জাতীয় ঐক্য মানুষ গ্রহণ করেনি : তোফায়েল

প্রকাশিতঃ 9:41 pm | September 29, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
ড.কামাল-বি.চৌধুরীদের জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন সরকারের প্রভাবশালী বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি।

তিনি বলেছেন, ‘আজকে যারা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে সেই ঐক্য টিকবে না। কারণ আদর্শহীন ঐক্য টিকে না। যারা দল বদলায়, আজকে একদল, কালকে আরেক দল, পরশু আরেক দল, যাদের নীতি নেই মানুষ তাদেরকে গ্রহণ করে না।’

তোফায়েল আহমেদ এমপি বলেন, ‘নির্বাচন হবে ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী। নির্বাচনকালীন সরকার থাকবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধী। আমরা দৈনন্দিন কাজ করবো। নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করবো না। নির্বাচন কমিশন সকলকে নিয়ে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিবে।’

শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের ত্রিশালে মিনিস্টার হাই টেক পার্ক ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের নতুন কারখানার উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

২০২১ সাল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণী জয়ন্তী’র বছরে বাংলাদেশের রপ্তানি ৭ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন বাণিজ্য মন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমাদের তৈরি পোষাক রপ্তানি হয় ৩০.৬১ বিলিয়ন ডলার। এখন আমরা ৩০ মিলিয়ন টন সিমেন্ট উৎপাদন করে রপ্তানি করি। আগের আমাদের চা উৎপাদন হতো ১০ মিলিয়ন কেজি।

৮ মিলিয়ন কেজি রপ্তানি করতো। গতবার ৮৫ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়। কিন্তু রপ্তানি করতে পারি না। কারণ শতভাগ মানুষ সকালে ঘুম থেকে ওঠে চা পান করে।

দারিদ্র্যতা ৪৪ থেকে প্রধানমন্ত্রী ২২ শতাংশে নামিয়ে এনেছেন। অতি দরিদ্রের সংখ্যা এখন ১২ শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা হবো দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ। আগে সাড়ে ৭ কোটি লোক ছিলো, খাদ্যের অভাব ছিলো। এখন আমরা ১৬ কোটি লোক। খাদ্যে উদ্ধৃত্ত, চমৎকার এক বাংলাদেশ।

দেশের বাজরকে সমৃদ্ধ এবং নিজেদের অবস্থান সুসংহত ও রপ্তানি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্র্যান্ড মিনিষ্টারের এই কারখানার উদ্বোধন করা হয়।

ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আলী আজগার টগর এমপি, ডা. এম আমানউল্লাহ এমপি, ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল এমপি, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, বিভাগীয় কমিশনার মাহমুদ হাসান, ডিআইজি নিবাস চন্দ্র মাঝিঁ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেও সদস্য রেজাউল হাসান, জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন, মাইওয়ান-মিনিস্টার হাইটেক পার্কের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক রাজ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলরূবা তনু, প্রাইম ব্যাংক লি. এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর এন্ড সিইও রাহেল আহমেদ।

মাইওয়ান-মিনিস্টার গ্রুপের চেয়ারম্যান এম. এ রাজ্জাক খান রাজ বলেন, ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং টেকসই পণ্য তৈরী করছে দেশীয় ইলেকট্রনিক ব্রান্ড মিনিস্টার। মিনিস্টারের এই পরিবেশ বান্ধব পণ্যগুলো সাধারন মানুষের জীবনকে করে তুলবে আরো সহজ। একটি সুন্দর আগামীর জন্য যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বক্তারা বলেন, দেশের বাজারকে সমৃদ্ধ এবং নিজেদের অবস্থান সুসংহত ও রপ্তানি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্র্যান্ড মিনিস্টারের নতুন কারখানার উদ্বোধন করা হয়েছে।

আমার পণ্য আমার দেশ, গড়ব বাংলাদেশ এই শ্লোগানকে লালন করে প্রায় ২০০ বিঘা জমির উপর ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে ফ্যাক্টরিটি। কারখানাটিতে প্রতিদিন মিনিস্টার ব্র্যান্ডের প্রায় ১০ হাজার রেফ্রিজারেটর ও এসি’র উৎপাদন হবে। যন্ত্রাংশ তৈরী থেকে শুরু করে সংযোজন সব কাজ এই কারখানাতেই সম্পন্ন হবে।

এতে প্রায় ৫ হাজারেরও বেশী মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতে উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশপাশি কমংসংস্থানও বাড়বে। আপাতত স্থানীয় বাজারে রেফ্রিজারেটর ও এসি সরবরাহ করলেও খুব শিগগিরই রপ্তানিতে যাবে প্রতিষ্ঠানটি। ইতিমধ্যে ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, ভুটান, মধ্যপ্রাচ্যে ও আফ্রিকার সাথে কথাবার্তা চলছে।

এছাড়াও ভবিষ্যতে মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপও তৈরী করার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০০২ সালে মাইওয়ান ইলেকট্রনিকস ইন্ডাস্ট্রিজের যাত্রা শুরু হয়।

তাদের গাজীপুরের কারখানায় টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর, এসি, ব্লেন্ডার ইত্যাদি ইলেকট্রনিক্স পন্য তৈরী করা হয়। তাছাড়া ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন ইত্যাদি পণ্যও সংযোজন করা হয়।

সেখানেও প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখেরও বেশী রেফ্রিজারেটর বিক্রি করে কোম্পানিটি। ২০১৩ সালে বাজারে আসে মিনিস্টার ব্র্যান্ড।

এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে কারখানার উদ্বোধন করেন এবং কারখানা ঘুরে দেখেন।

কালের আলো/ আরএম/টিপি