অবশেষে মেসি- মারিয়ারা পেরেছেন
প্রকাশিতঃ 12:27 pm | July 11, 2021
স্পোর্টস ডেস্ক, কালের আলো:
প্রচণ্ড তাপদাহের পর এ যেন স্বস্তির বৃষ্টি! একটি দুটি নয়, টানা ছ’টি ফাইনালে খেলে শিরোপা স্পর্শ করতে পারেনি আর্জেন্টিনা।
খোদ লিওনেল মেসিও ব্যর্থ হয়েছেন চারটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের ফাইনালে। কিন্তু এবার ধরা দিলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। অবশেষে সাফল্যের নব ধারায় সিক্ত হলেন এই কিংবদন্তি। ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা এখন আর্জেন্টিনার ঘরে, লিওনেল মেসি ও ডি মারিয়াদের হাতে।
২৮ বছরের প্রতীক্ষা শেষে আর্জেন্টিনা জিতল লাতিন আমেরিকান ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের এই ট্রফি।
এর মধ্য দিয়ে মেসি ছাড়িয়ে গেলেন ইতিহাসের দুই সর্বকালের সেরা ফুটবলার ব্রাজিলের পেলে আর নিজ দেশের ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে!
বিস্ময়কর হলেও সত্য বিশ্বের ইতিহাসে সেরা দুই ফুটবলার পেলে ও ম্যারাডোনার রয়ে গেছে এক অপ্রাপ্তি।
অনেকটা চাঁদের কলঙ্কের মতো। তারা জিততে পারেননি কোপা আমেরিকা, একটা উপমহাদেশীয় টুর্নামেন্ট! মেসিও কিংবদন্তি।
তিনি সেই অগ্রজদের পথে হাঁটেননি। বয়স ৩৪। এবার বুঝি শেষ সুযোগ। সেটাই কাজে লাগালেন ক্ষুদে যাদুকর।
অবশ্য ফুটবল সম্রাট পেলে তার পুরো ক্যারিয়ারে একবারই খেলেন কোপা আমেরিকা। ১৯৫৯ সালে বিশ্বকাপ জেতার পরের বছরই নেমেছিলেন লাতিন আমেরিকান ফুটবল প্রতিযোগিতায়। নিজে সফলও ছিলেন।
৮ গোল করে টুর্নামেন্টের সেরার পুরস্কারটা উঠেছিল পেলের হাতে। তবে শিরোপা জিতে নেয় তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনা।
বলা হয়ে থাকে, নিজের দোষেই ম্যারাডোনা হতে পারেননি কোপা জয়ী ফুটবলার।
১৯৯৩ সালে শেষবার যখন আর্জেন্টিনা জেতে প্রাচীনতম এই ফুটবল টুর্নামেন্টের ট্রফি। সেই দলে ছিলেন না ফুটবল ঈশ্বর।
ড্রাগ নেওয়ার কারণে নিষেধাজ্ঞায় ছিলেন তিনি। অবশ্য ফিরলেও তার সেই পারফরম্যান্স ছিল না। কোচ আলফিও বাসিলে তাকে বাদ দিয়ে ডিয়েগো সিমিওনেকে দেন ১০ নম্বর জার্সি।
বিশ্বকাপ জিতলেও কোপার ট্রফিটা অধরাই! আক্ষেপ ছিল মেসি জাতীয় দলের হয়ে কিছুই জিততে পারেননি বলে।
খেলেছেন চারটি বিশ্বকাপ। ফাইনালে উঠলেও সঙ্গী হয়েছে দীর্ঘশ্বাস। বিশ্বের প্রাচীনতম ফুটবল টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকায় ২০১৪ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে নিয়ে গেলেও বিশ্বকাপ জেতা হয়নি মেসির।
তারও আগে ২০০৭ সালে তরুণ মেসির সঙ্গে ছিল হার্নান ক্রেসপো, কার্লোস তেভেজ, রিকুয়েলমে, পাবলো আইমার, দারুণ একটা দল।
দাপট দেখিয়ে ফাইনালেও উঠে আসে তারা। কিন্তু ট্রফি সামনে নিয়ে খেলতে নেমে ব্রাজিলের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ! তারপর ২০১১ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে কার্লোস তেভেজের টাইব্রেকার ট্র্যাজেডি তো সবারই জানা।
২০১৫ ও ২০১৬ দুটি ফাইনালে আলবিসেলেস্তেদের হতাশায় পুড়িয়েছে চিলি।
কিন্তু এবার বাংলাদেশ সময় রোববার সকালে রিও ডি জেনেরিও এর মারাকানায় মেসিকে একটা স্বপ্নের ট্রফি এনে দিলেন সতীর্থরা।
ভক্তরা অন্তত এখন একটা জায়গায় তৃপ্তির ঢেকুর তুলবে পেলে-ম্যারাডোনা যা পারেননি, পেরেছেন তাদের আদরের লিও, লিওনেল আন্দ্রেস মেসি!
দুই বার অভিমানে, কষ্টে অবসর নিলেও ফিরেছেন মেসি। বয়স হয়েছে ৩৪ বছর। এটাই হয়তো শেষ! আর শেষ ভালো যার, তার তো সবটাই ভালো হওয়ার কথা।
কালের আলো/এএম/জিএস