অবিচার নয়, সাহসের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে সংবাদমাধ্যম

প্রকাশিতঃ 3:11 pm | September 24, 2018

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রতি সংবাদমাধ্যম অবিচার করছে না, বরং সাহসের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে ।

সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এর আগে রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) নির্বাচনী প্রচারে সড়ক পথে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার সময় কর্ণফুলী ও আনোয়ারা পথসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘গণমাধ্যমের একাংশ আওয়ামী লীগের প্রতি অবিচার করছে।’

ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, ‘আমরা মনে করি অবিচার করছে না, বরং তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু’র গুন্ডামী ও গোয়েন্দাগিরি সত্ত্বেও গণমাধ্যমের বিরাট অংশ সাহসের সাথে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছে। তবে ক্ষুদ্র একটি অংশ যে পা চাটছে ও সুবিধার ঝোল খাচ্ছে—তা জনগণ দেখছে।’

তিনি বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমের গলায় দড়ি ঝোলাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের তৃপ্তি মিটছে না, তাই এখন গোটা গণমাধ্যমকেই পকেটে ঢোকানোর চেষ্টায় কিছুটা বেগ পাওয়াতে আফসোস করে নানা কথাবার্তা বলছেন।’

আওয়ামী লীগের সুশাসনের বোধ কখনোই ছিল না মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘নানা ফন্দিফিকির করে ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাস বিতরণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ। চাঁদাবাজী, দখল, টেন্ডার সন্ত্রাস, লুটপাট, নির্যাতন-অত্যাচারের কাহিনী প্রতিদিন সংবাদপত্রের পাতায় জায়গা দখল করে থাকে।’

আওয়ামী রাজনীতি কখনোই দলীয় সংকীর্ণতার বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সেজন্য আওয়ামী ক্ষমতাসীনরা ব্যাংক-বীমা, শেয়ার বাজার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেক্টর সবই আত্মসাৎ করেছে। এখন বেওয়ারিশ লাশ দাফনের সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের ওপরও এদের নজর পড়েছে।’

‘মহানগর যুবলীগের নেতারা আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের ওপর চড়াও হয়েছে বিপুল অংকের চাঁদা আদায়ের জন্য। এই ঘটনা জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। আর কিছুদিন পর হয়তো আওয়ামী ‘সন্ত্রাসীরা’ লাশের কাছ থেকেও চাঁদা চাইবে’— বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার প্রতি সরকারের আচরণের ঘটনাগুলো প্রকাশ হওয়ায় দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী হতবাক হয়েছে। দেশের প্রধান বিচারপতিকে যেভাবে সরকার প্রধান থেকে শুরু করে অন্যান্য মন্ত্রীরা হুমকি, গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেছেন তাতে আওয়ামী রাজনীতির বিকৃত সংস্কৃতি আবারও জনগণের কাছে সুষ্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।’

রিজভী বলেন, ‘২০১৭ সালের জুলাই এর প্রথম সপ্তাহে সংবাদ সম্মেলন করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রধান বিচারপতিকে নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। তিনি দেশের প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করতে গিয়ে অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের শেষ আশ্রয়স্থলকেও দখলে নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশ এখন আওয়ামী কু-রাজনীতির ঘোঁট পাকানো অবস্থার মধ্যে নিপতিত হয়েছে। এখন সরকারের ইচ্ছা অনিচ্ছা অনুযায়ী আইনী প্রক্রিয়া ও বিচারিক কার্যক্রম চলে। ২১ আগস্টের বোমা হামলা মামলা এটির একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ।