ইভ্যালিসহ ১০ ই-কমার্সে কার্ড ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ব্র্যাক ব্যাংকের
প্রকাশিতঃ 6:08 pm | June 23, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
ইভ্যালি ও আলেশা মার্টসহ ১০টি ই-কমার্স সাইট থেকে ক্রেডিট, ডেবিট ও প্রিপেইড কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। এসব অনলাইন মার্কেট প্লেস নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় এমন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ব্যাংকটি।
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো আলাদিনের প্রদীপ, কিউকম, ই-অরেঞ্জ, সিরাজগঞ্জ শপিং, আদিয়ান মার্ট, বুম বুম, নিডস ডট কম বিডি ও ধামাকা শপিং।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসব অনলাইন মার্কেট প্লেস-এর বিরুদ্ধে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্র্যাক ব্যাংকের গণসংযোগ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা ইকরামুল কবীর। তিনি বলেন, এটি ব্র্যাক ব্যাংকের একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত। কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্ব থাকবে তা নির্ণয় করে আমাদের পরিচালনা পরিষদ। তারা এই সাইটগুলোতে লেনদেন আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে একে ব্যাংকের একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত বলে জানান ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেনও। তবে তিনি এর পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করতে রাজি হননি।
তবে ব্যাংকটির একজন জ্যেষ্ঠ নির্বাহী বলেছেন, গণমাধ্যমে অনলাইন শপটির ঝুঁকিপূর্ণ লেনদেন নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ব্যাংকটি সতর্কতামূলক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ধরনের অনলাইন মার্চেন্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গ্রাহকদের লেনদেন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার বিষয়টি ব্র্যাক ব্যাংকের নিজস্ব পর্যালোচনাতেও উঠে আসে বলে জানান তিনি।
ওই নির্বাহী বলেন, ইতঃপূর্বে ইভ্যালীর বিরুদ্ধে ভোক্তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে। ওই সময় ব্র্যাক ব্যাংকসহ অনেক ব্যাংক মার্চেন্টটির সঙ্গে সাময়িকভাবে কার্ডে লেনদেন স্থগিত করেছিল।
সম্প্রতি নজরদারির বাইরে থাকা ই-কমার্স সাইটগুলোয় উচ্চ মাত্রায় আর্থিক লেনদেনের ঝুঁকির বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে একটি রিপোর্ট পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক। গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া অগ্রিম অর্থের তুলনায় এসব প্লাটফর্মের দৃশ্যমান তেমন কোনো সম্পদ না থাকার বিষয়টিই সেখানে তুলে ধরা হয়েছিল।
রিপোর্টে বলা হয়, অনলাইনভিত্তিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান (ই-কমার্স) ইভ্যালির চলতি সম্পদের পরিমাণ ৬৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সম্পদের চেয়ে ৬ গুণের বেশি এই দেনা পরিশোধ করার সক্ষমতা কোম্পানিটির নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, লোকসানে পণ্য বিক্রি করার কারণে ইভ্যালি গ্রাহক থেকে অগ্রিম মূল্য নেওয়ার পরও মার্চেন্টদের কাছে বকেয়া অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। গ্রাহক ও মার্চেন্টের বকেয়া ক্রমাগত বাড়ার কারণে এক সময় বিপুল সংখ্যক গ্রাহক ও মার্চেন্টের পাওনা অর্থ না পাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে এবং এর ফলে সার্বিকভাবে দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া কোম্পানিটি চলতি দায় ও লোকসানের দুষ্ট চক্রে বাঁধা পড়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ক্রমাগতভাবে সৃষ্ট দায় নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব টিকে না থাকার ঝূঁকি তৈরি হচ্ছে।
কালের আলো/আরএস/এমএইচএস