাতাল,চট্টগ্রাম বন্দরনগরীর বৃহত্তম ও সর্বপ্রথম অত্যাধুনিক টারশ্যারি কেয়ার মাল্টিডিসিপ্লিনারি হসপিটাল। এটি চালু হওয়ার পর থেকে হাসপাতালটি চট্টগ্রামে স্বাস্থ্যসেবার নতুন সংজ্ঞা দিচ্ছে এবং নগরের স্বাস্থ্য শিল্পে বেশকিছু উল্লেখযোগ্য মাইলফলক অর্জনের পাশাপাশি পুরো অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রেখে চলেছে।

কর্মশালা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার নীলেশ গুপ্ত, এভারকেয়ার হসপিটাল, চট্টগ্রামের পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. প্রকাশ কুণ্ডুর নারাসিমহাইয়া, মহাব্যবস্থাপক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. মোহাম্মদ ফজল- ই- আকবর চৌধুরী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, কেনিয়া এবং নাইজেরিয়াসহ দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকায় সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে এভারকেয়ার।

২৯ টি হসপিটাল, ১৬ টি ক্লিনিক, ৭৫ টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ২ টি ব্রাউনফিল্ড অ্যাসেটস এই প্রতিষ্ঠানের পোর্টফোলিও’র অন্তর্ভুক্ত। দেশের উদীয়মান বাজারে একটি সিস্টেম্যাটিক স্বাস্থ্যসেবা তৈরি করতে প্রায় ১০ হাজার ৩৫০ জন কর্মী নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে। একটি বিচিত্র স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এভারকেয়ার গ্রুপ গর্বিত।

কালের আলো/এমএ/এমআরবি