নারায়ণগঞ্জ রণক্ষেত্র: মেয়র আইভীসহ আহত শতাধিক

প্রকাশিতঃ 9:27 pm | January 16, 2018

কালের আলো রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জের ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে সাংসদ শামীম ওসমান ও মেয়র আইভী সমর্থকদের সংঘর্ষে মেয়র আইভী, সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছে। প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়াসহ দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুই শতাধিক শর্ট গানের ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর চাষাঢ়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সাংসদ শামীম ওসমান নগরীর ফুটপাতে বিকেল থেকে উচ্ছেদ করা হকারদের বসানোর ঘোষণা দেয়ার প্রতিবাদে নগর ভবন থেকে পায়ে হেঁটে মেয়র আইভী তার নেতাকর্মীদের নিয়ে মিছিলসহ চাষাঢ়ায় আসেন। মুক্তি জেনারেল হাসপাতালে সামনে এলে প্রতিপক্ষ তাদেরকে লক্ষ্য ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। নেতাকর্মীরা আইভীকে মানব ঢাল তৈরী করে রক্ষা করে।

ইট পাটকেল থেকে রক্ষা করতে সমর্থকরা ঘিরে রাখে আইভীকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময়ে উভয় পক্ষের লোকজন একে অন্যকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে পুরো শহরে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় বঙ্গবন্ধু শহরে যান চলাচল ও আশেপাশের সকল দোকানপাট।

এদিকে বিকেল ৫টায় চাষাঢ়া গোলচত্বর এলাকাতে আওয়ামী লীগের লোকজন জড়ো হলে পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়। তখন আওয়ামী লীগের লোকজনদের পুলিশ ধাওয়া করলে বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে রাইফেল ক্লাব থেকে বেরিয়ে আসেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। তখন পুলিশ সরে গেলে শামীম ওসমান লোকজন নিয়ে চাষাঢ়ায় হক প্লাজার সামনে অবস্থান নেন। তখন হকার ও লোকজন ঘটনা নিয়ে শামীম ওসমানকে একের পর এক নালিশ দিতে থাকে।

শামীম ওসমান তখন বলেন, “আমি এর বিচার আল্লাহকে দিব। আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছে। আমাদের প্রচুর লোকজনদের মেরে আহত করা হয়েছে। আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নেই নাই।”

এদিকে, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইভী বলেন, “আমি কারো কাছে সাহায্য চেয়ে পাইনি। আমি ডিসি ও এসপির প্রত্যাহার চাইছি। আমরা শান্ত নারায়ণগঞ্জ চাই।”

আইভী বলেন, “আমি শান্তিপূর্ণভাবে লোকজনদের নিয়ে ফুটপাত দিয়ে চাষাঢ়া আসছি। কিন্তু সেখানে বিনা উস্কানিতে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। নিরীহ লোকজনদের মারধর করা হয়েছে। শামীম ওসমান রাইফেল ক্লাবে থেকে গুলির নির্দেশ দিয়েছেন। তার লোকজন একের পর এক গুলি করেছে।”

নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আসাদুজ্জামান বলেন, “আহত ৩০ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। যার মধ্যে ৫ থেকে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরফুদ্দিন বলেন, “মেয়র সমর্থকদের সঙ্গে হকারদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। তবে কয় জন আহত হয়েছে জানা নেই। পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে।”