স্বকীয়তা ধরেই এগিয়ে যাবে র্যাব, জনপ্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকার কে এম আজাদের
প্রকাশিতঃ 10:01 am | July 01, 2021
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো :
জঙ্গি, জলদস্যু বা চরমপন্থীদের মূলোৎপাটন, মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান অথবা গুরুতর অপরাধীদের গ্রেফতার, অবৈধ অস্ত্র এবং বিস্ফোরক উদ্ধার-প্রতিটি পদক্ষেপেই অভাবনীয় সাফল্য ও সুনাম অর্জন করেছে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধেরও এক নজির স্থাপন করেছেন র্যাব ফোর্সেসের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: র্যাব ডিজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের এক বছর; চ্যালেঞ্জ জয়ের সঙ্গে আছে সফলতাও
ঈর্ষণীয় নানা সাফল্য নিয়েই ইতোমধ্যেই ১৭ বছরে পা রেখেছে দেশের সাধারণ মানুষের সবচেয়ে আস্থাভাজন এই সংস্থা। জনগণের নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত এই সংস্থার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস্) পদেও পরিবর্তন এসেছে।
দুর্গম বহু পথ আর নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এই এলিট ফোর্সের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদটির নেতৃত্বে বর্তমানে আছেন কর্নেল কে এম আজাদ। এর আগে তাঁর র্যাবের অধিনায়ক, র্যাব সদর দপ্তরের পরিচালক ও উপ-অধিনায়কসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
অর্জন করেছেন সুনাম, কুড়িয়েছেন সাফল্য। সুন্দরবনে জলদস্যু আত্মসমর্পণ এবং হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলা মোকাবিলায় এবং অন্যান্য আভিযানিক কর্মকান্ডেও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, আভিযানিক কর্মকান্ড, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম)- সেবা’য় ভূষিত হন।
নিজের দীর্ঘ অর্জিত অভিজ্ঞতা, মেধা, পেশাদারিত্ব, দক্ষতা, সততা, সাহস ও কমিটমেন্টকে কাজে লাগিয়ে র্যাবের নতুন এই অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস্) দক্ষতার মাধ্যমে র্যাব ফোর্সেস এর সম্মানকে আরও উঁচুতে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
তাঁর ভাষ্য মতে-‘স্বকীয়তা ধরেই এগিয়ে যাবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সামনের দিনগুলোতেও দেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে আমাদের প্রতিজ্ঞার মেলবন্ধন ঘটাতে চাই।’
সম্প্রতি র্যাব সদর দপ্তরে কালের আলোর সঙ্গে আলাপে এমনটিই বলেছিলেন কে এম আজাদ। অবারিত দেশপ্রেম, কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায়, প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং চেইন অব কমান্ডের প্রতি প্রশ্নের উর্ধ্বে আনুগত্যের মাধ্যমে বরাবরই নিজেকে অনবদ্যভাবেই উপস্থাপন করেছেন তিনি।
কর্নেল আজাদ র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস্) এর দায়িত্ব গ্রহণের পর র্যাব বেশ কিছু ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানরা রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আগমন করেন। এই সময়ে আগত রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানদের র্যাব নজিরবিহীন নিরাপত্তা প্রদান করে প্রশংসিত হয়।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকালীন সময়ে একটি চক্র পরিকল্পিতভাবেই দেশের কয়েকটি জেলায় বিশৃঙ্খলা, সহিংসতা ও নাশকতামূলক কর্মকান্ড সংঘটিত করে। বাঙালি জাতির চির আরাধ্য পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুর্যাল ভাঙা, রাষ্ট্রবিরোধী উস্কানি ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদান; ঘোড়ায় চড়ে নাশকতায় অংশগ্রহণ ও আতঙ্ক সৃষ্টি, বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ও ভাংচুরের ঘটনায় জড়িতদের র্যাব গ্রেফতারের মাধ্যমে দেশবিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র রুখে দেয়। ফলে স্বাভাবিক থাকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি।
কর্নেল আজাদ করোনাকালীন সময়ে র্যাবের প্রত্যেক সদস্যের সুস্থতা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি র্যাবের সক্ষমতা ধরে রাখতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ফলশ্রুতিতে র্যাবের প্রতিটি সদস্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত আভিযানিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক সময়ে করোনাসহ বিভিন্ন রোগের টেষ্টিং কিট ও রি-এজেন্ট জব্দ ও প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ৯ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করে দেশবাসীর আকুন্ঠ সমর্থন, আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেছে।
র্যাব সদর দপ্তর সূত্র জানায়, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, অবৈধ মাদক, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার ও বাণিজ্য নির্মূলীকরণ, নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষা, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেজাল খাদ্যদ্রব্য এবং মানহীন, নকল ও অবৈধ ওষুধের অপবাণিজ্য প্রতিহতকরণ, প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া রোধকরণসহ বিভিন্ন সমসাময়িক আর্থ-সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে অবিরাম অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে অপরাধ দমনে র্যাব ফোর্সেস কার্যকর ভূমিকা পালনের মাধ্যমে নিজেদের ইমেজকে অনন্য উচ্চতায় দাঁড় করিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে কর্নেল আজাদ কালের আলোকে আরও বলেন, ‘আমরা দেশবাসীকে অপরাধমুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে চাই। এলক্ষে আমরা দেশের আপামর জনসাধারণের সহযোগিতা চাই।’
অপরাধমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে র্যাব ফোর্সেস তার কর্মপ্রচেষ্টাকে প্রতিনিয়ত শাণিত করছে-উচ্ছ্বসিত কন্ঠে একাধিকবার বলেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন অসাম্প্রদায়িক, উন্নত ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণে তিনি র্যাব ফোর্সেসের অগ্রযাত্রা-সাফল্য কামনা করেছেন।
র্যাবের প্রতি দেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার পারদ উর্ধ্বমুখী। দেশবাসীর প্রত্যাশা ও আস্থার মূল্যায়ন করেই র্যাব দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস্) কর্নেল কে এম আজাদ কালের আলোকে আরও বলেন, ‘র্যাব সব সময় দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে বন্ধুর মতো পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে।’
[মুজিববর্ষ উপলক্ষে কালের আলোর বিশেষ প্রকাশনা ‘৫০ বছরে বাংলাদেশ; অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক বিশেষায়িত প্রিন্ট ম্যাগাজিন থেকে নেওয়া।]
কালের আলো/ডিআরবি/এমএম