জাজ মাল্টিমিডিয়ার আজিজের সম্পত্তি নিলামে তুলছে জনতা ব্যাংক

প্রকাশিতঃ 11:36 am | October 01, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

খেলাপি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় অবশেষে রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও জাজ মাল্টিমিডিয়ার মালিক আব্দুল আজিজের সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক লিমিটেড।

রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে ঋণের অর্থ আদায়ে নিলামে তোলার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ব্যাংকটি। প্রতিষ্ঠানটির কাছে জনতা ব্যাংকের পাওনার পরিমাণ ১ হাজার ৯৩ কোটি ৪৫ লাখ ৩৩ হাজার ৮৯৯ টাকা।

জনতা ব্যাংক বলছে, রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড কেউ কিনতে চাইলে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় অথবা দিলকুশা লোকাল অফিসে দরপত্র জমা দিতে হবে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে যে ১০০ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ করেছেন, সেখানে শীর্ষ দশের নাম রয়েছে চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী দুই প্রতিষ্ঠান রিমেক্স ফুটওয়্যার ও ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টস লিমিটেড। এর কর্ণধার দুই ভাই এমএ আজিজ ও এমএ কাদের। ঋণের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে তারা বের করে নিয়েছেন প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। এ দুই ভাই এখন জনতা ব্যাংকেরও শীর্ষ ঋণখেলাপি।

বর্তমানে দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে সবচেয়ে আলোচিত নাম জাজ মাল্টিমিডিয়া। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রেও বিনিয়োগ করেছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে বেশ কয়েকটি ব্যবসা সফল সিনেমাও হয়েছে।

সংসদে প্রকাশ করা শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় এমএ আজিজের রিমেক্স ফুটওয়্যার রয়েছে তৃতীয় স্থানে। শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টস লিমিটেড রয়েছে দশম স্থানে। এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এমএ আজিজের বড় ভাই এমএ কাদের।

এ প্রসঙ্গে আবুল আজিজ বাংলা বলেন, ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদের আমার ভাই। তবে তিনি জনতা ব্যাংক থেকে কোনও টাকা নেননি। রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের সঙ্গে তার কোনও সম্পৃক্ততা নেই।

জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুছ ছালাম আজাদ বলছেন, ‘রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজকে আমরা এম এ কাদেরের ভাই বলেই জানি। যিনি সিনেমা তৈরি করেন।’

জানা গেছে, চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসায় দুই ভাইকে উদার হাতে ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক। ২০১৩ সাল-পরবর্তী পাঁচ বছরেই জনতা ব্যাংক থেকে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন এমএ কাদের ও এমএ আজিজ। এরমধ্যে পণ্য রফতানির বিপরীতে নগদ সহায়তা তহবিল থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। দুই ভাইকে দেওয়া জনতা ব্যাংকের এ ঋণের বড় অংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে। এর মধ্য দিয়ে দুই ভাই-ই নাম লিখিয়েছেন শীর্ষ ১০ ঋণখেলাপির তালিকায়।

বড় অঙ্কের ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ায় গত জুন শেষে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয় ৯ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ২২ শতাংশ।

কালের আলো/এমএইচএ