খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি স্পর্শকাতর: হাইকোর্ট

প্রকাশিতঃ 6:08 pm | September 24, 2018

কালের আলো ডেস্ক:
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেশের বিশেষায়িত কোনও হাসপাতালে চিকিৎসার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের ওপর মঙ্গলবার শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, ‘তার চিকিৎসার বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাই এ বিষয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য রাখা হলো।’

রাষ্ট্রপক্ষের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর দেশের বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

এদিন অ্যাটর্নি জেনারেল মামলাটির ওপর শুনানি করতে আদালতের কাছে সময় আবেদন করেন। কিন্তু এ বিষয়ে আপত্তি জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

তখন আদালত বলেন, ‘তার চিকিৎসার বিষয়টি স্পর্শকাতর। তাই এ বিষয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য রাখা হলো। ’

শুনানির দিন ধার্যের পরে কায়সার কামাল বলেন, রিট আবেদনটি দায়েরের পর সরকারের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসার ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হয়। আমাদের কাছে মন্ত্রণালয় থেকে পাঁচজন ডাক্তারের নাম চাওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী আমরা ডাক্তারদের নামের তালিকা দাখিল করি। এরপর সরকার তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করে যে বোর্ডে আমাদের সুপারিশকৃত তালিকার একজন ডাক্তারও নেই। তারপরও সরকার গঠিত মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়াকে হাসাপাতালে ভর্তির সুপারিশ করেছে প্রায় এক সপ্তাহ আগে। কিন্তু সেই সুপারিশের পরও তার চিকিৎসার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় রিট আবেদনটি আজ শুনানির জন্য কার্যতালিকায় উঠলে অ্যাটর্নি জেনারেল সময় আবেদন করেন। আদালত মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর কারাগারে বিশেষ আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচার নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বকশীবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ও সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত এলাকাটি জনাকীর্ণ থাকে। সে জন্য নিরাপত্তাজনিত কারণে বিশেষ জজ আদালত-৫ নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এর প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হল।

সে আদালতে বিচার চলাকালীন সময়ে খালেদা বলেন, আমি অসুস্থ। পা ফুলে যায়। আপনারা যা ইচ্ছা রায় দেন। আমি আর আসতে পারবো না।

এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরাও তার সাথে দেখা করে গণমাধ্যমের কাছে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভাল না দাবি করে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলেন।

চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং প্রত্যেকের দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন আদালত।

রায় ঘোষণার পর পরই খালেদা জিয়াকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।