সৌদি রাষ্ট্রদূতের প্রস্তাবনার এক সপ্তাহেই সুসংবাদ দিলেন বাণিজ্য উপমন্ত্রী আল-ঘোয়াইনাম!
প্রকাশিতঃ 12:49 am | July 08, 2021

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট, কালের আলো :
সৌদি আরবে বসবাসরত অভিবাসী নাগরিকদের ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা ও বিনিয়োগের সম্ভাবনার দূয়ার খুলে দিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম(বার)। মাত্র এক সপ্তাহ আগে দেশটির পুর্বাঞ্চলীয় চেম্বার অব কমার্সের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রাষ্ট্রদূত নিজেদের অভিবাসীদের ব্যবসা ও বিনিয়োগের নতুন সুযোগ তৈরিতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
সপ্তাহ ঘুরতে ঘুরতে সেই প্রস্তাব হাসিমুখেই গ্রহণ করে দেশটির বাণিজ্য উপমন্ত্রী প্রকৌশলী আয়েদ আল-ঘোয়াইনাম সৌদি আরবে বসবাসরত সকল বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের অব্যাহত সুযোগ সুবিধা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে নতুন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের সৌদি আরবে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন তিনি।
গত বুধবার (০৭ জুলাই) পুর্বাঞ্চলীয় চেম্বার সভাপতির আয়োজনে বাংলাদেশের অভিবাসী ব্যবসায়ীদের জন্য অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে এমন ঘোষণাই দিয়েছেন বাণিজ্য উপমন্ত্রী। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
ওয়েবিনারে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে
সূত্র জানায়, সৌদিতে ব্যবসা পরিচালনা ও বিনিয়োগ নীতির নতুন সুযোগ নিয়ে পুর্বাঞ্চলীয় চেম্বার অব কমার্স ও বাংলাদেশ দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে সৌদি আরবে বসবাসরত বাংলাদেশী ব্যবসায়ী ও অভিবাসীরা অংশগ্রহণ করেন।
নতুন ব্যবসা বাণিজ্য নীতির আওতায় সকল ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য চলতি বছরের ২৩ আগস্টের মধ্যে সৌদি সরকারকে অবহিত করে তাঁদের ব্যবসা নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক বলে সভায় জানানো হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিবন্ধনে ব্যর্থ হলে Anti-Commercial Concealment আইনের আওতায় বিভিন্ন ধরণের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে অবহিত করা হয়। একই সাথে নতুন এ নীতির আওতায় ৮ লক্ষ সৌদি রিয়াল সমপরিমাণ অর্থ এককালীন প্রদানের মাধ্যমে সৌদি আরবে নতুন ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী হিসেবে যেকোনো অভিবাসীর নিবন্ধনের সুযোগ গ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া ১ লক্ষ সৌদি রিয়াল প্রদানের মাধ্যমেও এক বছরের জন্য বিনিয়োগকারী হিসেবে নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভিশন ২০৩০ এর আওতায় শ্রমবাজারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বেশ কিছুদিন ধরেই পরিবর্তন আনছে সৌদি সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় সৌদি আরবের অভ্যন্তরে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে দেশটি। ওয়েবিনারে সৌদি কর্তৃপক্ষ একটি নির্ধারিত সময় বেঁধে দেন।
চলতি বছরের ২৩ আগস্টের মধ্যে বাংলাদেশীসহ ভিনদেশী ব্যবসায়ীদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য বিনিয়োগের তথ্যাদি প্রদান করে নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সভায় বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যকার বিদ্যমান বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার আশ্বাস পূনর্ব্যক্ত করা হয়। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরও ওয়েবিনার আয়োজনের বিষয়ে চেম্বার কর্মকর্তারা সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, সৌদিতে বসবাসরত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা নতুন এ সুযোগ গ্রহণ করে বৈধভাবে সৌদি আরবে ব্যবসা পরিচালনা করবেন।
ওয়েবিনারে সৌদি সরকারের পক্ষে বাণিজ্য উপমন্ত্রী প্রকৌশলী আয়েদ আল-ঘোয়াইনাম, Anti-Commercial Concealment বিষয়ক জাতীয় কমিটির প্রধান আহমাদ আল-সুয়াইলেম, বাণিজ্য বিষয়ক পূর্বাঞ্চলীয় ও জাতীয় কমিটির সভাপতি হানি আল-ফালেকসহ চেম্বারের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষে ইকনমিক কাউন্সেলর মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান ও অন্যান্য কর্মকর্তাগন অংশগ্রহণ করেন।
সেই আলোচনাতেই মিললো ইতিবাচক ফল
সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম(বার) দেশটির পুর্বাঞ্চলীয় চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবদুল হাকিম আল খালদি এবং মহাসচিব আবদুল রহমান আল ওয়াবেল-এর সাথে গত ৩০ জুন সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠকে ভিশন ২০৩০ এর আওতায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সৌদি সরকার কর্তৃক আণীত নতুন বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ নীতিমালা এবং Anti-Commercial Concealment আইন বিষয়ে আলোচনা হয়। রাষ্ট্রদূত এ সময় সৌদি আরবে বসবাস ও ব্যবসারত বাংলাদেশী অভিবাসীদের এ নতুন আইন, বাধ্যবাধকতা এবং সর্বোপরি এর আওতায় ব্যবসা ও বিনিয়োগের নতুন সুযোগের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে চেম্বার অব কমার্সের সহায়তা কামনা করেন। এর ধারাবাহিকতায় পুর্বাঞ্চলীয় চেম্বার সভাপতি বাংলাদেশের অভিবাসী ব্যবসায়ীদের জন্য গত বুধবার (০৭ জুলাই) এ ওয়েবিনার আয়োজন করেন।
কালের আলো/ জিকেএম/ আরআই